জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেষ্টে ব্যাটিং বিপর্যয় সামলে নিয়ে লিটন দাশ এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দৃঢ়তায় প্রথম দিনশেষে দারুন সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনশেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৯৪ রান। রান। দীর্ঘ ষোল মাস পর টেষ্ট ক্রিকেটে ফেরা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত আছেন ৫৪ রানে। তার সঙ্গে ক্রিজে আছেন ১৩ রান করা তাসকিন আহমেদ। লিটন দাশের ব্যাট থেকে আসে দলীয় সর্বোচ্চ ৯৫ রান। অধিনায়ক মুমিনুল হক করেছেন ৭০ ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরই হতে পারেননি সাকিব আল হাসান, বড় রান পাননি মুশফিকুর রহিমও। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ব্লেসিং মুজারাবানি।
A competitive opening day in Harare, where Liton Das' career-best 95 and Mahmudullah's unbeaten 54 has helped Bangladesh fight back from 132/6 to reach 294/8 at stumps #ZIMvBAN
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) July 7, 2021
হারারেতে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। টসে হেরেও জিম্বাবিয়ান অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর জানিয়েছিলেন টসে হেরে খুব একটা অখুশি নন তিনি। কেন তিনি অখুশি নন সেটাই যেন প্রমাণ করলেন জিম্বাবুয়ের স্ট্রাইক বোলার ব্লেসিং মুজারাবানি। বাংলাদেশি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের উপর পেস এবং বাউন্সের রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন তিনি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বোল্ড করে ফেরান শুন্য রান করা ওপেনার সাইফ হাসানকে । পঞ্চম ওভারে তার শিকার ২রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত। জিম্বাবুয়ের হয়ে অভিষিক্ত জিওন মায়ার্সের হাতে ধরা পড়ার আগে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের উইলো থেকে আসে ২ রান।
শুরুর ধাক্কা সামলে নেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন অন্য ওপেনার সাদমান ইসলামকে। দুজনের জুটি থেকে আসে ৬০ রান। দলীয় ৬৮ রানে রিচার্দ এনগারাভার বলে স্লিপে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলরের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৬৪ বলে ২৩ রান। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। অপর প্রান্তে তখনও অবিচল মুমিনুল হক। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল তিন উইকেট হারিয়ে ৭০ রান।
প্রথম সেশনে খুব ধীরগতির ব্যাটিং করলেও দ্বিতীয় সেশনে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম চার ওভারে ২৯ রান তোলেন মুশফিকুর রহিম এবং মুমিনুল হক। তাদের ৩৮ রানের জুটি ভাঙ্গে ৩০ বলে ১১ রান করে মুশফিক ফিরে গেলে। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে এলবিডব্লিউএ ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ফেরার ৫ বলের মাথায় ফেরেন নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। অনেকদিন ধরে ব্যাটিং ফর্মহীনতায় ভোগা সাকিব এদিনও পাননি বড় রানের দেখা। তিন রান করে বাঁহাতি মিডিয়াম পেসার ভিক্টর নিয়াউচির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল স্কয়্যার ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে রেজিস চাকাভার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
সঙ্গীরা ফিরে গেলেও অধিনায়ক মুমিনুল হক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে থাকেন । তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৪তম অর্ধশতক। ভিক্টর নিয়াউচির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের সাদামাটা শর্ট বল অভিষিক্ত দিওন মায়ার্সকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৩ চারে করেন ৭০ রান। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুমিনুল যখন আউট হন দলের রান তখন ১৩২। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটন দাশ যখন আউট হলেন, দলের রান তখন ২৭০। লিটন-রিয়াদের জুটি থেকে তখন এসেছে ১৩৮ রান। যেটা কিনা সপ্তম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
ডোনাল্ড ত্রিপানোর বলে ভিক্টর নিয়াউচির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন দাশ, আউট হওয়ার যন্ত্রনার সঙ্গে যোগ হয়েছে সেঞ্চুরি মিস করার হতাশা। ১৪৭ বলে ৯৫ রানের আলো ঝকঝকে ইনিংস খেলেন লিটন দাশ। লিটন ফেরার পরের বলেই ত্রিপানোর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে গোল্ডেন ডাক মেহেদি হাসান মিরাজের। হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগানো ত্রিপানোকে হ্যাট্রিক বঞ্চিত করেন তাসকিন আহমেদ। অর্ধশতক তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ক্যারিয়ারের ১৭তম অর্ধশতক তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন ৫৪ রানে।