দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ নিয়ে পুরো বিশ্বেরই আগ্রহটা তুঙ্গে থাকে সবসময়ই। থাকবেনাই বা কেনো! ফুটবল ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের বেশিরভাগই যে যুগে যুগে জন্মেছে এই দুই দেশেই। রোববার দিবাগত রাত একটায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মাঠে নামে দুই দল, কিন্তু শেষঅব্দি জেতেনি কেউই; খেলাটিই হয়ে যায় স্থগিত।
ম্যাচটি যে স্থগিত হতে যাচ্ছে, তার আভাস পায়নি কেউই। মাঠেও নেমেছিল দুই দল; হঠাৎ করে মাঠে ব্রাজিলের স্বাস্থ্যকর্তাদের উপস্থিতি। প্রিমিয়ার লিগ থেকে খেলতে আসা এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, জোভান্নি লো সেলসো, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়াদের খেলতে বাঁধা দিতেই মূলত স্বাস্থ্যকর্তাদের মাঠে আগমন। অথচ, চারদিন ধরেই ব্রাজিলে অবস্থান করছেন এই খেলোয়াড়েরা। প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ রেড জোনে থাকা দেশগুলোর খেলোয়াড়দের নিজ নিজ দেশের হয়ে খেলার অনুমতি দিবেনা জানালেও, আর্জেন্টাইন এই তারকারা দেশের হয়ে খেলতে এসেছিলেন এবং কোয়ারেন্টাইন আইনও মানেননি তারা।
ম্যাচ তখন শুরু হয়েছে মাত্র। খেলোয়াড়দের ধরতে মাঠে তখন ব্রাজিলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ স্বাস্থ্যকর্তারা। কথা কাঁটাকাঁটি হয় খেলোয়াড়দের সাথে, একসময়ে তা পৌছায় হাতাহাতি অব্দিও। এরপর খেলা শেষ না করেই ড্রেসিং রুমে ফিরে যায় দুই দল। এমন আকর্ষণিয় এক ম্যাচে এরকম পরিস্থিতি, স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে কষ্টের।
“আমরা এখানে খেলতেই এসেছিলাম। আমাদের একবারের জন্যও জানানো হয়নি ওদের খেলানো যাবে না। ম্যাচটা সকলের জন্যই উৎসবের ছিল; বিশ্বের সেরা কিছু খেলোয়াড়কে মাঠে দেখতে পেত বিশ্ব। কোচ হিসেবে আমার দায়িত্ব খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা” -বলছিলেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি
মাঠে হঠাৎ করে স্বাস্থ্যকর্তাদের প্রবেশ, খেলোয়াড়দের বাঁধাপ্রদানে বেশ অসন্তুষ্ট আর্জেন্টাইন কোচ।
“কে দোষী সেই তর্কে যেতে চাইনা, কিন্তু এটা মেনে নেয়া বেশ কঠিন। ম্যাচটা শেষ করা যেত, আমরা খেলতেই এসেছিলাম এখানে”- হতাশ হয়ে বলছিলেন স্কালোনি
এই ঘটনার পর ৫ ঘন্টা ব্রাজিলে অবস্থান করে আকাশী-সাদারা; মার্তিনেজ-রোমেরোদের গ্রেফতারের হুমকির আশঙ্কা মাথায় নিয়েই ব্রাজিল ত্যাগ করে আর্জেন্টিনা দল। সাত ম্যাচে সাত জয় নিয়ে পয়েন্টস টেবিলের শীর্ষে ব্রাজিল; চার জয় ও তিন ড্র নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। রোববারের ম্যাচের ফলাফল কি হবে তা নির্ভর করছে ফিফার ওপর। কিন্তু, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের এমন ঘটনা যে ফুটবলবিশ্বের জন্যই মেনে নেয়া কষ্টের, তা অনুমান করাই যায়।