চার আলীর নৈপূন্যে জিম্বাবুয়েকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলো পাকিস্তান! ম্যাচসেরা ডাবল সেঞ্চুরিয়ান আবিদ আলী আর ১৪ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হাসান আলী। সেঞ্চুরি করে ম্যাচজয়ে অবদান রেখেছেন আজহার আলী আর ব্যাটে-বলে সমান ঝলক দেখিয়ে নজর কেড়েছেন নোমান আলী।
দুদলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছিল দারুণ, তবে টেস্ট সিরিজের দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিক দল। ক্রেইগ আরভিন, শেন উইলিয়ামস আর সিকান্দার রাজার মতো তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি ভালোই ভুগিয়েছে আফ্রিকান দেশটিকে। খালি উভয় টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় নয়, পুরো সিরিজে মাত্র একবার দুইশ’র কোটা পূরণ করতে পেরেছে ব্রেন্ডন টেইলরের দল।
টেস্ট ক্রিকেটে খুবই গুরুত্বপূর্ন, টস জিতলেই নাকি অর্ধেক ম্যাচজেতা হয়ে যায়। মূলত এখানেই বাইশ গজের লড়াইয়ের আগেই ব্যাকফুটে জিম্বাবুয়ে। টসে জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না তা প্রমান করতে ভুল করেননি পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৩৬ রানের পাহাড় গড়ে আজহার আলী এবংআবিদ আলী। আজহার আলী ব্যাক্তিগত ১২৬ রানে ফিরে গেলেও একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন আবিদ আলী। নিজের প্রথম দ্বি-শতক তুলে নিতে ভুল করেননি এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এই জার্নিতে তিনি পাশে পেয়েছিলেন সবচেয়ে বয়স্ক অভিষিক্ত হিসেবে পাঁচ উইকেট শিকারি নোমান আলীর, নোমান আলী এবার বল হাতে নন, ঝলক দেখালেন ব্যাট হাতে। আউট হওয়ার আগে নামের পাশে যোগ করেছিলেন ৯৭ রান, তিন রানের আক্ষেপ জর্জরিত হৃদয়ে যখন ড্রেসিংরুমে যান পাকিস্তানের নামের পাশে বড়বড় করে জ্বলজ্বল করছে ৫১০-৮।
দীর্ঘ ১৮ বছরের অপেক্ষা শেষে অবশেষে আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় পা দেওয়ার সুযোগ পেলেন তাবিশ খান। সুযোগকে বোধহয় এভাবেই কাজে লাগাতে হয়। নিজের প্রথম ওভারেই মুসাকান্দাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট তুলে নেন তাবিশ খান। জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের বাকি সময়টা শুধুই হাসান আলীর। প্রথম ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, দ্বিতীয় ম্যাচে সেখান থেকেই শুরু করলেন পাকিস্তানি এই ডানহাতি পেসার। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১৩২ রানে অলআউট করতে মোটে ২৭ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নেন তিনি। সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান চাকাভার ব্যাট থেকে।
First time in Pakistan's Test history that all 10 wickets in the inns are taken by left-arm bowlers. Shaheen Afridi 5, Nauman Ali 5. #ZimvPak
— Mazher Arshad (@MazherArshad) May 10, 2021
দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট হাতে লড়ে গেছেন চাকাভা। যদিও তার ৮০ রান ইনিংস হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল না, ফলে ২৩১ রানেই গুটিয়ে যায় তার। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ব্রেন্ডন টেইলরও, তার ব্যাট থেকে আসে ৪৯ রান। প্রথম ইনিংস যদি হয় হাসান আলীর, দ্বিতীয় ইনিংস তাহলে শাহিন শাহ আফ্রিদি আর নোমান আলীর। এ যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মেলবন্ধন, যেন রিলে দৌড়। যেন এক প্রতিযোগি ব্যাটন তুলে দিচ্ছেন আরেকজনের কাছে, নোমান আলী যেন ব্যাটন তুলে দিচ্ছেন শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। দুজনের পাঁচ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারানোর পাশাপাশি নিশ্চিত হয় সিরিজ জয়ও।