২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

অসাধারণ রোনালদো; গ্রুপের তিন নম্বর হয়ে পরের রাউন্ডে পর্তুগাল

- Advertisement -

ইউরোতে জার্মানি ও হাঙ্গেরি ড্র করেছে ২-২ গোলে। একই সময় বুদাপেস্টে ফ্রান্স ও পর্তুগালের ম্যাচও ২-২ গোলে ড্র হয়। “এফ” গ্রুপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবং রানার্স-আপ জার্মানি। গ্রুপের ৩ নম্বরে থেকে পর্তুগালের সেকেন্ড রাউন্ড যাত্রা ।

২০০৪ এর ইউরোতে পর্তুগালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গ্রিস। দুই হাজার আটের আসরে ইউরো চ্যাম্পিয়ন  হয়ে খেলতে এসে “ডি” গ্রপের ৪ নম্বর টিম হয়ে বাদ পড়েছিল তারা। ২০০৪ এর পর ২০২০ এ আবারও সেই ঘটনার পুনারবৃত্তির স্মমুখীন ইউরো ২০২০ এর “এফ” গ্রুপের বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে হারলেই বাদ পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয় পর্তুগাল। অপরদিকে, প্রথম ম্যাচে হারার পর পর্তুগালকে ৪-২ গোলে হারিয়ে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরিকে সামনে পায় জার্মানি। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ফ্রান্স এই গ্রুপের একমাত্র দল হিসেবে পরের রাউন্ড অনেকটাই নিশ্চিত করে রাখলেও গ্রুপের বাঁকি ৩ দলের যেকারও সম্ভাবনা ছিল বাদ পড়ার। এমন সমীকরণেই ইউরোর সবচেয়ে জমজমাট রাতে বাংলাদেশ সময় ২৪ তারিখ ১.০০টায় মাঠে নামে ”এফ” গ্রুপের চার দল জার্মানি-হাঙ্গেরি ও ফ্রান্স-পর্তুগাল।

বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনার ফুটবলের আবহ যে এবারের ইউরোতে সেরা তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এই অবহর সাথে মিল রেখে প্রথম হাফে ষাট হাজার দর্শককে সমানে সমান টক্করের ফুটবল উপহার দিয়েছে পর্তুগাল ও ফ্রান্স। বল দখলে দুই দলই সমান ৫০ শতাংশে ছিল প্রথম ৪৫ মিনিট; আর এই সময়ে গোলও হয় সমান ১টি করে। দুই পেনাল্টির এই হাফে গোল পান সাবেক দুই রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং করিম বেঞ্জেমা।

২৭ মিনিটে হাওয়ায় ভাসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে দানিলো পেরেইরাকে ফাউল করেন ফ্রান্স গোলকিপার হুগো লরিস। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সাথে সাথেই পেনাল্টির ঘোষনা দেন রেফারি। পেনাল্টি পেয়ে বড় মঞ্চে আরও একবার জ্বলে উঠতে ভুল করেননি রোনালদো। আসরে নিজের চতুর্থ গোল করে এগিয়ে নেন পর্তুগালকে। প্রথমার্ধের একেবারেই অন্তিম মুহুর্তে ম্যাচের দ্বিতীয় পেনাল্টির ঘোষনা দেন রেফারি। রোনালদোর রিয়াল থেকে বিদায়ের পর রিয়ালের আক্রমনের দায়িত্ব সামলানো বেনজেমা ফ্রান্সকে সমতায় ফেরানোর দায়িত্বে পিছপা হননি। এই পেনাল্টি থেকেই ফ্রান্সের জার্সিতে ছয় বছর পর গোল করেন বেনজেমা। হাই ভোল্টেজ ম্যাচে ১-১ স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

পুসকাস অ্যারেনার মতো আলিয়াঞ্জ অ্যারেনাতেও প্রথমার্ধে গোল হয়েছে। আর ম্যাচের প্রথম গোল আসে হাঙ্গেরি অধিনায়ক অ্যাডাম শালাইয়ের অসাধারণ হেডারে। শালাইয়ের গোলের এসিস্টে ছিলেন জার্মানির ক্লাব ফেইবার্গে খেলা রোলান্ড সালাই। প্রথমার্ধে বারবার আক্রমনে যেয়েও গোলের দেখা পায়নি জার্মনারা। অবশ্য ২০ মিনিটে ম্যাটস হামেলসের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে না এলে ১-১ সমতায় বিরতিতে যেতে পারতো দুই দল।

বিরতি থেকে ফিরেই পর্তুগালের অস্বস্তি বাড়িয়ে ম্যাচে ফ্রান্সকে লিড এনে দেন বেনজেমা। ৪৮মিনিটে পগবার থ্রু বলে জোড়ালো নিচু শটে পর্তুগাল গোলিকে পরাস্ত করেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড। পিছিয়ে পড়ে রোনালদোর কপালের ভাজ বাড়ার আগেই সমতায় ফেরে পর্তুগাল। ৫৭ মিনিটে ফ্রান্স ডিফেন্ডার জুল কুন্দের হ্যান্ড বলে ম্যাচের ৩নম্বর এবং পর্তুগাল পায় নিজেদের দ্বিতীয় পেনাল্টি। নিজের নেওয়া দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করতে ভুল করেননি ক্রিশ্চিয়ানো।

পর্তুগালের ভয় বাড়িয়ে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ৬৬মিনিটে সমতায় ফেরে জার্মানি। হাংগেরিয়ান গোলকিপার পিটার গুলাকসি উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফ্লাইট মিস করলে ফাঁকা গোলমুখে হেড থেকে গোল করেন কাই হার্ভারটজ।

জার্মানির সমতায় ফেরার মিনিট দুই পরেই পুসকাস অ্যারেনা এদিন রাতের সবচেয়ে বড় উল্লাস শোনে। বুদাপেস্ট থেকে ৬৫১ কি.মি দূরের মিউনিখে হাংগেরির ১-২গোলে এগিয়ে যাওয়ার বহিঃপ্রকাশই এই উল্লাস। ৬৮ মিনিটে ম্যাচে প্রথম গোলের মালিক অ্যাডাম শালাইয়ের এসিস্টে হাংগেরিকে এগিয়ে নেন আন্দ্রেস শেফার। অবশ্য, আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় নাটকের তখনও অনেক বাঁকি ছিল এদিন; খেলা শেষের মিনিট ছয় আগে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের হুমকিকে জয় করতে জার্মানিকে সমতায় ফেরান মিডিফিল্ডার লিওন গোরেৎস্কা।

দুটি আলাদা শহরের আলাদা দুটি মাঠে চারটি ভিন্ন দলের খেলায় ৮টি গোলও জেতাতে পারেনি কোনো দলকে। ফুটবলের সৌন্দর্যের এই রাতে ১ পয়েন্ট করে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে “এফ” গ্রুপের চারদল। এই গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যাবে ফ্রান্স ; রানার্সআপ জার্মানি। আর গ্রুপের ৩ নম্বর দল হয়ে পরের রাউন্ডে যেয়ে বেলজিয়ামের মুখোমুখি হতে হবে পর্তুগালকে।

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img