কিংস্টনে জমে উঠেছে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচ। শেষ দিনে জয়ের জন্য বাবর আজমের দলের প্রয়োজন ৯টি উইকেট; স্বাগতিকদের প্রয়োজন ২৮০ রান। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে একটা বলও মাঠে গড়ায়নি, তবুও দুর্দান্তভাবে নিজেদের এগিয়ে নিয়েছে মেন ইন গ্রীনরা। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫০ রানে অলআউট করে দিয়ে দ্রুত গতিতে তুলেছে রান; ১৭৬ রানে যখন ২য় ইনিংস ডিক্লেয়ার করলো সফরকারীরা, তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৩২৮ রানের বিশাল লক্ষ্য। ৪র্থ দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ৪৯।
৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই হারায় নাইট ওয়াচম্যান আলজেরি জোসেফের উইকেট। এরপর বোনার-ব্লাকউড মিলে গড়েন ৬০ রানের জুটি; ৩৭ রান করে বোনার যখন উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ড্রেসিং রুমের পথে চলা শুরু করেছেন, তখন দলীয় সংগ্রহ ১০৫। বাকি ৫টি উইকেট ৪৫ রানের মধ্যেই হারিয়েছে স্বাগতিকরা; প্রতিরোধ যা একটু গড়তে পেরেছিলেন জেসন হোল্ডারই, ব্যাট হাতে করেছেন ২৬ রান। ব্লাকউডের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩। পাকিস্তানের হয়ে ৫১ রান দিয়ে ৬টি উইকেট তুলে নিয়েছেন শাহিন আফ্রিদি।
১৫২ রানে এগিয়ে থাকা পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে রান তুলেছে দ্রুতগতিতে; ওপেনিং জুটিতে প্রথম ছয় ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৪৯ রান। টেস্টে ম্যাচে আচমকা টি-টোয়েন্টির স্বাদ পেল দর্শকরা; মাত্র ২৭ ওভার ব্যাটিং করে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১৭৬ রান। পাকিস্তানের ওমন ঝড়ো ব্যাটিং ই বলে দিচ্ছিল ম্যাচটা জিততে তারা কতটা মরিয়া, ড্রয়ের কথা মাথাতেই নেই। ২য় ইনিংসে ব্যাট করা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের কারোরই স্ট্রাইক রেট ছিলনা ৭০ এর নীচে। সর্বনিম্ন ৭৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা আজহার আলির ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ বল খেলে ২২ রান। বাবর আজম করেছেন ৩৩, ওপেনার ইমরান বাটের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ রান। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন হোল্ডার এবং জোসেফ।
নিজেদের ২য় ইনিংসে শুরুটা ভাল করেছিল ক্যারিবিয়ানরাও, ১২ ওভার অব্দি হারায়নি কোন উইকেট। পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য উপযুক্ত, বলটাও হচ্ছিল না তেমন সুইং। শাহিন শাহ আফ্রিদি-হাসান আলীরা যখন বেশ উদ্বিগ্ন, তখনই রানআউট হন কিরণ পাওয়েল। হাসান আলীর বলটাকে কাভার দিয়ে বাউন্ডারি অঞ্চলে ঠেলে দেন ক্রেগ ব্র্যাথওয়েট, লক্ষ্য তিন রান। তিন রান নিতে সমস্যাও হয়নি; বাউন্ডারি সীমানায় দৌড়ে গিয়ে বলটাকে উইকেটকিপারের হতে দেয়ার প্রচেষ্টা শাহিনের। রিজওয়ান কি মনে করে যেন ধরতে গিয়েও ছেড়ে দিলেন, বলটা লাগল স্ট্যাম্পে। রানআউটের আপিল বাবরদের, আর তাতেই হল বিপত্তি। পাওয়েল পৌছে গেলেও ছিলেন যে হাওয়াতেই, ব্যাটটাও করেনি মাটি স্পর্শ!
পঞ্চম দিনের আগে আরেকবার জমে উঠেছে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ। জিততে পারে যে কেউই, হতে পারে ড্রও। টেস্টের প্রকৃত সৌন্দর্যটাই তো এখানে!