বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাই হবে আসন্ন সিরিজে নিউজিল্যান্ডের অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস, বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন কিউই পেসার হামিশ ব্যানেট। বাংলাদেশের মাটিতে টাইগারদের সিরিজ জিতে নিউজিল্যান্ডে ফেরাটাকেও বিরাট গৌরব হিসেবে মনে করছেন এই ৩৪ বছর বয়সী।
হামিশ ব্যানেটের স্মৃতিতে বাংলাদেশ ভালোমতোই থাকার কথা। বাংলাদেশ যে তাঁর ‘প্রথম’। ২০১০ সালের বাংলাদেশ সফরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল এই ফাস্ট বোলারের। অভিষেক ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কিন্তু দলকে দেখেছিলেন সাকিববাহিনীর হাতে ৪-০ ব্যবধানে ‘বাংলাওয়াশ’ হতে। তিন বছর পর আবারো বাংলাদেশ সফরে আসে ব্ল্যাকক্যাপরা। এবারো ওয়ানডে তে ৩-০ তে ধবলধোলাই হতে হয়। তাঁর আগে টেস্ট সিরিজ হয় ০-০ ড্র। জয় ছিল কেবল একটি টি-টোয়েন্টিতে তে।
সব ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে গত ১০ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের জয় মাত্র একটি। তার উপর সাম্প্রতিকসময়ে তাদের তাসমান প্রতিবেশি দেশ অস্ট্রেলিয়াকে নিজেদের কন্ডিশনের পুরো শক্তি কাজে লাগিয়ে কিভাবে নাস্তানাবুদ করেছে বাংলাদেশ সেটা তাদের অজানা নয়। তাছাড়া ব্যানেট ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা এই নিউজিল্যান্ড দলের আর কারোরই নেই!
অতীত অভিজ্ঞতার সাথে বর্তমান প্রেক্ষাপট, দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে বাংলাদেশের কন্ডিশনে জেতাটা কিউইদের কাছে তাই বাড়তি চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করতেই পারে, মিরপুরকে মনে হতেই পারে দুর্ভেদ্য একটি দুর্গ। তবে চ্যালেঞ্জের ভেতরেই অনুপ্রেরণা খুঁজে নিয়ে এই দুর্গ জয় করতে বদ্ধপরিকর তাঁর দল, এমনটাই জানালেন হামিশ ব্যানেট। অতীতে এখানে সাফল্য না পাওয়াকে প্রেরণার বড় উৎস বলে মনে করেন তিনি।
“আমরা এখানে একটি দল হিসেবে এসেছি দেশের হয়ে দায়িত্ব পালন করতে। আমি আগেও বাংলাদেশে এসেছি এবং ৪-০ তে হেরেছি। আমি জানি আমরা এখানে খুব বেশি সাফল্য পাইনি, তাই এটাই আমাদের জন্য একটি বড় প্রেরণার উৎস”-ব্যানেট
ব্যানেট জানালেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বিশ্লেষণ ও নিজেদের বিশেষ প্রস্তুতির উপর তাদের ভরসা রয়েছে। তবে মাঠের ক্রিকেট যে ভিন্ন ব্যাপার সেটিও তাঁর অজানা নয়।
“অস্ট্রেলিয়া সিরিজটা আগে হওয়ায় আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে। এখন আমরা জানি বাংলাদেশ আমাদের বিরুদ্ধে কিভাবে এগোবে। তবে জানা আর সেটা মাঠে করে দেখানো ভিন্ন ব্যাপার। আমরা লিংকনে ব্যবহৃত-জীর্ণ হয়ে যাওয়া উইকেটে খেলেছি। সিরিজ শুরুর আগে ৪-৫ দিন ট্রেনিং করতে পারবো আমরা। সেখানেই আশাকরি বুঝতে পারবো আমাদের পরিকল্পনা এখানে কতোটা ফলপ্রসূ হবে।”
কন্ডিশন নিয়েও তাঁর কোন অভিযোগ নেই ব্যানেটের। বরং এটা বোলাদের জন্য দারুন বলেই তিনি মনে করেন। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশন থাকবে এটাও তাঁর কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার বলেও জানান তিনি।
“১২০ রানের উইকেট পেয়ে হয়তো ব্যাটসম্যানরা আপত্তি করবে। কিন্তু বোলারদের পরিসংখ্যানের জন্য এটি দারুণ ব্যাপার। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বাংলাদেশ যদি সবুজ, বাউন্সি উইকেট পেতে পারে, তো এখানে তো তারা নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা নেবেই। আমরা এই চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে রয়েছি।”
৫ ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে মঙ্গলবার ঢাকায় এসে বর্তমানে তিনদিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে নিউজিল্যান্ড দল। তাঁর দুদিন আগে বাংলাদেশে এসে পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হয়েছেন ব্যাটসম্যান ফিন অ্যালেন। সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১ সেপ্টেম্বর।