৯৯ রানে অপরাজিত লিটন দাস, দাড়িয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের সামনে। পুরো স্টেডিয়ামে তখন একটাই শব্দ, ‘লিটন, লিটন’। নোমান আলীর বলটা মিড অফে ঠেলে দিয়েই দৌড়লেন টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া লিটন, শাহীন শাহ আফ্রিদির হাতে বল। পাকিস্তান পেসারের থ্রো, টাইগার উইকেটকিপার রানটা পূরণ করতে দিলেন ড্রাইভ!
এবং, এরই সাথে টেস্টে লিটনের প্রথম শতক। দল যখন পঞ্চাশ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে, তখন মুশফিকুর রহিমের সাথে গড়েছেন প্রতিরোধ। দুজনের ব্যাট থেকে স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে ১৫০ রানেরও বেশি, চট্টগ্রামে পঞ্চম উইকেট জুটিতে যা সর্বোচ্চ। লিটনের প্রথম শতকের দিনে অষ্টম শতক তুলে নেয়ার অপেক্ষায় আছেন মুশফিক; অপরাজিত আছেন ৭৭ রানে। অথচ, শতকের পূর্বেই লিটন ইনজুরির কারণে যেতে পারতেন ছিটকে!
প্রথম দিনের তখন ৬৬ ওভার শেষ, নতুন স্পেলে বল হাতে ফাহিম আশরাফ। কিন্তু, ব্যাটিংপ্রান্তে নেই কেউই। পিঠের চোটে ইনজুরির শঙ্কায় দুর্দান্ত খেলতে থাকা লিটন দাস মাটিতে বসে। ফিজিওর সাথে সাথে দৌড়ে মাঠে ঢুকলেন নাইম হাসান-শরিফুল ইসলাম। লিটনকে পিঠে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখে দুজনই বেশ চিন্তিত।
কিন্তু, লিটন উঠে দাড়ালেন, তাকে যে এগিয়ে নিতে হবে দেশকে। ততোক্ষণে প্লেটে ফলমূল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা রেজাউর রহমান রাজা। খেজুর খেতে খেতে ব্যাট হাতে পিচে এলেন টাইগার উইকেটরক্ষক। ৯৬ রানে যখন, তখন আরও একবার মাঝপথে থামল খেলা; এবার লিটনের চোট হাতে। এগিয়ে এলেন বাবর আজম; একে একে ফিজিও,খালেদ আহমেদরাও। কিন্তু লিটন যে আজ নেমেছেন সব বাধা পেরিয়ে এগোতেই, কে রুখবে তাকে!
জুলাইয়ে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল টাইগাররা। ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের খুব কাছেই ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু, ভাগ্যদেবী সেদিন সহায় হয়নি তার। নাহলে ডোনাল্ড ত্রিপানোর বলে কেনো ওভাবে পুল করতে যাবেন ফাইন লেগে! লিটন এর আগে ৯৪ রানেও প্যাভিলিয়নে ফিরেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। দুইবার নার্ভাস নাইনটিনে ফিরেছেন বলেই হয়তো পাকিস্তানের বিপক্ষে খেললেন স্বাচ্ছন্দ্যে; তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।