ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে স্ত্রাসবুর্গের বিপক্ষে ৪-২ গোলের জয় পেয়েছে পিএসজি। কিন্তু পিএসজির জয়কেও ছাপিয়ে গেছে একজন কিংবদন্তির আগমন, ফুটবলের রাজার আগমন। পার্ক দে প্রিন্সেসে যে পা রেখেছিলেন সদ্য পিএসজিতে আসা লিওনেল মেসি। শুধু মেসিই নন, ছিলেন পিএসজির আরও চার নতুন খেলোয়াড়; আশরাফ হাকিমি, সের্হিও রামোস, জর্জো ভাইনালডাম ও জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। কিন্তু মেসিকে পেয়ে যেনো উৎসবটা একটু বেশিই করলেন দর্শকেরা।
খেলোয়াড়েরা তখনও মাঠে আসেননি। তবুও কিসের যেনো অপেক্ষা সকলের! নেইমার এই ম্যাচে খেলবেননা সেটা আগে থেকেই জানা, খেলবেননা মেসি-রামোসদের কেউই। তবুও পরিবেশটা যেনো থমথমে, সবাই যেন অপেক্ষা করে আছেন বিশেষ এক মুহুর্তের। অবশেষে সেই মুহুর্তটাও এসে গেল, বাদ্যযন্ত্রের সাথে পুরো পার্ক দে প্রিন্সেসে তখন দর্শকদের উন্মাদনা। আতশবাজির রঙিন ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে মাঠে এলেন মেসি। পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে তখন একটাই নাম, “মেসি মেসি”; মেসি আসার আগে থেকেই মাঠে উপস্থিত ছিলেন বার্সেলোনায় থাকাকালীন তার সবচেয়ে বড় শত্রুদের একজন সের্হিও রামোস, হাকিমি, ভাইনালডাম এবং দোনারুম্মাও। পুরো স্টেডিয়াম করতালির মধ্য দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন পিএসজির নতুন অতিথিদের। মেসিরাও জানালেন ভক্তদের অভিনন্দন। দর্শকদের এমন ভালোবাসা অভিভূত করেছে ফুটবল জাদুকরকে।
এরপর শুরু হলো ম্যাচ। মেসি রামোসদের সামনেই নিজেদের নৈপুন্য দেখালেন কিলিয়ান এমবাপ্পে-মাউরো ইকার্দিরা। ম্যাচের ৩ মিনিটেই গোলের দেখা পেয়ে যায় পিএসজি; দিয়ালোর দুর্দান্ত পাসে পিএসজিকে গোল এনে দেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার ইকার্দি। মেসি-নেইমার যখন ফিরবেন তখন হয়তো দলে জায়গাও পাবেননা, অথচ তিনি যে প্রস্তুত সেটা জানিয়ে দিলেন স্ত্রাসবুর্গের সাথে ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে। ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন এমবাপ্পে। স্টেপ আউট করে স্ত্রাসবুর্গের দুই খেলোয়াড়কে পরাস্ত করে শট নেন গোলপোস্ট লক্ষ্য করে; সেই শট স্ত্রাসবুর্গের খেলোয়াড় লুডোভিচ আজোরুকের মাথায় লেগে ঢুকে যায় তাঁদেরই জালে। আত্মঘাতি গোলে ০-২এ পিছিয়ে যায় স্ত্রাসবুর্গ।
নিজের দুর্দান্ত গতি এবং স্কিলের মাধ্যমে পুরো ম্যাচ জুড়েই স্ত্রাসবুর্গের খেলোয়াড়দের ভুগিয়েছেন এমবাপ্পে। তৃতীয় গোলটি এসেছে গতি, স্কিল এবং বিপরিত দলের খেলোয়াড়দের বোকা বানিয়েই। স্ত্রাসবুর্গের খেলোয়াড়দের পাশ কাটিয়ে এমবাপ্পে বল বাড়িয়ে দেন গোলপোস্টের সামনে দাড়ানো ড্রাক্সলারের সামনে, পায়ের আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়িয়ে দিতে বিন্দুমাত্রও ভুল করেননি তিনি। ৩-০ তে এগিয়ে থাকা পিএসজি হঠাৎ ছন্দ হারিয়ে ফেলে।
১১ মিনিটের মধ্যে ২ গোল খেয়ে বসে তারা। দ্বিতীয়ার্ধটা দুর্দান্তভাবে শুরু করা স্ত্রাসবুর্গ ৫৩ মিনিটে দেখা পেয়ে যায় তাদের প্রথম গোলের; অসাধারণ এক হেডে কেইলর নাভাসকে পরাজিত করেন কেভিন গামেইরো। ৬৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটিও এসেছে হেডেই। এবার হেড থেকে গোল করেন আজোরুকে। পিএসজি তখনও ৩-২ গোলে এগিয়ে। শেষমুহুর্তের বাঁশি বাজার আগ অব্দি আপ্রাণ চেষ্টা করলেও সমতায় ফিরতে পারেনি স্ত্রাসবুর্গ। উল্টো ৮১ মিনিটে আলেক্সান্ডার জিকু লাল কার্ড দেখার কারণে দশজনের দলে পরিণত হয় তারা; ৮৬ মিনিটে পিএসজির হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন পাবলো সারাবিয়া।