শারজাহতে আইপিএলের ৩৫তম ম্যাচে ভিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কোহলি-দেবদূত পাড়িকলের ব্যাটে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৫৬ রান তোলে বেঙ্গালুরু। জবাবে ১১ বল বাকি থাকতেই জয়ের দেখা পেয়ে যায় চেন্নাই। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান এসেছে ওপেনার ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের ব্যাট থেকে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ৯ ম্যাচে ৭ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পৌছে গেছে চেন্নাই, সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দিল্লি ক্যাপিটালস।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে ভিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু; ওপেনিংয়ে অধিনায়কের সাথে দেবদূত পাড়িকল। চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথম ওভারে বল হাতে দীপক চাহার; প্রথম দুই বলেই দুইটি বাউন্ডারিতে জাতীয় দলের সতীর্থকে অভিবাদন জানালেন কোহলি। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছেন পাড়িকলও; পাওয়ারপ্লের ছয় ওভার শেষে সংগ্রহটাও তাই ৫৫, কোহলির ৩৪। আইপিএলের ইতিহাসে মাত্র চারবারই পাওয়ারপ্লেতে ৩৪ রান কিংবা তার বেশি করতে পেরেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
কলকাতার বিপক্ষে ৯২ রানে অলআউট; চেন্নাইয়ের বিপক্ষে বিনা উইকেটে ৯২। স্কোরবোর্ডে বড় রান সংগ্রহের পথে কোহলির দল। ১২তম ওভারের প্রথম বলেই এসেছে দলীয় শতক; প্রথম উইকেটের পতন হয়েছে ১৪তম ওভারে ১১১ রানে। ৪১ বলে ৫৩ রান করে ডোয়াইন ব্রাভোকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে দলের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন কোহলি।
টি-টোয়েন্টিতে দশ হাজার রান থেকে মাত্র তেরো রান দূরে থেকেই কোহলি আউট হওয়ার পর ইনিংসে হয়েছে আরও ৪০টি বল; ডি ভিলিয়ার্স, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, টিম ডেভিডরা থাকার পরেও এসেছে মাত্র তিনটি ওভার বাউন্ডারি, চার হয়নি একটাও। প্রথম দশ ওভারেই ৯০ রান করা আরসিবি পরের দশ ওভারে স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছে মাত্র ৬৬ রান; শেষ ৫ ওভারে ৩৮। ১৫৬ রানের প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭০ রান এসেছে পাড়িকলের ব্যাট থেকে। ডি ভিলিয়ার্সের ১২ রানের পাশাপাশি ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে এসেছে ১১। ২৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো।
১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ফাফ ডু প্লেসি এবং ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। পাঁচ চার এবং তিন ছক্কায় প্রথম ছয় ওভার শেষে সংগ্রহটা গিয়ে দাড়ায় বিনা উইকেটে ৫৯; ১৫ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত গায়কোয়াড়, সাত বল বেশি খেলে প্লেসির সংগ্রহ ২৯। বড় রানের সম্ভাবনা তৈরী করলেও নবম ওভারে চাহালের বলে ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাড়ানো কোহলির দুর্দান্ত ক্যাচে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন গায়কোয়ার। নিজের চোখকে যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তরুণ এই ওপেনার, প্লেসি আম্পায়ারদের জানান টিভি ক্যামেরায় দেখার অনুরোধ। কিন্তু কাজে লাগেনি কিছুই, প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন গায়কোয়াড়; পরের ওভারে ম্যাক্সওয়েলের প্রথম বলেই ব্যক্তিগত ৩১ রানে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন প্লেসিও।
প্রথম ছয় ওভারে ৫৯ রান করা চেন্নাইয়ের দশ ওভার শেষে সংগ্রহটা গিয়ে দাড়ায় দুই উইকেটে ৭৮। হঠাৎ করেই জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে আরসিবি সমর্থকরা। কিন্তু, চাহাল-ম্যাক্সওয়েল-হাসারাঙ্গার টানা তিন ওভারে আম্বাতি রায়াডু এবং মইন আলির তিন ছয়ে ম্যাচ ততোক্ষণে নিজেদের করে নিয়েছে চেন্নাই; জয়টা তখন সময়ের ব্যাপার। পরের ওভারেই ইংল্যান্ড তারকাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন হার্শাল প্যাটেল, একটু পরেই রায়াডুর উইকেটটিও তুলে নিয়েছেন আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার। পরপর দুইজন সেট ব্যাটসম্যানকে ফিরানো গেলেও কাঙ্ক্ষিত জয়টার দেখা পায়নি ভিরাট কোহলির দল। ধোনি-রায়নার ব্যাটে ১১ বল বাকি থাকতেই চেন্নাইয়ের জয় এসেছে ছয় উইকেটে। ২৫ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন হার্শাল প্যাটেল।