বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক খারাপ সময়ের পেছনে খেলোয়াড় বা কোচিং প্যানেলের পাশাপাশি নির্বাচকদের দোষ উঠছে সমানতালে। কিছু কিছু ব্যক্তি বরং কোচ-খেলোয়াড়দের চেয়ে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির দায়টাও দেখেন। দ্রুত তাঁদের পদত্যাগ চান।
অলরাউন্ডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা অবশ্য জানিয়েছেন, নির্বাচকদের শুধুমাত্র দর্শক বা মিডিয়ার কথাতে বিদায় করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
“বোর্ড যদি সুনির্দিষ্ট চিন্তা করে তাহলে ভালো। আবার এদের দিয়ে যদি চালানো যায় তাও ভালো। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, আউটপুটটা কি? নান্নু ভাই ৮-৯-১০ বছর এই পদে আছেন, তার অনেক অভিজ্ঞতা হওয়ার কথা। সুমন ভাইও তাই। রাজ্জাক নিজে কতোগুলা ফার্স্টক্লাস ম্যাচ খেলছে, ওর তো প্লেয়ার সব মুখস্ত, কে কেমন? তো এটা তো কোন সমস্যা না যতক্ষণ তারা আউটপুট দিতে পারে। আর যদি ক্রিকেট বোর্ড মনে করে তারা পারছে না তাহলে নতুন কাউকে আনুক। কিন্তু তারাও নতুন যদি আউটপুট না দিতে পারে তাহলে? তো এই বিষয়ে একদম সুনিশ্চিত হতে হবে।”– বলেছেন মাশরাফী
“আপনি তার সাথে কাজ করেছেন, তার কাজ দেখেছেন, তার ভালো ভালো আইডিয়া আছে কিনা তা জানেন। তো এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। জাস্ট সরাতে হবে বলে, আমি তাকে পছন্দ করিনা বলে বা মিডিয়া দর্শকদের চাপে তাকে সরিয়ে দিলাম এটা হচ্ছে পিঠ বাঁচানো সিদ্ধান্ত। আরেকটা হচ্ছে আমি তাকে সরাচ্ছি বাট আমি একজন সঠিক লোককে বাছাই করছি, তার ভালো করার চান্সেস বেশি। যেমন প্লেয়ারদের ক্ষেত্রে একজনকে বাদ দিচ্ছি আরেকজনকে নিচ্ছি তেমন। মিডিয়া পক্ষে নাই, সাবেক প্লেয়াররা পক্ষে নাই, দর্শকরা পক্ষে নাই স্রেফ এই চিন্তা থেকে কাজ করলে আসলে আগানো যায়না।”– আরো যোগ করেছেন মাশরাফী
যোগ্য লোককে দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আমলে না নেওয়ার পক্ষে মাশরাফী।
“জনপ্রিয় সিদ্ধান্তই আত্মঘাতী হয় বেশি। জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত হইলে তো অনিল কুম্বলে কোচ থাকতো। বিগত সাত বছরে ইন্ডিয়া ক্রিকেট চেঞ্জ করে দিছে রবি শাস্ত্রী। কিন্তু জনপ্রিয় ছিলো রবি শাস্ত্রী। আপনি যখন একটা দায়িত্বে আছেন আপনাকে দেখতে হবে আপনি বাংলাদেশ দলকে কোথায় নিতে চান। এবং আপনার ঐ পক্ষে আপনার ইউনিটে সিলেক্টর, কোচিং ম্যানেজমেন্ট, ডিরেক্টর, টিম অপারেশন, মিডিয়া হাউজ, পিচ, গ্রাউন্ড, এগুলো সমন্বয় করা প্রয়োজন। এই সংশ্লিষ্ট লোকেদের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন সেটা কোন ব্যাপার না। সম্পর্ক বাইরের ব্যাপার, বিসিবির ভেতরে সম্পর্ক পুরোপুরি প্রফেশনাল। যে লোককে আমি পছন্দ করি না, সে বাংলাদেশের বেস্ট হইলে আমি তাকে নেওয়ার পক্ষে।”