ম্যাচের তখন দশম ওভার; বল হাতে টি-টোয়েন্টির সেরা বোলার তাবারিজ সামসি। পঞ্চম বলে হাঁটু গেড়ে মিড উইকেটের উপর দিয়ে বিশাল ছক্কায় অর্ধশতক এভিন লুইসের; ডাগআউটে বসে থাকা ক্রিস গেইল তালি দিতে দিতে উঠে দাড়ালেন। তা দেখে মুচকি হাসি লুইসের, কয়েক সেকেন্ড না পেরোতেই উঠে দাড়ালেন দলের বাকিরাও। দশ ওভার শেষ হতে তখন বাকি মাত্র এক বল; ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬৫। ২৭ বলে ১২ রানে অপরাজিত লেন্ডিল সিমন্স!
একটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক ইনিংসের শুরুতেই। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে ওয়েস্টইন্ডিজ; বল হাতে এইডেন মার্করাম। সাউথ আফ্রিকা দলে ব্যক্তিগত কারণে নেই কুইন্টন ডি কক, উইকেটের পেছনে তাই হেইনরিক ক্লাসেন। নিজের প্রথম ওভারে মার্করাম দিলেন চার রান, দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে করেছেন মেইডেন। মাঝখানে দুই রান দিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। তিন ওভার শেষে ছয় রান ক্যারিবিয়ানদের! ছয় ওভার শেষে লুইসের কল্যাণে ৪৩।
দশম ওভারে অর্ধশতক তুলে নেয়া লুইস পরের ওভারেই যখন প্যাভিলিয়নে ফিরে যাচ্ছেন তখন নামের পাশে তিন চার এবং ছয় ছয়ে ৫৬ রান। বাকি ব্যাটসম্যানদের জন্য একটা সুন্দর প্লাটফর্ম তৈরী করে দিয়েছেন ততোক্ষণে, সেখানেই তিনে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু নিকোলাস পুরানের। ১২ রান করে কেশব মহারাজের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও বাউন্ডারী ছাড়া করেছেন দুইটি বল।
পুরান ফিরছেন, ব্যাট হাতে মাঠে প্রবেশ করছেন গেইল। মহারাজের ঐ ওভারটার শেষ বলে সজোড়ে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা ইউনিভার্স বসের। কিন্তু ব্যাটে বলে হয়নি, উল্টো ভারসাম্য হারিয়েছেন শরীরের। এলবিডব্লিউয়ের আপিল সাউথ আফ্রিকার এবং আম্পায়ারে নাকচ। রিভিউ নিলেন টেম্বা বাভুমা, কিন্তু বহাল থাকলো আম্পায়ার্স কলটাই।
নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে একটা দিনই হয়তো এই ম্যাচে কেঁটেছে সিমন্সের। রাবাদার বলে যখন বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছেন ততোক্ষণে খেলে ফেলেছেন ৩৫ টি বল। কোনো বাউন্ডারি তো আসেইনি; উল্টো করেছেন মাত্র ১৬ রান! আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পরিচিত ক্যারিবিয়ানদের এমন রূপ শেষ কবে দেখেছিল কে সেটাও ভাবার বিষয়।
আঠারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এসেছেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। এসেই ফিরিয়েছেন গেইলকে; ১২ রানে ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়া গেইল অধিনায়ক পোলার্ডের সাথে গড়েছেন ৩২ রানের জুটি। গেইল ফিরলেও এসেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল; যেন বার্তা দিয়ে রাখলেন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের। কিন্তু রাসেলও পারেননি পিচে থিতু হতে; আনরিক নরকিয়ার দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। নিজের চার ওভারে নরকিয়া দিয়েছেন মাত্র ১৪, উইকেট ১টি।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেই ১৪৩ রান করেছেন, সেটাও পোলার্ডের ২৬ রানের কল্যাণেই। প্রিটোরিয়াস নিয়েছেন ১৭ রানে ৩ উইকেট, মহারাজ ২৪ রানে দুইটি।