রবিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বিশেষ এক কলাম লিখেছেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। টি-টোয়েন্টির এই যুগে এসে যে ফেভারিট নয় কোনো দলই সেটাই সবার আগে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি, “২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নির্দিষ্ট করে কাউকে ফেভারিট দল বলার সুযোগ নেই। ট্রফির দৌড়ে আছে প্রত্যেকেই, জিততে পারে যে কেউই”
টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য পেতে একেক জনের ভাবনাটা একেক রকম। শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মনে করেন প্রথম ছয় ওভারই বলে দিবে কে জিততে যাচ্ছে, “আপনি প্রথমে ব্যাটিং করেন কিংবা বোলিং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রথম ছয় ওভার। আমার ধারণা, প্রথম ছয় ওভারই নিশ্চিত করে দিবে দলের ৭০ থেকে ৮০% ফলাফল”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্পিনারদের বাউন্ডারী ছাড়া করাটা তুলনামুলক সহজ বলেই অনেকের ধারণা। কিন্তু স্পিনারদের খেলাটা যে ততোটাও সহজ না সেটা আরো একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মুরালিধরন, “সাধারণত সবাই মনে করে টি-টোয়েন্টিতে স্পিনারদের খেলাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক সহজ। কিন্তু, এটা এখন স্পষ্ট যে, যত স্লোয়ার বল আপনি করবেন, ব্যাটসম্যানদের জন্য খেলাটা ততোই জটিল। স্পিনাররা টি-টোয়েন্টির গুরুত্বপূর্ণ বোলার হয়ে উঠছে। এমনকি, পেসাররাও এখন অনেক বেশি স্লোয়ার, কাঁটার ব্যবহার করে। যাতে ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বল ঠিকমতো না পৌছে”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা নিয়ে আলাদা ভাবনা আছে মুরালির। স্পিনারদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছেন তার কাছে টি-টোয়েন্টিতে রক্ষণাত্মক ক্রিকেটটাই সবচেয়ে বড় আক্রমণ, “আমার কাছে ডিফেন্ডিংটাই সবচেয়ে বড় অ্যাটাকিং। যদি আপনি প্রতি ওভারে ৬ থেকে সাড়ে ছয় রান খরচ করেন, তাহলে আপনার উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে”
বিশ্বকাপের উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে একটা ধারণা আছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ কোচের। আইপিএলের আরব আমিরাত পর্বে দলের সাথে থাকা্র কারণে তার ধারণা স্পিনাররা বিশ্বকাপে পেতে যাচ্ছে বাড়তি সুবিধা, “আমি আরব আমিরাতের আইপিএল পর্বে থাকার সময়ে পিচগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছি। স্পিনাররা বিশ্বকাপে নিজ নিজ দলের হয়ে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। পিচ কিউরেটররা কিভাবে পিচটা তৈরী করছে সেটাও একটা ব্যাপার। কিন্তু, স্পিনাররা যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই”
বিশ্বকাপে সাবেক চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করতে হবে। কোনো রাখঢাক না রেখেই মুরালিধরন বলেছেন দল হিসেবে ভালো অবস্থানে নেই তারা, “সত্য বলতে, আমরা এইমুহুর্তে ততোটাও ভালো দল নই। ভালো ক্রিকেটও খেলিনি সাম্প্রতিক সময়ে, এজন্যই আমরা এখানে। কিন্তু, বিশ্বকাপে খেলতে আসা সবার সামর্থ্য আছে ভালো করার”
নিজের লেখা শেষ করার আগে নিজ দেশ এবং বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা বাকি দেশগুলোর প্রতি দিয়েছেন নিজের পরামর্শও, “শ্রীলঙ্কা এবং অন্য প্রতিটা দলের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে, নির্দিষ্ট কোনো বোলারকে নিয়ে চিন্তা না করা। প্রতিপক্ষ দলের বড় কোনো নাম কিংবা নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের দিকে লক্ষ্য স্থির করতে যাবেন না। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে যাচ্ছেন না এবং নিজের খেলাটা উপভোগ করছেন। এটাই আসলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট”