টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। ড্যারিল মিচেলের অপরাজিত ৭২* রানের ইনিংসে ভর করে এক ওভার হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে কিউইরা; গতবারের রানার্স-আপ দল ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ৫ উইকেটে।
সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে তখন কিউইদের প্রয়োজন ২৪ বলে ৫৭; পিচে অর্ধশতকের অপেক্ষায় থাকা ড্যারিল মিচেলের সাথে জেমস নিশাম। আগের ওভারে লিভিংস্টন দিয়েছেন মাত্র ৩ রান, পুরো ম্যাচ জুড়েই ধুঁকেছে কিউই ব্যাটসম্যানরা। সেকারণেই হয়তো গ্যালারিতে থাকা ভক্ত-সমর্থকদের চোখ-মুখজুড়ে হতাশা, কেউ কেউ তো প্রার্থনাতেই মগ্ন ততোক্ষণে! সেখান থেকেই নিশাম ঝড়, ক্রিস জর্ডানের ওভারটাতে নিলেন ২৩ রান!
পরের ওভারে প্রথম বলেই হতে পারতো সিঙ্গেল, কিন্তু মিচেলকে বলটা লাগায় কিউই ব্যাটসম্যান নিজেই ফেরত পাঠালেন নিশামকে। তাতে কি! আদিল রশিদকে ছক্কা দিয়েই শুরু নিশামের, পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দিয়েছেন মিচেলকে। এবং, লংঅনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কায় মিচেলের অর্ধশতক। জিততে হলে কিউইদের প্রয়োজন ১২ বলে ২০ রান। জয় তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রথম বলেই দুই নেয়ার পর, ক্রিস ওকসকে টানা দুই বলে দুই ছক্কা মিচেলের; শেষ বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে দারুণ বাউন্ডারিতে করেছেন ফাইনাল নিশ্চিত।
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন; সিদ্ধান্তটা যে ভুল নেননি কিউই অধিনায়ক সেটা প্রমাণ করেছেন বোলাররা। শুরুতেই বিপক্ষ দলের ওপর সৃষ্টি করেছেন চাপ। সেই চাপেই মূলত রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন জশ বাটলার। তার আগে দুর্দান্ত এক শটে মিড অফ অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারি তুলে নিতে গিয়ে জনি বেয়ারস্টো হয়েছেন উইলিয়ামসনের তালুবন্দি।
হাতের ইনজুরি নিয়েও উইলিয়ামসনের একের পর এক ঝাঁপিয়ে পড়া, গ্লেন ফিলিপসের বাউন্ডারি লাইনে করা দুর্দান্ত ফিল্ডিং আশাই দেখাচ্ছিলো কিউইদের। কিন্তু ট্রেন্ট বোল্টের দুঃস্বপ্নের মতো দিন এবং ইনিংসের শেষ দিকে বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে নির্ধারিত ২০ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ গিয়ে দাড়ায় ৪ উইকেটে ১৬৬। ৪১ রান করে ডাওয়িড মালান প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও মঈন আলী অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। ২৪ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি।
১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৯ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ড। পাওয়ারপ্লেতেই দুই তারকা ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল-কেন উইলিয়ামসন ফিরে গেলেও দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন ড্যারিল মিচেল-ডেভন কনওয়ে; তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে গড়েছেন ৮২ রানের জুটি। কনওয়ে ৪৬ রানে ফিরলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন মিচেল। খেলেছেন ৭২* রানের অপরাজিত ইনিংস। জেমস নিশামের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ বলে ২৭ রান, ২২ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন লিয়াম লিভিংস্টন।