পরিবর্তনের নিয়মে একটি দেশের ক্রিকেট দলে অধিনায়কের পালাবদল তো হতেই থাকে। কোনো কোনো দলের অধিনায়ক দলকে নিয়ে যান সাফল্যের চূড়ায়, আবার কেউ কেউ হন ব্যর্থ। তবে, দিন শেষে সেই তো সবচেয়ে সফল অধিনায়ক, যিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে দলের খেলোয়াড়দের দিয়ে যান অকুণ্ঠ সমর্থন। যাঁর জন্য দলের খেলোয়াড়রা খেলে এক হয়ে, নিজেদের জীবনটা দিয়ে দিতেও থাকে সদা প্রস্তুত।
এমনই এক ‘সফল অধিনায়ক’ পাকিস্তান দলের বাবর আজম। পাকিস্তান দলের সাফল্যের পেছনের অন্যতম কারিগর এই ডানহাতি ব্যাটার, দলনেতা হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে যাঁর পথচলার শুরু। পাকিস্তান দলের সহ-অধিনায়ক শাদাব খান মনে করেন, দলগতভাবে ভালো পারফর্ম করার পেছনে রয়েছে বাবর আজমের দুর্দান্ত ক্রিকেটীয় মস্তিস্ক। পাকিস্তান দলের প্রতিটি ক্রিকেটারের উপর নাকি রয়েছে বাবরের চমৎকার অধিনায়কত্বের প্রভাব। এমনকি দলের খেলোয়াড়রা নাকি তাঁর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত!
“বাবর আমাদের দলটাকেই বদলে দিয়েছে। ওর নেয়া প্রতিটা সিদ্ধান্তই বলে দেয় দলে ওর প্রভাব কতটা। ওর জন্যই আমরা একটা দল হিসেবে খেলতে পারছি, ভালো পারফর্ম করছি। দলের খেলোয়াড়রা ওর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত”- এক সাক্ষাৎকারে শাদাব
![](https://kcs3.eu-west-1.klovercloud.com/allrounderbd-live-ailkxhbi/2021/12/sada.jpg)
শুধুমাত্র শাদাব খান কিংবা দলের খেলোয়াড়রাই যে বাবরের অধিনায়কত্বে মুগ্ধ এমনটা নয়, স্বয়ং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রেসিডেন্ট রমিজ রাজাও মজেছেন বাবর-বন্দনায়, “লিডারশিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাবরের শক্তিশালী এবং ভয়ডরহীন অধিনায়কত্বের জন্যই দল সাফল্য পাচ্ছে। যখন আপনি একজন অধিনায়ককে ক্ষমতা এবং উৎসাহ দিবেন, তখন সে যেকোনো সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং দলের পারফরম্যান্স উন্নত করার দায়িত্ব নেয়। এভাবেই সে সাহসী হয়ে ওঠে।”
এক বাবর আজমের জন্য দলের খেলোয়াড় কিংবা বোর্ডের প্রেসিডেন্টের এমন ভালোবাসা কেনোই বা থাকবে না? শুধুমাত্র দলের ভালো সময়ই নয়, এই অকুতোভয় অধিনায়ক যে দলকে পরম মমতায় আগলে রেখেছেন নিজেদের খারাপ সময়েও। এইতো খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান যখন ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো, তখনও দলের দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই সফল অধিনায়ক।
“কষ্ট সকলেই পেয়েছি। আমরা কোথায় ভুল করেছি, কোথায় আরও ভালো করা যেতো এটা নিয়ে সকলেরই দুঃখ আছে। কিন্তু, এখান থেকে আমাদের শিখতে হবে। আমাদের যেই দলটা তিলে তিলে গড়ে উঠেছে এটা যেনো ভেঙ্গে না যায়। কেউই যেনো কারোর দিকে আঙ্গুল না উঠাই। কেউই যেনো কাউকে দোষারোপ না করি।”
![](https://kcs3.eu-west-1.klovercloud.com/allrounderbd-live-ailkxhbi/2021/12/Babar-with-his-team.jpg)
এমন অধিনায়কের জন্য দলের খেলোয়াড়রা তো নিজেরদের সর্বস্বটুকুও ত্যাগ করতে পারে নির্দ্বিধায়। এমন এক অধিনায়ক পাওয়া তো রুপকথার সেই ‘সাত রাজার ধন’ পাওয়ার মতোই আনন্দের! সুতরাং, মেন ইন গ্রিনরা দলপতি বাবর আজমের জন্য যদি নিজের জীবনটাও দিয়ে দিতে চায়, তাতে কি অবাক হওয়ার মতো আদৌ কিছু আছে?
পাকিস্তানিদের কাছে ক্রিকেট যদি হয় এক ‘উপন্যাস’, বাবর আজম তো সেই উপন্যাসেরই অন্যতম ‘প্রধান চরিত্র’…