সেশেলস নামে যে একটি দেশ আছে বাংলাদেশের অনেক দর্শক সম্ভবত তা জানতেনও না, বা জানলেও মনে থাকার কথা নয়। ২০২০ জানুয়ারিতে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপেও খেলেছে তারা। সেবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হয়নি।
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত আফ্রিকার দেশটি ফিফা র্যাংকিংয়েও ১৯৯তম স্থানে অর্থাৎ বাংলাদেশের থেকেও দশ ধাপ পেছনে। তবে ফুটবলের লড়াইয়ে বাংলাদেশের চোখে চোখ রেখেই কথা বলেছে ১১৫ দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জের খেলোয়াড়রা। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত প্রাইম মিনিস্টার মাহিন্দা রাজাপাকসা চারজাতি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে সেশেলস। বাংলাদেশের পক্ষে গোল করেছেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
ক’দিন ধরেই তুমুল বৃষ্টি শ্রীলঙ্কাতে। শুরুর দিন মঙ্গলবার পিছিয়ে গিয়েছিলো সেশেলসের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি। বুধবার যে মাঠে খেলা হলো, সেটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ফুটবল খেলার জন্য কতোটুকু উপযুক্ত তা প্রশ্ন তোলার যোগ্য। কাদার কারণে বল গড়ায় না, জায়গায় জায়গায় ঘাস উঠে গেছে, সর্বশক্তি দিয়ে লাথি দিলেও বল জায়গায় আটকে থাকে, রানিং-ড্রিবলিংয়ে সমস্যা হয় এমনকি ফাউল করলে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোটের সম্ভাবনাও থাকে।
সেই মাঠে প্রথমার্ধে যথাসাধ্য দুর্দান্তই খেলেছে বাংলাদেশ। ১৮ মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও যেভাবে আক্রমণের পসরা সাজাচ্ছিলো মারিও লেমসের বাংলাদেশ। র্যাংকিংয়ে দশ ধাপ পিছিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে বড় জয়ের আশাই অবশ্যই করছিলো বাংলাদেশ। তবে এরপরই বাংলাদেশের চিরায়ত ফিনিশিং সমস্যা জেঁকে বসে। প্রথমার্ধের বাকি সময় জুড়ে একগাদা সহজ এমনকি প্রায় নিশ্চিত সুযোগও নষ্ট করে বাংলাদেশের আক্রমণভাগ। ওয়ান অন ওয়ান পজিশনে সেশেলসের গোলকিপারকে পেয়েও আরেকটি গোল করতে ব্যর্থ হন আগের গোলের মালিক ইব্রাহিমই।
দ্বিতীয়ার্ধে সেশেলসের খেলা আরেকটু গোছানো ও পরিকল্পনামাফিক হয়ে ওঠে। দুবার প্রায় গোল করেই বসেছিলেন সেশেলস ফরোয়ার্ডরা। অপরদিকে বাংলাদেশের দূর্বল সমন্বয়হীন আক্রমণগুলোকে ঠেকিয়ে দিতেও সেশেলসের রক্ষণভাগের তেমন কোন বেগ পেতে হচ্ছিলো না। তবুও মনে হচ্ছিলো শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়বে বাংলাদেশ তবে ৮৮ মিনিটে ১৯ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড়ের শটে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় সেশেলস।
র্যাংকিংয়ের তলানিতে থাকা সেশেলসের জন্য তো এটি জয়ের সমান ড্র, বাংলাদেশের জন্য কি হারের সমানই নয়?