ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ; প্রথমবারের মতো অজিবোধ। এরপরেই দেশের মাটিতে পা দিল কিউইরা; তাদের বিপক্ষেও এল প্রথমবারের মত সিরিজ জয়। দুই সিরিজেই দুর্দান্ত বোলিং করেছে টাইগার স্পিনাররা, স্পিন বিষে নীল হতে দেখা গেছে ম্যাথু ওয়েড-টম লাথামদের। স্পিনে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বটা এতদিন দিয়ে এসেছেন সাকিব আল হাসান; গত দুই সিরিজে তার ওপর চাপটা কমিয়ে এনেছেন নাসুম আহমেদ, শেখ মাহেদিরা। তবুও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ভরসা যে সাকিবের প্রতিই সবসময়ই বেশি সেটা তার কথাতেই স্পষ্ট।
অস্ট্রেলিয়ার সাথে সিরিজে সাকিবের টানা চার বলে চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন অজি ব্যাটসম্যান ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ান। এতে সাকিবের প্রতি অধিনায়কের আস্থাটা কিছুটা নড়বড়ে হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়াদ বলেন-
“ক্রিশ্চিয়ান সাকিবকে চারটা ছক্কা মারলেও, আমার মনে হয় আমি সাকিবকেই আবারো বোলিং দিতাম। সেই বিশ্বাসটা ওর প্রতি আছে আমার যে, ঐ উইকেটটা সাকিবই আমাকে এনে দিবে”- বলছিলেন রিয়াদ
সাকিবকে কখনো বোলিংয়ে না আনলে কিংবা কোনো ম্যাচে বসিয়ে রাখতে হলে সেটা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে জানাতে ইতস্ততবোধ করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়াদ বলেছেন, সাকিবকে বলাটা তার জন্য বেশ সহজ।
“এটা ভীষণ সহজ। আমাদের বোঝাপড়াটা অনেক ভালো। সাকিব সবসময়ই নিজে থেকে এসে মতামত জানায়, মুশিও তাই। ওদের যদি কোনো ব্যাপারে দ্বিমত থাকে তাহলে ওরা এসে বলে,’ভাই এটা বোধহয় এভাবে করলে ভাল হতো।‘ আমারও কিছু বলার থাকলে আমি ওদের বলি। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধটা খুব বেশি। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি এবং আমার মনে হয় এটা ভালো দিক দলের জন্য” – অলরাউন্ডারকে বলছিলেন রিয়াদ
মিরপুরের পিচ স্বাভাবিকভাবেই স্পিনবান্ধব হবে, কিন্তু স্পিনবান্ধব এই পিচেও আলাদাভাবে নজড় কেড়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। দলের প্রয়োজনে যখনই বোলিং করতে এসেছেন, দলকে এনে দিয়েছেন সাফল্য। টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ফিজের হাতে বল তুলে দেয়ার পরেও সেই ফিজকেই নাকি বোলিং করাতে দ্বিমত পোষণ করেন সাকিব আল হাসান। নিজেদের মধ্যকার বোঝাপড়াটা কতটা ভালো সেটা বোঝানোর জন্যই রিয়াদ দিয়েছেন এই উদাহরণ।
“গত সিরিজের কথা। আমরা প্রথমে বোলিং করছিলাম। ১৬ কি ১৭ ওভারে আমি মুস্তাফিজকে বল দিয়েছিলাম। কিন্তু, সাকিব এসে বললো ফিজকে না করায়ে অন্য কাউকে করাতে। তাহলে শেষ ওভারটা ফিজ পাবে। কারণ, শেষ ওভারে যেই প্রান্ত থেকে বল করা হবে, ঐ পাশে বাউন্ডারিটা ছোট ছিল। আমিও ভেবে দেখলাম, শেষ ওভারে ফিজ বল করলে আমাদের জন্যই সুবিধার। কারণ, আমাদের রান তাড়া করতে হবে”- বলছিলেন রিয়াদ
দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে এমন মধুর সম্পর্ক খুব বেশি দেখা যায় না। টাইগারদের পঞ্চপান্ডবদের সবাই একে একে নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করেছেন। ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে সাকিব-মুশফিক-রিয়াদরা যদি এক হয়ে লড়তে পারেন, তাহলে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটা যে পূর্ণতা পাবেনা তার নিশ্চয়তা কি কেউ আসলেই দিতে পারে?