ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন সিজনের শুরু মোটেই ভালো হলো না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। প্রথম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেই সুইজারল্যান্ডের ক্লাব বিএসসি ইয়ং বয়েজের মাঠে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে ২-১ গোলে হেরেছে ‘রেড ডেভিল’রা। একযুগ পর ইউনাইটেডের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পাওয়া গোলটি থেকেই এখন হয়তো সান্ত্বনা খুঁজবে ওলে গুনার সুলশারের শিষ্যরা।
বার্নের ওয়েঙ্কডর্ফ স্টেডিয়ামে শুরুতেই ইউনাইটেডের ওপর চড়াও হয় স্বাগতিকরা। ২ মিনিট না যেতেই ইয়ং বয়েজ স্ট্রাইকার মেশাক এলিয়া প্রায় গোল করেই বসেছিলেন। মাইকেল এবিশার অল্পের জন্য মিস করেন আরেকটি সুযোগ। তবে ছন্দে ফিরতে খুব বেশি সময় লাগায়নি ইউনাইটেড। ১৩ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেসের অসাধারণ এসিস্ট থেকে গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এটি ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাঁর ১৩৫তম গোল এবং ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে ১৬তম।
১-০ তে এগিয়ে যাবার পর সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল ইউনাইটেডের জন্য, হঠাৎ করেই ঘটলো অঘটন। ক্রিস্টোফার মার্টিন পেরেইরাকে রাফ ট্যাকল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ইউনাইটেড উইংব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকা। ৩৫ মিনিট না যেতেই দশজনের দলে পরিণত হয় ইউনাইটেড। প্রায় সাথে সাথেই সানচোকে তুলে নিয়ে রাইটব্যাক ডিওগো দালোকে নামান সুলশার। কোনমতে পার হয় ইউনাইটেডের প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিট।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ফন ডে বিককে তুলে রাফা ভারানকে নামিয়ে রক্ষণ আরো মজবুত করেন সুলশার। দাঁতে দাঁত চেপে ইয়ং বয়েজের একের পর এক আক্রমণ প্রতিহত করতে করতে শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষাই যেন করছিল ইউনাইটেড। রোনালদো পর্যন্ত রক্ষণে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছিলেন। তবে বেশিক্ষণ টিকলো না এই রক্ষণদূর্গ। ৬৬ মিনিটে উইংব্যাক নিকোলাস হেফটির বাড়ানো বলে ভলি করে ইয়ং বয়েজকে সমতায় ফেরান ফরোয়ার্ড নিকোলাস মুমি এনগামালেউ।
এরপরও মনে হচ্ছিলো, শেষ পর্যন্ত হয়তো ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবে ইউনাইটেড। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের ৯৪ মিনিটে জর্ডান সিবাচিউয়ের গোলটি সেই ১ পয়েন্টের আশাও ছিনিয়ে নিলো ওলের দলের কাছ থেকে। ইয়ং বয়েজ ঘরের মাঠে পেল ইংলিশ জায়ান্টদের বিপক্ষে এক ঐতিহাসিক জয়।
আজকের ম্যাচটি খেলতে নামার মাধ্যমে অবশ্য আরেকটি রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ইকার ক্যাসিয়াসের সাথে যুগ্মভাবে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এখন রোনালদোর। ১৭৭টি ম্যাচ খেলেছেন তাঁরা দুজনই। আর একটি ম্যাচ খেললেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটিও নিজের করে নেবেন ‘সিআরসেভেন’। তবে দল যখন সহজ ম্যাচ এভাবে হেরে গেছে, রেকর্ডটি বোধহয় খুব বেশি উপভোগ করবেন না তিনি।
গত সিজনেও একটি লাল কার্ডের অভিশাপেই খুব কাছে গিয়েও শেষ হয়ে গেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার স্বপ্ন; খেলতে হয়েছিল ইউরোপা লিগ। এবার সেই একই ঘটনার প্রায়-পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পারবে তো ইউনাইটেড?