২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

বার্সেলোনাকে ‘দুঃস্বপ্ন’ উপহার দেওয়া অব্যাহত রাখলো বায়ার্ন মিউনিখ

- Advertisement -

বায়ার্ন মিউনিখ-জুজু যেন কাটছেই না বার্সেলোনার। ৮-২ এর স্মৃতি তো সবার মনে এখনো তরতাজাই, এক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পরই গ্রুপ পর্বে আবারো সেই বায়ার্নকে ঘরের মাঠে পেয়ে বার্সেলোনা সমর্থকরা আশা করেছিল, হয়ত এবার ঐ লজ্জা সামান্য ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু কিসের কি? আবারো যে হেরে বসলো বার্সা। রবার্ট লেভান্ডফস্কির জোড়া গোলে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে বার্সেলোনাকে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। বায়ার্নের হয়ে অপর গোলটি করেছেন থমাস মুলার।

ন্যু ক্যাম্পে ৩-১-৪-২ ছকে একাদশ সাজিয়েছিলেন বার্সা কোচ রোনাল্ড কুম্যান। অভিজ্ঞ জেরার্ড পিকের দু’পাশে রোনাল্ড আরাউহো ও এরিক গার্সিয়াকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল বার্সা রক্ষণভাগ। দুই উইংব্যাক সার্জি রবার্তো ও জর্ডি আলবার মাঝখানে ছিলেন সার্জিও বুসকেটস, ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং ও পেদ্রি। আক্রমণভাগে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেম্ফিস ডিপাই ও নবাগত লুক ডি ইয়ং।

অপরদিকে জুলিয়ান নাগেলস্ম্যানের বায়ার্ন সেজেছিল ৪-২-৩-১ ছকে। আক্রমণের অগ্রভাগে ছিলেন রবার্ট লেভান্ডফস্কি ও তাঁর সহায়তায় ছিলেন থমাস মুলার, লেরয় সানে ও জামাল মুসিয়ালা। লিওন গোরেৎজকা ও জশুয়া কিমিখের ডবল পিভটের পেছনে রক্ষণভাগ গড়েছিলেন নিকলাস সুলা, দায়োত উপামেকানো, আলফনসো ডেভিস ও বেঞ্জামিন পাভার্ড।

সানে-লেভা-মুসিয়ালাদের আক্রমণ ঠেকাতে গলদঘর্ম হয়ে উঠেছিল বার্সার রক্ষণভাগ

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে ম্যাচের চালচিত্র। তবে বার্সার ডি ইয়ং-ডিপাইদের সামলাতে উপামেকানো-সুলাদের যতটা না বেগ পেতে হচ্ছিল, তাঁর চেয়ে বায়ার্নের লেভান্ডফস্কি-সানে-মুসিয়ালার ত্রিমুখী আক্রমণের স্রোত সামলাতে যেন একটু বেশিই গলদঘর্ম হচ্ছিলেন পিকে-গার্সিয়া-বুসকেটসরা। মেসিবিহীন বার্সার আক্রমণে ওঠার ধাঁচটাও কেমন যেন অগোছালো আর ফিকে মনে হচ্ছিলো, লুক ডি ইয়ং খুঁজে পাচ্ছিলেন না মাঝমাঠের খেলোয়াড়দের সাথে সঠিক সমন্বয়।

থমাস মুলার করেন ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা

৩৩ মিনিটেই বায়ার্ন পেয়ে যায় প্রথম গোল। ২৫ গজ দূর থেকে থমাস মুলারের নেওয়া শট এরিক গার্সিয়ার গায়ে লেগে ঢুকে যায় বার্সার জালে। ১-০ ব্যবধানে শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধেও বায়ার্নের গোছানো আক্রমণের ধারা বজায় ছিল। বার্সা হয়ে পড়ছিল আরো খোলসবন্দী। দ্বিতীয় গোলটি পেতেও খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি জার্মান জায়ান্টদের। ৫৬ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট বাড়ে লেগে ছিটকে আসে; আলতো টোকা দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুন করেন রবার্ট লেভান্ডফস্কি। ৮৫ মিনিটে লেভান্ডফস্কির আরেকটি গোলেই ম্যাচের এপিটাফ লেখা হয়ে যায় বার্সার জন্য।

লেভান্ডফস্কি করেন জোড়া গোল

ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখ কতোটা আধিপত্য বিস্তার করেছে, বা ঘরের মাঠে কতোটা বিবর্ণ ছিল বার্সেলোনা, তা শুধুমাত্র একটি পরিসংখ্যান দিয়েই বোঝানো যায়। মোট ১৭টি শট নিয়েছে বায়ার্ন বার্সার গোলমুখে, যার ৭টিই ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে বার্সার শট ছিল মাত্র ৫টি, লক্ষ্যে শট ছিল শূন্য। ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই প্রথম কোন ম্যাচে লক্ষ্যে একটিও শট নিতে পারেনি বার্সেলোনা। ‘গোল না করতে পারি, গোল খাবোনা’ নীতিতেই যেন একটা সময় খেলছিলো রোনাল্ড কুম্যানের শিষ্যরা।

এই জয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষে বিগত ৬ ম্যাচের ৫টিই জিতল বায়ার্ন মিউনিখ। বার্সেলোনার একটি জয় কেবল ২০১৪/১৫ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। এই ছয় ম্যাচে বায়ার্ন বার্সার জালে গোল দিয়েছে ২১টি, বার্সা শোধ দিতে পেরেছে মাত্র ৭টি।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img