লিও, জানো রোজারিওতে আজ বৃষ্টি হচ্ছে, তুমি যখন বিদায় মঞ্চে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলে ঠিক তখনই। কিন্তু রোজারিওর ওই বৃষ্টির চেয়েও তোমার কান্নার গভীরতা বেশি। তুমি কি সেটা জানো লিও? জানার তো কথা, তাই না? বিশ্বকাপ ট্রফির সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে যেতেওতো তুমি কেঁদেছিলে; আবার কোপা জয়ের পরেও তুমি কান্না আঁড়াল করতে পারোনি। এই পাওয়া-না-পাওয়ার জীবনে তোমার কান্নাটাই তো ছিল সত্যি, সেটা কখনো ভিগালদির সুর হয়ে বেজেছে আবার কখনো তেরিন্ত্যিনোর মুভি হয়ে দুনিয়ার বোকা স্ক্রিনে দৃশ্যমান হয়েছে।
জানো লিও, এই পৃথিবীর মানুষগুলো শুধু পাওয়া না পাওয়ার হিসেব কষে। তার তোমার গল্প জানে না, তারা তোমাকে চেনে না। যারা তোমাকে পছন্দ করে তারা শুধুই তোমার সাফল্যের ইতিহাস বলে; তোমার ব্যালন ডি’আর; তোমার কোপা জয়ের গল্প, আবার তোমাকে যারা অপছন্দ করে তারা বলে, গ্রেট হতে নাকি বিশ্বকাপ লাগে, ওই সোনার ট্রফিটা চুমু দিতে হয়। আমি হাসি, হাসতেই থাকি, জানো লিও পুরো পৃথিবীর মানুষগুলোকেই আমার বোকা মনে হয়, তুমি কি শুনছো লিও। না এখনো কাঁদছো?
কান্না থামাও লিও; দেখো তোমার প্রিয়তমা স্ত্রী তোমার সামনেই বসে আছে, তোমার তিন ছেলেও সাথে। থিয়াগোকে দেখো; ওর বয়সেইতো তুমি বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিলে। সময়ও এতো দ্রুত চলে যায় না যতো দ্রুত তুমি জয় করেছে ক্রিপ্টোনেটকে। আচ্ছা মেসি, তুমি কি তখন জানতে ক্যাসেলডেফিলস থেকে ন্যু ক্যাম্পের দুরত্ব কতো? তোমার স্বপ্নের ট্রাম তখন কতো গতিতে চলতো? যদি উত্তর না হয় তবে কেনো বোকা মানুষকে কথায় কেনো ভেঙ্গে পড়।
তুমি কি নেফারতিতিকে চেনো লিও, তুমি কি জীবনান্দকে চেনো? তোমার বেদনার গভীরতা কি তাদের চেয়েও বেশী? তবুও তুমি কেনো কাঁদছো লিও?
বিদায়বেলায় বললে, বার্সেলোনা তোমার ঘর, তুমি আবার এখানেই ফিরতে চাও। এওকি কখনো সম্ভব লিও? তবে আমি এই প্রথমবার বোকা হতে চাই, অনেক বোকা মানুষদের নিয়ে তোমার জন্য তোমার জন্য অপেক্ষা করতে চাই। তুমি শুনছো লিও, তুমি কি শুনছো?