মেম্ফিস ডিপের ফ্রিকিক থেকে হেড করে গোল করে জেরার্দ পিকের ক্লাব লোগোতে গাঢ় চুম্বন কিংবা আঁতোয়া গ্রিজমানের কাঁধে চড়া, মূলত ওটাই বর্তমান বার্সেলোনার প্রতীকী চিত্র। ক্লাবকে ভালোবেসে এক হয়ে লড়া! স্প্যানিশ লিগ লা লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে সেই স্বাক্ষরই রেখেছে বার্সেলোনা, জয় দিয়েই করেছে শুভ সূচনা। মার্টিন ব্র্যাথওয়েটের জোড়া গোলে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে কাতালানদের জয় ৪-২ ব্যবধানে। দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল দিয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি সোসিয়েদাদ।
গুটিকয়েক দর্শকের সামনে ন্যু ক্যাম্পে মৌসুমের প্রথম ম্যাচ, সবাই ঠিকই ছিলেন তবে ছিলেন না একজন। তিনি লিওনেল মেসি, তার জায়গায় আক্রমণের নেতৃত্বে ডিপে মেম্ফিস। মেসি নেই, তবে মাঠে ছিল পুরোনো বার্সা। পাসের পর পাস খেলে প্রতিপক্ষের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে গোল করা, এটাই তো বার্সা। ৬২ শতাংশ বল দখল নেওয়া কিংবা পাঁচশর বেশি পাস খেলা সেটারই প্রমান।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই আক্রমণে বার্সেলোনা, গোলও আসতে পারতো। মাঠের ডানপাশ থেকে মার্টিন ব্র্যাথওয়েটের শট গোলকিপারকে খুব বেশি পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। দশম মিনিটে আরেকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল কাতালানরা, জর্দি আলবার পাস থেকে গ্রিজমানের শট অল্পের জন্য পায়নি জালের দেখা। মিনিট দুয়েক পর আবার গ্রিজমান, আবার মিস। সাবেক সোসিয়েদাদ স্ট্রাইকারের হেড বারে লাগলে গোলমুখ খোলা হয়নি বার্সেলোনার।
ম্যাচের তখন ১৯ মিনিট, ফ্রিকিক পায় বার্সেলোনা। অন্যসময় হলে কত শত ক্যামেরা একজনকেই খুঁজতো। জায়গামতো বল বসিয়ে, জুতোর ফিতে বেঁধে যিনি প্রস্তুত হতেন একেকটা ফ্রিকিকের। ফ্রিকিক করার জন্য মেসি নেই, তবে গোল ঠিকই এসেছে। ডিপের ফ্রিকিক থেকে লাফিয়ে উঠে জেরার্দ পিকের হেড এবং গোল। ফলাফল ন্যু ক্যাম্পে বিশ মিনিটের ভেতরেই লিডে স্বাগতিকরা।
এরপর কয়েকবার ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছে বার্সেলোনা, তবে গোল আসেনি। যখন দুদলই বিরতিতে যাওয়ার অপেক্ষায়, তখনই ব্যবধান দ্বিগুন করে বার্সেলোনা। লিওনেল মেসি থাকলে হয়তো যার মাঠে নামাই হতো না, সেই মার্টিন ব্র্যাথওয়েটের প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের গোলে ব্যবধান বাড়ায় কাতালানরা। ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের পাস থেকে হেড করে গোল করেন এই ডেনিস।
বিরতি থেকে ফেরার ১৫মিনিট পর আবার ব্র্যাথওয়েট ম্যাজিক! ৫৯ মিনিটে তার দ্বিতীয় গোলে তিন গোলের লিড পায় বার্সেলোনা। আলাবার ক্রস সোসিয়েদাদ গোলরক্ষক অ্যালেক্স রেমিরো ফিস্ট করলে সেই বল পান ব্র্যাথওয়েট, উপহার পেয়ে জোড়ালো শটে গোল করতে ভুল করেননি তিনি।
তিন গোলের লিড হয়তো অমনোযোগী করে ফেলে বার্সেলোনাকে। সোসিয়েদাদ আরেকবার ফুটিয়ে তোলে বার্সেলোনার রক্ষণ দুর্বলতা। দুই মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল খেয়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক নেতো। ৮২ মিনিটে জুলান লবেতের গোলে ব্যবধান কমায় সোসিয়েদাদ, দুই মিনিট পর আরেকটা গোল পরিশোধ করেন মিকেল অর্যাবাল। এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত ফ্রিকিকে কিছুই করার ছিল না নেতোর। দুই মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেয় সোসিয়েদাদ।
শেষ পর্যন্ত সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বার্সেলোনাকে জয় এনে দেন রাইটব্যাক সার্জিও রবার্তো। ব্র্যাথওয়েটের পাস থেকে গোল করে ৪-২ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন এই স্প্যানিশ। দুই গোলের সঙ্গে এক গোল করিয়ে নিঃসন্দেহে ম্যাচের সেরা পারফর্মার ব্র্যাথওয়েট।