ফাস্ট বোলার মানেই তো গতির ঝড়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আইপিএলে দেখা যাচ্ছে উইকেটের চরিত্রের কারণে ‘ধীরে চলো’ নীতির মতো ‘ধীরে বল করো’ নীতি মেনে চলছেন বিশ্বের বড় বড় সব পেসার; যারা কিনা মূলত নিজেদের তুমুল গতির জন্যই বিখ্যাত। মুস্তাফিজুর রহমানদের মতো বোলার যাদের মূলতঃ কাটার আর স্লোয়ারই মূল অস্ত্র তাঁদের কথা তো আলাদা, কিন্তু আনরিখ নরকিয়া, কাগিসো রাবাদা, জাসপ্রিত বুমরাহ, লকি ফার্গুসনদের মতো গতিতারকারাও এই আইপিএলে যত পেরেছেন স্লোয়ার মেরে গেছেন। এবং আইপিএলে দেখতে পাওয়া আমিরাতের উইকেটগুলোর চরিত্র যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পুরোপুরি নাহলেও অনেকাংশেই বজায় থাকবে তা এখন থেকেই আন্দাজ করা যায়। সেজন্য বিশ্বকাপ শিবিরেও বোলাররা মূলত বোলিংয়ে গতির বৈচিত্র্য বাড়ানোর দিকেই জোর দিচ্ছেন তা বলাই বাহুল্য।
তবে একজন গতিতারকা হাঁটতে চান স্রোতের বিপরীতে। তিনি হচ্ছেন মিচেল স্টার্ক। বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে নিজের গতির সাথে আপোষ করতে হবে, নতুন নতুন বৈচিত্র্য শিখতে হবে এই কথার সাথে একমত নন অস্ট্রেলিয়ান এই পেসার।
“আমি আমার খেলাটা অনেক সহজভাবে দেখি । আমি এমন কেউ নই যে ২৪ রকমের স্লোয়ার মারতে জানে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো অবশ্যই নয়। আমার বলে গতি আছে এবং আমি ডেথ ওভারের বোলিংয়ে পারদর্শী। কাজেই আমি আমার শক্তির জায়গাতেই জোর দিতে চাই। অন্যরা কি করছে তা নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না।”
– ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন স্টার্ক
তার সতীর্থ জশ হ্যাজলউড আইপিএলের আমিরাত পর্বে খেলেছেন, প্যাট কামিন্স না খেললেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য স্লোয়ারের বৈচিত্র্য বাড়াতে কাজ করছেন। তবে তাঁদের পথেই চলতে হবে এমনটা বিশ্বাস করেন না স্টার্ক।
“একেক বোলারের পরিকল্পনা একেকরকম হয়। জশ আর প্যাট জিনিসগুলো যেভাবে দেখে আমি সেভাবে অবশ্যই দেখব না এটাই স্বাভাবিক। আমি যা ভালো পারি আমি সেটাই আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই।”
ইনজুরির কারণে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি স্টার্ক। সাত বছর পর টি-টোয়েন্টির কোন বিশ্ব আসরে মাঠে নামবেন এই অজি পেসার। যদিও এর মাঝে খেলেছেন দুটি ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। ২০১৯ বিশ্বকাপে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও হয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে সাদা বলের ক্রিকেটের দুটি ফর্ম্যাটেই বেশি খেলতে দেখা যায় তাঁকে, নতুন বল হাতে শুরুর দশ ওভার হোক বা পুরনো বল হাতে ডেথ ওভার- দুই ক্ষেত্রেই চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায় স্টার্কের ওপর। সেজন্য সাদা বলের ক্রিকেটে নিজের ভূমিকাটা ভালোই বোঝেন এই গতিতারকা।
“আমি লাল বলের চেয়ে সাদা বলের ক্রিকেটই বেশি নিয়মিত খেলেছি এবং এই ফরম্যাটে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এবং সাদা বলে আমার রোল খুব একটা বদলায়নি। আমি আমার খেলাটা সরল রাখতে চাই এবং দলকে যত বেশি সম্ভব ভালো ফলাফল এনে দিতে চাই।”
‘সুপার টুয়েলভ’ পর্বে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২৩ অক্টোবর নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া।