দিনটা মেহেদী হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজের বলললে ভুল হবেনা। দুই বন্ধু কয়েকদিন আগেই আইসিসি’র ওয়ানডে বোলিংয়ে রেংকিংয়ে বেশ উন্নতি করেছে। এবার টেস্টেও দুই বন্ধুর দারুণ পারফরম্যান্স। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের হাইলাইটসে উপরেই থাকবে দু’জনের নাম। দিনের শেষ সেশনটা দিয়েই শুরু করা যাক। চার স্পিনার নিয়ে বাংলাদেশ বোলিংয়ে নামে চা বিরতির পর। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজের মতো মুস্তাফিজকেই ব্রেক থ্র্রু দিতে হয়েছে। জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে উইন্ডিজদের বেশ চাপেই রেখেছিলেন শেষ সেশনে। প্রথম উইকেট ওপেনার ক্যাম্পবেলকে দিয়ে। ৫ম ওভারে এলবি’র ফাঁদে ফেলেন। রিভিউ নিয়েছিলেন, লাভ হয়নি। কিন্তু প্যাভিলিয়নে ফিরতেই হয়েছে এই ওপেনারকে। পরের বলেই আরেকটি উইকেট পেতে পারতেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে সে যাত্রা বেঁচে যান তিনে নামা মজলে। পরে অবশ্য মুস্তাফিজেরই শিকার হয়েছেন।
মুস্তাফিজের সঙ্গে রিভিউ নিয়ে বেশ জমেছিল মজলের। ১১তম ওভারের শেষ বলে আবারও এলবিডাব্লু হন মজলে। রিভিউ নেন। কিন্তু এবার আর বাঁচতে পারেননি। মাত্র দুই রানে মাঠ ছাড়েন। উইন্ডিজের অবস্থা তখন দুই উইকেটে ২৪ রান। পরে অবশ্য বনারকে নিয়ে আর বিপদ ঘটতে দেননি অধিনায়ক ব্রাথওয়েট। ৪৯ রানে অপরাজিত আছেন ব্রাথওয়েট আর বনার আছেন ১৭ রানে। উইন্ডিজরা এখনো পিছিয়ে ৩৫৫ রানে। তাদের সংগ্রহ দুই উইকেটে ৭৫ রান।
দিনের অন্য সময়টা মিরাজময় ছিল। তার সঙ্গে সাকিব আল হাসানের নামটাও আসতে পারে। প্রত্যাবর্তন টেস্টে সাকিব দিনের শুরুটা করেছিলেন ঝলমলে। তবে সাদমান-সাকিবরা হাফ সেঞ্চুরি পেলেও পারেননি ইনিংস বড় করতে। কিন্তু মেহেদী মিরাজ হাফ সেঞ্চুরিকে বানিয়েছেন সেঞ্চুরি। মিরাজের জন্য এই সেঞ্চুরির মাহাত্ম্য অন্যরকম। সাগরিকা পাড়ে অভিষেক হয়েছিলে ২০১৬তে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৫ বছর পর এই উইকেটেই ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাজিকাল ফিগারের দেখা পেলেন। এই স্বস্তি শুধু মিরাজের নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। বাংলাদেশের টেলএন্ডাররা টেস্টে অবদান রাখতে পারেন না সেই আক্ষেপ কিছুটা হলেও ঘুচিয়েছেন ৮ নাম্বারে নেমে।
১৬০ বলে শতক পূর্ণ করেন। এই জার্নি মিরাজ শুরু করেন লিটন দাস আউট হওয়ার পর। তারপর কার্যকরী তিনটা পার্টনারশিপ গড়েন মিরাজ। সাকিবের সাথে ৬৭ রানের, তাইজুলের সাথে ৪৪ আর নাঈম হাসানের সাথে ৫৭ রানের। তবে শেষ উইকেটে মুস্তাফিজের সাথে ১৪ রানের বন্ধুত্বের পার্টনারশিপটাই যেন বেশি গুরুত্ব পাবে। কারণ মুস্তাফিজ এক পাশ আগলে রেখেছিলেন বলেই মিরাজের সেঞ্চুরিটা হয়েছে। তাইতো বলতে হয় এমন বন্ধুত্ব টিকে থাকুক আজীবন। শেষ পর্যন্ত মুস্তাফিজ অপরাজিতই থেকেছেন। মিরাজ আউট হন ১০৩ রান করে। উইন্ডিজদের সেরা বোলার জোমেল ওয়ারিকান। ১৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট নেন এই স্পিনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ৪৩০ ( মিরাজ ১০৩, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯, মুশফিক ৩৮, লিটন ৩৮) ওয়ারিকান ৪/১৩৩
উইন্ডিজ ৭৫/২ (ব্রাথওয়েট ৪৯*, বনার ১৭)