২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

বাংলার ফুটবলের দুঃখ কমলাপুরের মাঠ!

- Advertisement -

শনিবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ফেডারেশন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো দুই-দুইটি ম্যাচ। অথচ, এক মুহূর্তের জন্যও বল মাঠেই গড়ায়নি। স্টেডিয়ামের নিম্নমানের টার্ফে ফুটবলারদের ইনজুরির শঙ্কা জানিয়ে খেলা বয়কট করেছে বসুন্ধরা কিংস এবং উত্তর বারিধারার মতো শক্তিশালী ক্লাব। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বেশ কয়েকটি ক্লাব কমলাপুর স্টেডিয়ামে খেলতে অস্বীকৃতি জানালেও তা আমলেই নেয়নি বাফুফে, ঘোষণা দিয়েছে টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়ার। বাংলার ফুটবলারদের ভালোমন্দ যেন দেখারই কেউ নেই!

নির্ধারিত সময়ও বসুন্ধরা এবং উত্তর বারিধারা দল মাঠে আসেনি

ঘটনার শুরু বিকাল চারটায় স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ বনাম বসুন্ধরা কিংসের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচে। খেলা শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে মাঠেই আসেনি বর্তমান টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। ঢাকা আবাহনী এবং উত্তর বারিধারার মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচেও একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি। বাইলজ অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিট পরেও বিপক্ষ দল মাঠে না আসায় বাঁশি বাজিয়ে ম্যাচ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি। পরবর্তীতে ম্যাচ কমিশনার জানান, “বাইলজ অনুযায়ী মাঠে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেছি। এখন বাফুফের কাছে আমি প্রতিবেদন জমা দিবো। বাফুফে যা করার করবে।” 

এ মাঠেই খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েছিলেন তপু বর্মণ

তবে, টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনে এমন নেক্কারজনক ঘটনা তো আর এমনি এমনিই ঘটেনি! টুর্নামেন্টের ভেন্যু ঠিক হওয়ার পরেই মাঠ খেলার অনুপযুক্ত হওয়ায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলো বসুন্ধরা, উত্তর বারিধারা এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। এর আগে স্বাধীনতা কাপে এই মাঠেই খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পরে বসুন্ধরার ফুটবলার তপু বর্মণ, তারিক কাজী ও ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জোনাথন ফার্নান্দেজ। সেসময় মাঠের মান নিয়ে  তপু জানিয়েছিলেন, “ঘাসের মাঠ হলে হয়তোবা এতো গুরুতর আহত হতাম না। এই টার্ফে স্বাভাবিক খেলা অসম্ভব। ছয় সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে আমাকে।” 

অবশ্য তাতেও কোনো মাথা ব্যাথা নেই বাফুফের। মাঠের বেহাল দশা সম্পর্কে জানতে চাইলেও বাফুফের কাছ থেকে মেলেনা উপযুক্ত জবাব। কমলাপুর স্টেডিয়ামের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী বলেছিলেন, “পেশাদার ফুটবলার ফিট থাকলে যেকোনো মাঠে খেলতে পারে। আমি ছোট ফুটবলার, কাদা মাঠেও খেলেছি।”

দিনের পর দিন অভিযোগ করা সত্ত্বেও মাঠের সংস্কারে তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এমনকি, ইনজুরির ঝুঁকি নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাংলার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মেয়েরা এ মাঠেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছিলো। চীনের দুঃখ যদি হয় হোয়াংহো নদী; কুমিল্লার দুঃখ যদি হয় গোমতী, তবে নিঃসন্দেহে বলা যেতেই পারে বাংলার ফুটবলের দুঃখ এই কমলাপুরের মাঠ।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img