বেলজিয়াম মাঠে নেমেছিল ইডেন হ্যাজার্ডকে ছাড়াই।ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আক্রমণে যায় বেলজিয়াম। তবে কেভিন ডি ব্রুইনার থ্রু বল থেকে গোল আদায় করে নিতে পারেননি রোমেলু লুকাকু। মিনিট দুয়েক পর জর্জ কিয়েলিনির ভুলে কর্নার পায় বেলজিয়াম। সেই কর্নার থেকেও গোল আসেনি। ম্যাচের শুরুটা নিজেদের করে নিয়েছিল বেলজিয়াম, তবে গোল করতে পারেনি তারা।
উল্টো প্রথম গোল পেতে পারতো ইতালিই। ম্যাচের ১৩ মিনিটে বেলজিয়ামের জালে গোল দিয়েও অফসাইডের কারনে গোলবঞ্চিত হয় ইতালি। লরেঞ্জ ইনসিনিয়ার মাপা ফ্রিকিক থেকে জিওভানি দি লরেঞ্জের ফ্লিক, সেই বল পান লিওনার্দো বেনুচ্চি, এই জুভেন্টাস ডিফেন্ডার গতির শটে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন। তবে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফরির সহায়তা নিয়ে রেফরি সেই গোলকে অফসাইডের কারনে বাতিল করেন। মিনিট দশেক পর বেলজিয়ামের প্রাণ ডি ব্রুইনাকে গোলবঞ্চিত করেন ইতালি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দনারুমা। গোলপোস্টের বাঁ দিকে ম্যানসিটি তারকার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন ইতালিয়ান লাস্টম্যান।
দুই মিনিট পর লুকাকুকে গোলবঞ্চিত করেন জিয়ানলুইজি দনারুমা। মাঝমাঠে বল পান কেভিন ডি ব্রুইনা, বল পেয়ে ডি ব্রুইনার সেই সিগনেচার দৌড়, তারপর বল ঠেলে দিলেন মাঠের ডানদিকে থাকা লুকাকুর পায়ে। কাট করে ভিতরে ঢুকলেন লুকাকু। তবে লুকাকুর বাঁ পায়ের মাটি কামড়ানো দুর্বল শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন দনারুমা। সেই বল কর্নারের বিনিময়ে পাঠিয়ে দেন দি লরেঞ্জ। সেই কর্নার থেকে কাউন্টার অ্যাটাক ইতালির। তবে গোল আসেনি। ফেদ্রিকো কিয়েসার শট ঠেকিয়ে দেন থিবো কুর্তুয়া, লরেঞ্জ ইনসিনিয়ার কোনাকুনি শট চলে যায় বারের বাইরে দিয়ে।
শেষ ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থাকা ইতালি গোলমুখ খুলেছে ঠিক ৩১ মিনিটে। গোল করে ইতালিকে এগিয়ে দেন নিকোলো বারেলা। ফ্রিকিক থেকে বেলজিয়াম ডিফেন্স লাইনের মাথার উপর থেকে বল পান সিরো ইমোবিলে। ঠিকঠাক নিজের দখলে নিতে না পেরে ডি বক্সের মধ্যে পড়ে যান। বেলজিয়াম ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন, তবে ইয়ান ভারতনঘেনের ভুলে বল পান মার্কো ভেরাত্তি। ভেরাত্তি সেই বল বাড়ান বারেলাকে। বারেলা দুজনকে কাটিয়ে সরাসরি গোলে শট নেন, ফলাফল ম্যাচের আধা ঘন্টা না পেরোতেই গোলমুখ খুলে ফেলে ইতালি। ইতালির জার্সিতে এটা বারেলার ষষ্ঠ গোল, যার সবগুলোই আবার এসেছে প্রথমার্ধে
প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার মিনিট পাঁচেক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ ছিল ইতালির সামনে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল খুঁজে নেয় ডি বক্সের সামান্য বাইরে থাকা ফেদ্রিকো কিয়েসাকে, তার কোনাকুনি শট একটুর জন্য গোলে থাকেনি।তবে মিনিট দুয়েক পর ঠিকই ব্যবধান দ্বিগুন করেছে ইতালি। নেপথ্যে লরেঞ্জ ইনসিনিয়া। মাঠের বাঁ প্রান্তে মাঝমাঠের সামান্য আগে বারেলার থেকে বল পেয়ে কাট করে ভেতরে ঢুকেছেন, একজনকে কাটিয়ে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ইনসিনিয়া নিলেন নিজের সিগনেচার ‘কার্ল’। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও সেই গোল ঠেকানোর সামর্থ্য ছিল না থিবো কুর্তুয়ার। ফলাফল আলিয়ান্জ অ্যারেনায় দুই গোলে এগিয়ে গেল ইতালি।
গল্পেরও গল্প থাকে, নাটকের পর থাকে নাটক। সবাই যখন ভাবছিল দুই গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যাবে ইতালি, তখনই গোলের দুয়ার খুলে যায় বেলজিয়ামের সামনে। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে মাঠের বাঁ প্রান্ত থেকে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকেছিলেন জেরেমি ডোকু, তাকে ফেলে দেন দি লরেঞ্জ। সঙ্গে সঙ্গে রেফরির বাঁশি, পেনাল্টি। পেনাল্টি থেকে লুকাকুর ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে ব্যবধান কমিয়ে বিরতিতে বেলজিয়াম।ফলে চলতি ইউরোতে চার গোল নিয়ে লুকাকু এখন দ্বিতীয় সেরা গোলদাতা। শুধু ২০২১ সালেই লুকাকু গোল করেছেন ২১টা। বেলজিয়ামের হয়ে শেষ ২৩ ম্যাচে লুকাকুর গোল ২৪, শেষ ১৯ ম্যাচেই ২২টা।