প্রতিদিন মিরপুরে ঢোকা ও বের হওয়ার পথে দেখছেন দর্শনার্থীদের ভীড়। একাডেমি মাঠে যখন প্র্যাকটিস করছেন তখন দেখছেন ফাঁকফোঁকর দিয়ে অনেক উৎসাহী চোখ। বাবর আজমের তো বুঝতে বাকি থাকে না, এরা সবাই তাঁকে, তাঁর সতীর্থদের এক ঝলক দেখার জন্যই সারাদিন অপেক্ষা করে।
করোনা মহামারী শেষে প্রথমবার বাংলাদেশের কোন সিরিজে দর্শক মাঠে ফিরছে। সেই দর্শকদের সামনে বাংলাদেশ যেমন খেলবে, তেমনি খেলবে সদ্য বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলে আসা পাকিস্তানের তারকারা, যারা নিজেদের খেলা ও খেলার বাইরের নানান বিষয়ের জন্য এখন গোটা ক্রিকেট দুনিয়াতেই সমাদৃত হচ্ছেন। এবং বাংলাদেশে তো এমনি সময়ও পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বরাবরই আলাদা সম্মান পান।
বৃহস্পতিবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম প্রশংসা করলেন বাংলাদেশে তাঁদের শুভানুধ্যায়ীদের।
“মাঠে দর্শক থাকা সবসময়ই খুব ভালো ব্যাপার। আর আমার মনে হয় বাংলাদেশে শুধু বাংলাদেশ নয় আমাদের ফ্যানও প্রচুর রয়েছে। আমরা যখনই প্র্যাকটিসে আসছি, প্র্যাকটিস থেকে বের হচ্ছি, আমরা দেখছি প্রচুর মানুষ আমাদের দেখতে জড়ো হয়েছে তারা আমাদের চিয়ার ও করছে। এবং এটি কেবল এবার নয় আমরা আগেও দেখেছি”- বলেছেন বাবর
পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে কেবল মোহাম্মদ হাফিজই খেলছেন না এই সিরিজে। অপরদিকে প্রায় পূর্ণশক্তির এই পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ নামছে একেবারেই আনকোরা নতুন একটি দল নিয়ে; যে দলের ৩-৪ জনের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকই হয়নি। তবে বরাবরের মতোই বাংলাদেশ দল নিয়ে আর দশটা অধিনায়ক যা বলেন, তাই ঝড়লো বাবরের কন্ঠেও।
“এই সিরিজে আমরা বিশ্বকাপের মোমেন্টাম ধরে রাখতে চেষ্টা করবো। বিভিন্ন কম্বিনেশন পরখ করে দেখব। একটা কথা মনে রাখবেন এটি কিন্তু বাংলাদেশের হোম সিরিজ। অনেক নতুন খেলছে জন্য তাদের হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। তারা ঘরোয়া ক্রিকেট ও বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টে পারফর্ম করেই উঠে এসেছে।”-আরো যোগ করেছেন বাবর
বিশ্বকাপে প্রায় ৬১ গড়ে ৩০৩ রান করেছেন; হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এই পাকিস্তান দলে সবচেয়ে বড় হুমকি যে বাবর আজম তা বলাই বাহুল্য। তবে বাবর বললেন। এখনো নাকি নিজের ‘শতভাগ’ কোন ম্যাচে দিতে পেরেছেন তা মনে করেননা বাবর।
“উন্নতির জায়গা সবসময় থাকে। আমি কখনোই নিজেকে ‘পারফেক্ট’ মনে করিনা। প্রতিটি ইনিংসের পর আমি নিজের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা করি। আমার মতে প্র্যাকটিসে আমি যা করি মাঠে তার ৫০-৬০ ভাগ কাজই ঠিকঠাক করতে পারিনা। এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জটাই এটা যে আপনাকে প্রতিদিন নিজেকে আরো উন্নত করতে হবে।”
বাংলাদেশের মাটিতে সিরিজ হলেই ইদানিং আলাদা আলোচনার জায়গায় থাকে ‘উইকেট’। বাবর জানালেন মিরপুরের উইকেটের চরিত্র সম্পর্কে তারা অজ্ঞাত নন এবং এই উইকেটে কিভাবে খেলতে হবে সেই রণকৌশলও তাঁদের জানা!
“আমিরাতের উইকেট ও পাকিস্তানের উইকেটে মিল রয়েছে। তবে এই উইকেট আমিরাতের চেয়ে আলাদা হবে। আমরা জানি এখানে খুব বেশি রান হবে না। কাজেই আমাদের হাতে উইকেট রাখতে হবে। শুরুতে খুব বেশি উইকেট না হারালে শেষ ৭-৮ ওভারে বড় রানের লক্ষ্যে খেলা যাবে।”