৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

অবশেষে ‘ওলে আউট’!

- Advertisement -

গত তিন সিজন জুড়েই বিভিন্ন সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ছোটবড় ব্যর্থতায় সমর্থকেরা ‘ওলে আউট’ হ্যাশট্যাগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব করেছেন, তবে প্রতিবারই দারুণভাবে ফিরে এসে কোচের চাকরিতে বহাল থেকেছেন ওলে গুনার সুলশার। তবে এইদফা আর পারলেন না। দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, ওলেকে শুধিতে হইলো ঋণ…

লিভারপুলের বিপক্ষে ৫-০ গোলে হারের পরই গুঞ্জন উঠেছিলো। তবে এরপরের দুই ম্যাচে টটেনহামের বিপক্ষে জয় ও চ্যাম্পিয়নস লিগে আতালান্তার বিপক্ষে ড্র করে বলতে গেলে তাঁর চাকরি ‘বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, মার্কাস রাশফোর্ড ও এডিনসন কাভানিরা। পরের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির সাথে ২-০ ব্যবধানে হার, সেটিও সহ্য করে গেছে কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক বিরতির পর নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানো হয় কিনা, তা দেখতেই বোধহয়। তবে শনিবার সদ্য রেলিগেশন থেকে উঠে আসা ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে ৪-১ গোলে হারের পর বোধহয় আর সহ্য করা গেলো না! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বোর্ড কর্মকর্তাগণ টেবিলে থাবা দিয়েই বোধহয় বলে উঠলেন ‘যথেষ্ট হয়েছে!’ তাই তো ম্যাচের পরই এক জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচের পদ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় এসেছে ওলে গুনার সুলশারের!

রোববার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই সংবাদ প্রকাশও করে দিয়েছে ইউনাইটেড। যদিও ফাব্রিজিও রোমানোসহ আরো বেশকিছু প্রভাবশালী সাংবাদিক ও গণমাধ্যম আরো আগেই এই বিষয়ে প্রায় পাকা খবর দিয়ে দিয়েছিলো। জানা গেছে ইউনাইটেড মালিকপক্ষ গ্লেজার্স পরিবারও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

এরই সাথে শেষ হলো কোচ ওলের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে চার বছর ও প্রায় তিন সীজনের সম্পর্ক।  এমনিতেই ফুটবল কোচদের চাকরি তাসের ঘরের মতো, এই আছে এই নেই। তবে ওলে গুনার সুলশারের ব্যাপারে ইউনাইটেড বোর্ড ও সমর্থকেরাও প্রচন্ড ধৈর্য্য দেখিয়েছে। এর একটি কারণ, ওলে এই ক্লাবের একজন সাবেক কিংবদন্তী, দ্বিতীয়তঃ জোসে মরিনিও ড্রেসিংরুমে যে অশান্তির আগুন লাগিয়ে গিয়েছিলেন, খেলোয়াড়দের সাথে দারুণ সম্পর্ক তৈরি করে, তাদের একটি দল হিসেবে খেলতে উদ্বুদ্ধ করে সেই আগুন ঠান্ডা করেছিলেন ওলেই।

২০১৮-১৯ মৌসুমের মাঝপথে মরিনিও স্যাক হবার পর অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরের সিজনেই পূর্ণকালীন দায়িত্ব পেয়ে করোনা মহামারীর ভেতর দলকে বানিয়েছিলেন লীগে তৃতীয়, এফএ কাপ, লিগ কাপ ও ইউরোপা লিগে দল গিয়েছিলো সেমিফাইনালেও। প্রথম সিজন হিসেবে এটুকুতে সন্তুষ্ট থাকলেও ২০২০-২১ সিজনে সমর্থক ও বোর্ড উভয়েই ওলের কাছে চেয়েছিলো শিরোপা। খুব কাছাকাছি অবশ্য গিয়েছিলেন ওলে, তবে পচা শামুকে পা কেটে লিগ শিরোপা হারিয়েছেন, দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্ব পার করাতে পারেননি, ইউরোপা লিগের ফাইনালে উঠে ভিয়ারিয়ালের কাছে সেই শিরোপাও হারিয়েছেন।

সেবারও অজুহাত ছিলো ‘বড় সাইনিং হয়নি’। তবে ২০২১-২২ মৌসুমের শুরুতেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, জেডন সানচোর মতো সাইনিং করানোর পর তো আর ঐ অজুহাতও ধোপে টেকে না। বাকি দলও প্রায় ২-৩ বছর ধরেই একসাথে খেলছে। অথচ এই সিজনেই এমন বিশাল ছন্দপতন! এফএ কাপ থেকে ছিটকে গেছেন, বিএসসি ইয়াং বয়েজের মতো ক্লাবের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যাচ হেরেছেন, গত ৫ ম্যাচে মাত্র ১টিতে জয়। তিনটি হারা ম্যাচে হজম করেছেন ১১ গোল!

ওলের অবর্তমানে আপৎকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মাইকেল ক্যারিক।

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img