বিদায়টা জানিয়েই দিলেন অবশেষে। ৬৪টি টেস্ট খেলেই ইতি টানলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের। দলের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ; ১ থেকে ৯, সব পজিশনেই করেছেন ব্যাটিং। সাফল্য ব্যর্থতার হিসেব করতে চাননি কখনোই, ভালোবেসে খেলে যেতে চেয়েছেন ক্রিকেটটাই। কিন্তু, চিরদিন তো আর ঐ ২২ গজের পিচটায় থাকা হয়না কারোরই, কখনো না কখনো তো সরে দাড়াতেই হয়। মঈন আলী তাই সরে দাড়ানোর শুরুটা করলেন টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই। সাদা বলের ক্রিকেটে খেলে যেতে চান আরও কয়েকটা দিন, কিন্তু ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণটা আর নয়। মূলত, বাকি ফরম্যাটগুলোতে ক্যারিয়ার লম্বা করতেই ইংলিশ তারকার এই সিদ্ধান্ত।
“টেস্ট ক্রিকেটটা ভীষণ সুন্দর। যেদিন আপনি ভালো করবেন, তারচেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারেনা। আমার বয়স এখন ৩৪, আর আমি ক্রিকেটটা খেলে যেতে চাই, উপভোগ করতে চাই” – মঈন আলী
![](https://kcs3.eu-west-1.klovercloud.com/allrounderbd-live-ailkxhbi/2021/09/Captureytheye.jpg)
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ৬৪টি টেস্ট; ছিলেন ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজেও। আইপিএলের বাকি অংশে খেলতে এইমুহুর্তে অবস্থান করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে, আর কয়েকদিন পরেই যেখানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ শেষেই ইংল্যান্ড দল অ্যাশেজ খেলতে পাড়ি জমাবে অস্ট্রেলিয়ায়। তার আগেই দিলেন অবসরের ঘোষণা। শেষবেলায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন কোচ, টিমমেট থেকে শুরু করে নিজের পরিবারকে।
“আমি পিটার মুর এবং ক্রিস সিলভারউডকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমার কোচ হওয়ার জন্যে। কুক আর রুটের অধীনে খেলেছি, আশা করি তারা আমার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট”- বলছিলেন মঈন আলী
“আমার বাবা মায়ের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ, তাদের সাপোর্ট ছাড়া কখনোই আমি এতদূর আসতে পারতাম না। আমি ক্রিকেটটা খেলেছি শুধুমাত্র তাদের জন্য। আমার ভাই-বোনকেও ধন্যবাদ, আমার খারাপ সময়ে পাশে থাকার জন্য। সেইসাথে, আমার স্ত্রী এবং সন্তানদেরও। তাদের ধৈর্য এবং ত্যাগ স্বীকারের কারণেই এখনো খেলে যেতে পারছি। আমি যা কিছু করেছি, সব তাদের জন্য”-যোগ করেন ইংলিশ তারকা
![](https://kcs3.eu-west-1.klovercloud.com/allrounderbd-live-ailkxhbi/2021/09/CaptureHGKGH.jpg)
বিদায়টা আচমকাই নেননি মঈন; কিছুদিন আগেই নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কথা বলেছেন অধিনায়ক জো রুট, প্রধান কোচ ক্রিস সিলভারউড এবং নির্বাচকের সাথে। সবার সাথে আলোচনা করেই জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায়। ইমরান খান, গ্যারি সোবার্স, ইয়ান বোথামদের চেয়ে দ্রুততম সময়ে করেছেন ২০০০ রান এবং ১০০ উইকেটের ক্লাবে প্রবেশ; আর মাত্র ৮৬ রান এবং ৫ উইকেট পেলেই প্রবেশ করতেন ৩০০০ রান এবং ২০০ উইকেটের এলিট ক্লাবে।
কিন্তু মঈন তো নিজের কথা ভেবে খেলেননি; সবসময়ই চেয়েছেন দলের প্রয়োজনে নিজের সেরাটা দিতে। নিজের দ্বিতীয় টেস্টেই পেয়েছিলেন শতকের দেখা, তখন ভাবা হচ্ছিলো সম্ভাবনাময় এক ক্যারিয়ার হতে যাচ্ছে ইংলিশ তারকার। কিন্তু, দলের প্রয়োজনে একেক সময় একেক ভূমিকা পালন করতে গিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়নি পরিসংখ্যানটাকেই। তাতে কি! ইংলিশ সমর্থকরা ঠিকই জানেন মঈন আলীর নিবেদন সম্পর্কে। ইংল্যান্ডের অগণিত জয়ের সাক্ষী যে এই অলরাউন্ডারও।
![](https://kcs3.eu-west-1.klovercloud.com/allrounderbd-live-ailkxhbi/2021/09/Capturebnetydh.jpg)
টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও মঈন খেলে যাবেন সাদা বলের ক্রিকেটে। বয়সটা ৩৪, তাই অবসরের কথা ভাবছেন না এখনিই। সাদা বলের ক্রিকেটের পাশাপাশি কাউন্টি ক্রিকেট এবং বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়েও খেলতে দেখা যাবে তাকে। লাল বলের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর আগে খেলে ফেলেছেন ৬৪টি টেস্ট; ৫ শতকে ২৯১৪ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১৯৫টি উইকেট।