বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ইউরি টিলেমান্সের “ওয়ান্ডার স্ট্রাইকে” চেলসিকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এফ. এ কাপের শিরোপা জিতেছে লেস্টার সিটি। ওয়েম্বলিতে লেস্টারকে ফাইনাল জেতানো একমাত্র গোলটা হয়েছে ৬৩ মিনিটে।
What an incredible #FACupFinal victory, @LCFC!
Congratulations to Leicester and @ChelseaFC on a great match, and to all the fans at Wembley for creating a fantastic atmosphere ? pic.twitter.com/GKiGnlAu71
— The Duke and Duchess of Cambridge (@KensingtonRoyal) May 15, 2021
আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি, করোনা যুগে ফুটবল মাঠে সবচেয়ে বেশি দর্শক আর মাঠে ব্রিটিশ রাজপুত্রের উপস্থিতি নিয়ে শুরু এফ. এ কাপ ফাইনাল, মুখোমুখি চেলসি আর লেস্টার। চেলসির নবম আর লেস্টারের প্রথম এফ. এ কাপ জয়ের মিশনে দুই দলের ফর্মেশনেই ছিলো তিন ডিফেন্ডার আর চারজনের মিডফিল্ড। প্রথমার্ধে ট্যাকটিক্যালি চেলসিই ছিলো এগিয়ে। ৫৬ শতাংশ বলের দখল, ৮৪ ভাগ সঠিক পাস কিংবা ৬টি কর্নার প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিটে চেলসির দাপট নির্দেশ করে, যেখানে প্রথমার্ধে একটা কর্নারও পায়নি লেস্টার। তারপরও খেলায় লেস্টার সিটি খুব বেশি পিছিয়ে ছিলো না। তবে দুই দলই বলার মতো সুযোগ তৈরী করতে পারেনি যেটাকে গোল করার দারুণ সুযোগ বলা যায়, এমনকি যে সুযোগগুলো তৈরী হয়েছিলো সেগুলোও বড়জোড় “হাফ চান্স”, এই কথার পক্ষে সাফাই দেবে পরিসংখ্যান। চেলসি গোলে শট নিয়েছে ৮টি, লেস্টার ৫টি; প্রথমার্ধের মোট ১৩টি শটের একটাও “অন টার্গেট” ছিলো না।
দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামূলক গোছানো ফুটবল খেলে চেলসিকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছে লেস্টার। এই চাপেই হয়তো ভুল করে বসেন চেলসি ডিফেন্ডার রিস জেমস। ডিবক্সের ডান দিকের শেষ প্রান্ত থেকে বল পাস করতে গিয়ে গড়বড় করে বসেন জেমস, লেস্টার ফরোয়ার্ড আয়োজি পেরেজের হাঁটুতে লেগে বলে চলে আসে লুক থমাসের পায়ে, থমাস পাস দেন সেন্টার হাফের সামনে, গোল থেকে প্রায় ৩০ গজ দূরে দাঁড়ানো মিডফিল্ডার ইউরি টিলেমান্সকে। প্রথম টাচে বল আয়ত্বে নিয়ে পরের টাচেই শট নেন গোলে। বেলজিয়ান মিডফিল্ডারের ডান পায়ের গতিময় শট জায়গা পায় চেলসি গোলের টপ কর্নারে। ডান দিকে সবটুকু ঝাঁপিয়েও বলের কাছাকাছি যেতে পারেননি কেপা আরিজাবালাগা। ততক্ষণে কমেন্টেররা বলছিলেন, ওয়েম্বলিতে লং রেঞ্জ শটে সেরা গোলগুলোর একটা ইউরি টিলেমান্সের “ওয়ান্ডার স্ট্রাইক”। প্রথম এফ. এ কাপ জয়ের মিশনে লিড পায় লেস্টার সিটি। পুরো ম্যাচে লেস্টারের ওই একটা শটই ছিলো “অন টার্গেট”!!
গোলের আশায় মরিয়া চেলসি এরপরই অলআউট অ্যাটাকে চলে যায়। বেন চিলওয়েল, ওলিভিয়ের জিরু, কাই হাভার্টজ, ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ আর কালাম হাডসন ওডোয়কে মাঠে নামিয়ে দেন টমাস টুখেল, সুযোগও তৈরী হয়। ওই সুযোগ আর গোলের মাঝখানে ছিলেন ক্যাসপার স্মাইচেল। বেন চিলওয়েলের দারুণ এক হেড ঠেকানোর পরপরই মেসন মাউন্টের শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন স্মাইচেল। তারপরও গোল ঠিকই পেয়েছিলো চেলসি, বাতিল হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারির (ভার) সিদ্ধান্তে।
ইউরি টিলেমান্সের ওই এক গোলেই নির্ধারিত হয় ফাইনালের ভাগ্য, টানা দ্বিতীয় বছর এফ. এ কাপের রার্নাস আপ চেলসি। চারবার ফাইনাল (১৯৪৯, ১৯৬১, ১৯৬৩, ১৯৬৯) খেলে অবশেষে ম্যাজিক নাম্বার ফাইভে এসে প্রথম এফ. এ কাপ জিতেছে লেস্টার সিটি। লেস্টারের প্রথম এফ. এ কাপ শিরোপা ইংলিশ ফুটবলে তাদের ম্যানেজার ব্র্যান্ডন রজার্সেরও প্রথম বড় শিরোপা। ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে পুরোনো প্রতিযোগিতা এফ. এ কাপ জেতা ৪৪তম দল ব্র্যান্ডন রজার্সের লেস্টার সিটি।