২৬ রানের মধ্যে নেই ৬ উইকেট। উইকেটে আসা লিটন কুমার দাশ ও মেহেদী হাসান মিরাজের মাথায় যেন এক পাহাড় সমান চাপ। তবে ঘাবড়ে যাননি দুই টাইগার ব্যাটার। চাপকে সাহস বানিয়ে হাল ধরেছেন বাংলাদেশের। ১৬৫ রানের জুটি গড়ে টাইগারদের ফলোঅন থেকে তো বাঁচিয়েছেন। একটু পর মিরাজ ফিরলেও হাসান মাহমুদকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন এলকেডি। ডানহাতি এ ব্যাটারের টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি ও শেষ বিকেলে পাকিস্তানের দুই উইকেট নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে ২১ রানে এগিয়ে পাকিস্তান।
অথচ বিনা উইকেটে ১০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনেই খেই হারিয়েছে টাইগাররা। ১৪ থেকে ২৬, এই ১২ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
দিনের শুরুতে জীবন পাওয়া জাকির হাসান খুররম শেহজাদের বলে স্ক্যায়ার লেগে আবরার আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। গতকাল শূন্য রানে জীবন পাওয়া সাদমান ইসলামও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। শেহজাদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৩ বলে করেছেন ১০ রান।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আরও একবার দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। শেহজাদের ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। গত ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা মুমিনুল হক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানও পারেননি তেমন কিছু করতে। উল্টো ছয় উইকেট হারিয়ে অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ।
সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন লিটন-মিরাজ জুটি। দুজনেই প্রথমে পাকিস্তানি বোলারদের দেখেশুনে খেলেছেন। শেহজাদ-মীর হামজাদের বাজে বলের জন্য অপেক্ষা করেছেন। সেটি পেলে মেরেছেন বাউন্ডারি। ৮৩ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন এলকেডি।
একটু পর ফিফটি করেন মিরাজও। টেস্টে এটি মিরাজের অষ্টম ফিফটি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দিকেই ছুটছিলেন মিরাজ। তবে খুররম শেহজাদের বলে মিস টাইমিংয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। তাতেই ভেঙেছে লিটনের সাথে তার ১৬৫ রানের জুটি। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে মিরাজের ব্যাট থেকে এসেচে ১২৪ বলে ৭৮ রান। প্রথম টেস্টর প্রথম ইনিংসে ৭৭ রান করেছিলেন মিরাজ।
তাসকিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে হাসান মাহমুদকে নিয়ে পাকিস্তানকে পাল্টা জবাব দিতে থাকেন লিটন। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন হাসান। মিরাজ ফেরার পর টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন এলকেডি। শতকের পথে দশ নম্বরে ব্যাট করতে আসা হাসানের সাথে গড়েছেন ৬৯ রানের জুটি।
এলকেডি আউট হয়ে যখন প্যাভিলিয়নে ফেরেন তখন তার নামের পাশে ১৩৮ রান। লিটনকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া হাসানের ব্যাট থেকে এসেছে ৫১ বলে অপরাজিত ১৩ রান। তাতেই প্রথম ইনিংসে ২৬২ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের হয়ে ৬টি উইকেট শিকার করেছেন খুররম শেহজাদ। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মীর হামজা ও সালমান আলী আগা।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে হাসানের বোলিং তোপের মুখে হারিয়েছে ২ উইকেট। প্রথমে আব্দুল্লাহ শফিককে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। শফিকের ক্যাচ নিয়েছেন লিটন। এরপর দারুণ ডেলিভারিতে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা শেহজাদকে বোল্ড করেছেন হাসান।
