প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় পেয়েছে লিভারপুল, নরউইচকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে অল রেডরা। ক্যারো রোডে পুরো ম্যাচ জুড়েই দুর্দান্ত ছিলেন মোহাম্মদ সালাহ; একটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও দুটি গোল। টানা পাঁচ মৌসুমেই প্রথম ম্যাচে গোল করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন সালাহ। দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরেছেন লিভারপুলের ডাচ সেন্টারব্যাক ভার্জিল ফন ডাইকও। তবে, সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে মাঠের দর্শক। দীর্ঘদিন পর মাঠে দর্শক ফিরেছে, ফুটবলও নতুন করেই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
২০১৯/২০ মৌসুমে যখন চ্যাম্পিয়ন হলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দল, তখন মাঠে ছিল না কোনো দর্শকই। প্রায় ১ বছর পর মাঠে দর্শক পেয়ে তাই দুই দলই দারুণ রোমাঞ্চিত ছিল প্রথম থেকেই; দর্শকদের বিশেষ অনুভব করানোর সুযোগ হাতছাড়া করেনি লিভারপুল। জয় দিয়ে দর্শকদের তো স্বাগতম জানিয়েছেই, সেইসাথে দর্শকদের ভাসিয়েছে প্রসংশা আর ভালোবাসায়।
“দর্শকদের আবারও মাঠে ফিরে পেয়ে দারুণ লাগছে। খেলোয়াড়রা তাদের পেয়ে কতটা উচ্ছ্বসিত ছিল, সেটা তাদের চোখেই দেখতে পাচ্ছিলাম। এই পরিবেশটা আমরা ভীষণ মিস করেছি। আজকের সবকিছুই ঠিক তেমনিই ছিল, যেমনটা আমরা সবসময়ই আশা করে এসেছি” -ম্যাচ শেষে বলছিলেন ক্লপ
ক্লপ নরউইচের ভক্তদেরও স্বাগত জানিয়েছেন। ভক্তরা যেখান থেকেই আসুক না কেনো, তাদের উপস্থিতিতেই যে অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে সেটা লুকাননি তিনি।
“আমি নরউইচের ভক্তদেরও স্বাগত জানাতে চাই। ভক্তরা যেখান থেকেই আসুক না কেনো, তাদের উপস্থিতিতেই ফুটবলটা প্রাণ ফিরে পায়। আশা করি, ভক্তদের ফিরে পেয়ে নরউইচও উদযাপন করেছে”
এরআগে ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে ক্লপের দল, গোলের দেখা পেতে দেরী হলেও তাদের খেলা যে ততোক্ষণে ছুঁয়ে গেছে ভক্তদের হৃদয়, তা তো দর্শকদের ওমন উচ্ছ্বাসই বলে দেয়। ২৬ মিনিটে রাইটব্যাক আলেকজান্ডার আরনল্ডের বাড়ানো বলটাকে বক্সের ভেতরে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রনে নিতে না পারলেও, সালাহর পা লেগে বল চলে যায় গোলপোস্টের সামনেই দাড়ানো ডিয়েগো জোতার পায়ে। পর্তুগিজ উইঙ্গার বেশ সহজেই বল জালে জড়িয়ে দেন; ১-০ তে এগিয়ে যায় লিভারপুল।
ম্যাচের ৬৫ মিনিটে আসে দ্বিতীয় গোল; সাদিও মানের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে ডান পায়ের নেয়া জোড়ালো শটটি নরউইচ ডিফেন্ডারের গায়ে লাগে ফিরে আসে সালাহর পায়েই। সালাহর বাড়ায় দেয়া বলটাকে গোলে পরিণত করার বাকি কাজটুকু সেড়েছেন বদলি হয়ে মাঠে নামা রবার্তো ফিরমিনো। দুটি গোল করালেও; সালাহ নিজে পাচ্ছিলেন না কোন গোল। অবশেষে ভক্তদের সেই অপেক্ষারও অবসান হলো ৭৪ মিনিটে; কর্ণার কিক থেকে বলটা আসে বক্সের বাঁ প্রান্তে দাড়ানো সালাহর পায়ে। বল পেতেই বাম পায়েই নিলেন জোড়ালো শট, আর তাতেই গোলরক্ষক পরাস্ত। টানা ৫ মৌসুমেই প্রথম ম্যাচে গোল করে গড়লেন ইতিহাসও। নির্ধারিত সময় শেষে ৩-০ তে জয়ী ক্লপের দল।
মৌসুম কেবল শুরু হল মাত্র, প্রথম ম্যাচেই মাঠে পেয়েছেন দর্শকদের, এসেছে জয়। ভক্তদের সামনে এই জয় কি শুধুই লিভারপুলের? নিশ্চয়ই না, এ তো ফুটবলেরই জয়। এমনি এমনি তো আর ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেননি-
“ইট’স কুল। ফুটবল ইজ ব্যাক”