৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

তপুর পেনাল্টি মিস; শেষ মুহুর্তের গোলে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

- Advertisement -

পুরো স্টেডিয়াম শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায়; ১-১ গোলের ড্রতে ফাইনালের পথে বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে প্রতিপক্ষদের মরণ কামড় দেওয়ার শেষ চেষ্টায় লঙ্কানরা। ওয়াসিম রাজ্জেকের বাইসাইকেল কিকে গোল করার চেষ্টা এবং বল গিয়ে লাগে বাংলাদেশি ডিফান্ডারের হাতে। পেনাল্টির আবেদন এবং রেফারির সাড়া। এক মুহুর্তেই বদলে গেল দৃশ্যপট, রাজ্জেক পেনাল্টি থেকে দলকে এনে দিলেন জয়সূচক গোল। পুরো স্টেডিয়াম আনন্দে মেতে উঠেছে ততোক্ষণে, বৃষ্টিতে অশ্রু লুকানোর চেষ্টা তপু বর্মনদের।

শেষ মুহুর্তের পেনাল্টি

ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলতে হলে শ্রীলঙ্কাকে যেকোনো মূল্যেই জিততে হতো ম্যাচটা। চেনা মাঠে খেলা, পরিচিত দর্শক। মরণ কামড় দেওয়ার পূর্ণ চেষ্টাটাই করেছে লঙ্কানরা, এবং শেষ মুহুর্তের গোলে ২-১ ব্যবধানে তুলে নিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত জয়টাও। সেইসাথে স্বপ্নের ফাইনালে স্বাগতিকরা।

প্রথমার্ধের শুরুতে গোলের দেখা পেয়েছিল শ্রীলঙ্কাই। ম্যাচের তখন ২৫ মিনিট, বৃষ্টিভেজা মাঠে এগিয়ে চলেছে খেলা। জয় না হলেই ছিটকে যেতে হবে টুর্নামেন্ট থেকে, স্বাগতিকরা তাই গোলের জন্য প্রথম থেকেই মরিয়া। চালানা চামিরস নিলেন বক্সের খানিকটা দূর থেকেই শট, ডানপ্রান্তে ঝাপিয়ে বলটাকে রুখে দিলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। কিন্তু, ‘যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়’ প্রবাদটাকে সত্য করতেই যেনো দৃশ্যপটে হাজির ওয়াসিম রাজ্জেক!

রাজ্জেকের গোল

আনিসুর বলটাকে রুখে দিলেও রাজ্জেক ঠিকই পৌঁছে গেছেন বল অব্দি। পিছলে গিয়েও বাম পায়ে আলতো করা ঠেলে দেয়া বলটাকে ঠিকই জড়িয়েছেন বাংলাদেশের জালে। ভেজা মাঠে পিছলেছেন আনিসুরও, চোখের সামনে দিয়ে তাই বলটাকে জালে জড়িয়ে যেতে দেখা ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না। গোল করেই রাজ্জেকের উদযাপন; হবেই না বা কেনো! এই গোলটার যে বড্ড দরকার ছিল লঙ্কানদের! জার্মানিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই রাজ্জেকই মালদ্বীপের বিপক্ষে চার গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে একাই করেছিলেন ৪ গোল। ১২ মিনিটের ব্যবধানে করেছিলেন হ্যাটট্রিক!

বাংলাদেশ অবশ্য সমতা ফিরানোর সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিল ছয় মিনিট পরেই। জামাল ভুইয়ার কর্ণারে কিকে তপু বর্মন হেড করে গোলটা প্রায় করেই ফেলেছিল, তখনই হাত দিয়ে বলটা থামিয়ে দেন শ্রীলঙ্কান ডিফেন্ডার ডাকসন পুসলেস। সাথে সাথেই রেফারির লাল কার্ড, এবং পেনাল্টির সিদ্ধান্ত।

তপু মেরেছেন গোলবারের ওপর দিয়ে

পেনাল্টি নিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মন এসেছেন এগিয়ে, তাকে কথার বেড়াজালে আঁটকে ফেলার চেষ্টায় লঙ্কান গোলরক্ষক সুজান পেরেরা। কতটা সফল হয়েছেন পেরেরা সেটা বলে দেয় গোলবারের ওপর দিয়ে নেয়া তপুর শটটাই। পেনাল্টি মিস বাংলাদেশের, ১-০ তে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। প্রথমার্ধের শেষেও সুযোগ এসেছে, কিন্তু গোলকিপারকে একা পেয়েও হোল আদায় নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধ শেষে মাঠে দুই দল; ফাইনাল খেলতে বাংলাদেশের দরকার একটা পয়েন্ট, লঙ্কানদের জয়। মুষলধারে বৃষ্টি পুরো স্টেডিয়াম জুড়েই। সেই বৃষ্টিতেই দলকে গোল এনে দেয়ার চেষ্টায় তপু- জামালরা। ম্যাচের তখন বাকি মাত্র ২০ মিনিট, এমন সময়ে ইয়াসিন আরাফাত ডি বক্সের বাইরে থেকে বলটা বাড়িয়ে দিলেন গোলপোস্ট লক্ষ্য করে; প্রয়োজন শুধুমাত্র একটা টাচের। আর সেটাই করলেন জুয়েল রানা; ১-১ গোলের সমতায় দুই দল।

জুয়েল রানার গোল

প্রথম গোলের দেখা পাওয়ার পর বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে, সেইসাথে বেড়েছে বাংলাদেশের আক্রমণ। কিন্তু, কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি জুয়েল-তপুরা। উল্টো শ্রীলঙ্কার শেষমুহুর্তের গোলে ছিটকে গেছে টুর্নামেন্ট থেকেই। ভাগ্যদেবী এভাবে মুখ ফিরিয়ে নেবে ভেবেছিলো কেউ! ফাইনালে সেশেলসের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।

 

 

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img