বৃষ্টির জন্য মঙ্গলবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল । বুধবার আবার শুরু হয়েছে ডিপিএল। মিরপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে খেলাঘরকে ১৯ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম জয় পেয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। দুই ম্যাচে এক জয় আর ভেস্তে যাওয়া ম্যাচের এক পয়েন্টকে সঙ্গী করে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে দোলেশ্বর, আর দুই ম্যচেই পরাজয় বরন করা খেলাঘর আছে তলানিতে।
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে প্রাইম দোলেশ্বর। ইনিংসের প্রথম বল থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হন দোলেশ্বর ওপেনার ইমরানউজ্জামান, প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা। প্রথম ওভার থেকেই তুলে নেন ১১ রান। তার ব্যাটিং ঝড়ে প্রথম ৫ ওভারেই দোলেশ্বর তুলে ফেলে ৪৬ রান। মাত্র ১৭ বলে ৩ চার এবং ৪ ছক্কায় ৪০ রান করে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ইমরান, দলের রানই তখন ৪৫। দোলেশ্বর পায় প্রথম ধাক্কা।
ইমরান টি-টুয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করলেও, অপর ওপেনার ফজলে রাব্বী ছিলেন রক্ষণাত্মক। রাব্বী খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে যখনই প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হবেন তখনই তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখতে বাধ্য করলেন তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। এবারের ডিপিএলে নামের ভারে তুলনামূলক দুই খর্বশক্তির দলের লড়াইয়ে জাতীয় দলের আশেপাশের খেলোয়াড়দের উপরই লাইমলাইটের আলো থাকে। টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ সাইফ হাসানও ছিলেন না এর ব্যতিক্রম। সাইফকে মোটা দাগে বলা যায় ব্যর্থ। ২৮ রান করেছেন বটে, তবে ইফরান হোসেনের বলে আউট হওয়ার আগে বল খেলেছেন ৩৩টি। যা ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের ক্ষেত্রে একদম বেমানান।
অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ খুঁজছে একজন ফিনিশার, শামীম হোসেন পাটোয়ারী দেখিয়েছিলেন আশা। বুধবারও তাই। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি, তাই দোলেশ্বরও পায়নি বড় সংগ্রহ। ২ চারে ১৬ করে ফিরেছেন শামীম,বল খেলেছেন ১২টি। ফিরিয়েছেন মাসুম খান। শামীম ফিরলেও ঝড়ের আভাস দেন শরীফুল্লাহ। এই অলরাউন্ডারের ৯ বলে ১৫ রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে দোলেশ্বর পায় ১৪৯ রানের মাঝারি সংগ্রহ। সর্বোচ্চ ৪০ করেন ইমরান। খেলাঘরের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাসুম খান এবং খালেদ। ৩ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
১৫০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় খেলাঘর। প্রথম ওভারেই তারা হারায় সাদিকুরের উইকেট। পরের ওভারে অপর ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেনকে ফেরান শরিফুল্লাহ। তৃতীয় ওভারে অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি রান আউটের ফাঁদে কাঁটা পড়লে চাপে পড়ে খেলাঘর। প্রাথমিক ধাঁক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন দুই হোসেন, সালমান ও ফরহাদ। স্ট্রাইক রোতটেশনের মাধ্যমে দলকে পথ দেখান দুই ব্যাটসম্যান। সালমান বেশিক্ষন টিকতে পারেননি, কাজের কাজটাও করে যেতে পারেননি। টি-টুয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন ৫০ স্ট্রাইক রেটে। বলের থেকে রান কম করে ৩৩ রানে যখন প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন ফরহাদ, দলের রান তখন ৫ উইকেটে ৭৩। ক্রিজে তখনও মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে খেলাঘরের পরাজয় তখন ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।
শেষদিকে এসে ঝড় তোলেন রিশাদ হোসেন। তার ৩ ছয়ে ১৯ বলে ৩৭ রানে ব্যবধান কমেছে শুধু। ১৩অ রানে গুটিয়ে যাওয়া খেলাঘরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এই লেগ স্পিনার। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন কামরুল রাব্বি, রেজাউর রহমান ও এনামুল হক জুনিয়র। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মিরপুরে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মুখোমুখি হব শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, সময় দুপুর দেড়টা।