শিরোনামের এই রসিকতাটি ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যে খুব প্রচলিত। পছন্দের দল যখন ব্যাটিং করে তখন পিচ নাকি হয়ে যায় বোলিংবান্ধব, আবার যখন বোলিং করে তখন ভোজবাজির মতো পাল্টে গিয়ে পিচ নাকি হয়ে যায় রানপ্রসবা। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আর রাজস্থান রয়েলসের ম্যাচেও যেন ঠিক তাই হল। রাজস্থান ব্যাটিং করার সময় শারজাহর চিরায়ত নিচু মন্থর উইকেটে হাঁসফাঁস করতে করতে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯০ রানেই আটকে গেল, মুম্বাই ব্যাটিংয়ে নেমে সেই রানই তাড়া করে ফেললো ৮.২ ওভারেই। মন্থর পিচেও যেখানে স্ট্রোকমেকিং আর বিগ শটের বন্যা ছোটালেন ইশান কিষাণ-রোহিত শর্মারা, সেখানে রাজস্থানের ব্যাটসম্যানরা হলেন চরম ব্যর্থ।
Aaala reeee! ?#MumbaiIndians keep their #VIVOIPL Playoffs hopes alive by winning #RRvMI by 8️⃣ wickets.#IPL2021 #MumbaiIndians #OneFamily pic.twitter.com/FLTXTFQ5Tt
— Star Sports (@StarSportsIndia) October 5, 2021
আর এই ব্যর্থতার মাশুল এখন রাজস্থানকে দিতে হবে; প্লে অফে ওঠার জন্য এখন কলকাতার বিরুদ্ধে তো জিততে হবেই, তাকিয়ে থাকতে হবে মুম্বাই-হায়দ্রাবাদ ও পাঞ্জাব-চেন্নাইয়ের দুই দুইটি ম্যাচের ফলাফলের দিকে; এরপর করতে হবে নেট রানরেটের হিসাব। সব মিলিয়ে বলাই যায় যে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের দিকে এক পা বাড়িয়েই দিয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের দল।
পিচে বল নিচু হয়, অনেক সময় প্রায় গড়িয়ে আসে ব্যাটে; এই আইপিএলে শারজাহর পিচের এটিই পরিচিত চরিত্র। টসে জিতে বোলিং নিয়ে সেই চরিত্রের পূর্ণ উপযোগ ওঠাতে চাইলেন মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সফলও হলেন। শুরুটা দেখেশুনে করে ২৭ রানের জুটি গড়েছিলেন রাজস্থানের দুই ওপেনার এভিন লুইস এবং যশস্বী জয়সওয়াল। ব্যক্তিগত ১২ রানে জয়সওয়াল বিদায় নেওয়ার পর ২৪ রানে বিদায় নেন লুইসও।
এরপরেই ছন্দপতন; দলীয় ৫০ রান করতে করতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন সঞ্জু স্যামসন, শিভম দুবে এবং গ্লেন ফিলিপস। রাহুল তেওয়াটিয়াকে নিয়ে ডেভিড মিলার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছেন ২১ রানই। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯০ রানে শেষ হয় রাজস্থানের ইনিংস; শেষ বলের আগের বলে ট্রেন্ট বোল্টকে মিড অফের ওপর দিয়ে মারা মুস্তাফিজুর রহমানের ছক্কাটিই হয়তো রাজস্থানের ইনিংসের একমাত্র চোখে লেগে থাকার মতো স্মরণীয় ঘটনা।
মুম্বাইয়ের পক্ষে ১৪ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন নাথান কোল্টার-নাইল; আইপিএলে এটিই তাঁর প্রথম চার উইকেট শিকার। ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।
৯১ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাইয়ের ব্যাটসম্যানদের মনে হচ্ছিল যেন ট্রেন ধরার তাড়া আছে, যত দ্রুত ম্যাচ শেষ করে ফেলা যায় এমনভাবে মারকাটারি শুরু করেন রোহিত শর্মা। মুস্তাফিজকে প্রথম ওভারেই একটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান ‘হিটম্যান’। ১৩ বলে ২২ রান করে রোহিত আউট হলেও চালিয়ে যান ইশান কিষাণ। এই মৌসুমে ব্যাটে কিছুতেই রান আসছিল না, আজ সব ঝাল যেন এই মন্থর পিচের ওপর ঝাড়লেন কিষাণ; ফিফটি ছুঁয়েছেন রানের ঠিক অর্ধেক বলে; মুস্তাফিজুর রহমানকে যে ছক্কাটি মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন, সেই ছক্কাতেই এসেছে দলের জয়ও।
বল হাতে আজও বাজে দিন গিয়েছে মুস্তাফিজের। উইকেট পেয়েছেন একটি, কিন্তু ২.২ ওভারে দিয়েছেন ৩২ রান।
৮.২ ওভারে মাত্র ২ উইকেটের বিনিময়ে পাওয়া এই জয়ে নেট রানরেটের হতশ্রী অবস্থাটাও অনেকাংশে কেটে গেলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের।