যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশ, বোমার শব্দে ঘুম ভাঙ্গাই যেদেশের নৈমত্তিক এলার্ম। সেই দেশের নিগারা সুলতানাই কিনা অংশ নিচ্ছেন অলিম্পিকে! টোকিওতে তিনি শরনার্থী দলের প্রতিনিধি। অলিম্পিকে অংশগ্রহন কিংবা আফগান বলেই নন, নিগারা সুলতানার গল্পটাই আস্ত থ্রিলার।
১৯৯৩ সাল, নিগারা সুলতানার বয়স তখন ছয় মাস। যুদ্ধ চলছিল আফগানিস্তানে। সেই যুদ্ধ থেকে বাঁচতেই দুই দিন, দুই রাত টানা হেঁটে পাড়ি জমিয়েছেন পাকিস্তানে। মাঝে পেরিয়েছে প্রায় ১৮ বছর, প্রাপ্ত বয়সীর তকমা লাগতেই নিগারা ফেরেন নিজ দেশ আফগানিস্তানে, ভর্তি হন কাবুলে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব আফগানিস্তানে।
VNR for the media: 29 @RefugeesOlympic athletes to send a message of solidarity and hope to the world at the Olympic Games Tokyo 2020#IOCEB #Olympics
— IOC MEDIA (@iocmedia) June 8, 2021
রিও অলিম্পিক থেকেই দ্যা মোস্ট প্রেস্টেজিয়াস খ্যাত এই ক্রীড়া আসরে যুক্ত হয় শরনার্থী দল। সেই দলের হয়েই ২৮ জুলাই মাঠে নামার কথা নিগারা সুলতানার। জুডোতে অংশ নিতে যাওয়া এই অ্যাথলেটের স্বপ্নটাও ফিকে হয়ে আসছিল। তার দলীয় সদস্যের ধরা পড়েছিল করোনা।
এই সময়ে মনে হচ্ছিল, আমরা হয়তো অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগটি হারাতে যাচ্ছি এবং শরণার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারব না।
নিগারা সুলতানা
এই পথটা মোটেই সহজ ছিল না। দেশ ছেড়ে যাওয়া; আবার দেশে ফেরা। নিগারার স্বপ্ন পূরণের পথে দেশের বার বার নিজের পরিচয় হারিয়ে খোঁজা। সব জয় করেই নিগার অলিম্পিকে।
‘শরণার্থী যখন কেউ থাকে তখন মনে হয়, আপনার আশেপাশের সমাজ আপনাকে ঠিক আপন করে নিচ্ছে না। ছোট থেকেই পাকিস্তানের অন্য শিশুদের তুলনায় আমার বেড়ে ওঠা ছিল কঠিন’
অলিম্পিকে নিগারা সুলতানা কিছু জিতুক কিংবা না জিতুক, এই পথটুকু পেরিয়ে নিজের রাজ্যে নিগারা গোল্ড মেডেলিস্ট। অলিম্পিকের পরেও তার ইচ্ছা, তিনি খেলা চালিয়ে যাবেন; খেলাটাই নাকি তার শান্তির জায়গা।