দল হিসেবে পারফর্ম করলে বিগত দু-তিনমাসের ধারাবাহিকতা বিশ্বকাপেও বজায় রাখা এমনকি বিশ্বকাপে শিরোপার কাছাকাছি যাওয়াও বাংলাদেশের পক্ষে অসম্ভব নয় বলে মনে করেন মুশফিকুর রহিম। বিশ্বকাপের আগে টানা সাফল্য থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ বিশ্বকাপে ভালো করতে সাহায্য করবে বলেও মনে করেন মুশি।
‘হাউজ্যাট: মুশি দ্য ডিপেন্ডেবল’ নামের একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুক্রবার উপস্থিত হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তিনি এই গেমিং অ্যাপটির অংশীদার ও আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছাদূত। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ‘মিঃ ডিপেন্ডেবল’ দিয়েছেন অনেক প্রশ্নের উত্তর।
টানা তিন সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ; যার দুটি আবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। উইজডেন তো এই বিশ্বকাপের ‘কালো ঘোড়া’ও আখ্যা দিয়েছে টাইগারদের। এই সিরিজ জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বিশ্বকাপে ভালো করার এটাই সুযোগ এমনটাই মনে করেন মুশি।
“অতীতে যতবারই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলি না কেন, এবার একটা বড় সুযোগ ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করার। দল হিসেবে এটাই আমাদের সেরা সময়। এটাই সঠিক সময়। শেষ তিনটা সিরিজ আমরা জিতেছি এবং যেকোন বিশ্ব আসরের আগে দল হিসেবে এই আত্মবিশ্বাসটা আমাদের দরকার। টি২০ সোজা ফরম্যাট না তবে দল হিসেবে খেললে ভালো ফলাফল সম্ভব। আমি এটার জন্য মুখিয়ে আছি”- সাংবাদিকদের মুশফিক
এটি মুশফিকের ৬ষ্ঠ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ; এমনকি মুশি খেলেছেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম আন্তর্জাতিক সংস্করণের বিগত ৫টি বিশ্ব আসরেই। এই ব্যাপারটি মুশির ওপর বাড়তি প্রত্যাশার চাপ ফেলছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
“আপনি যখন এতোগুলো বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন তখন একটা প্রত্যাশার চাপ স্বাভাবিকভাবেই থাকবে। আমি সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করি, এবং সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি। সবসময় হয়তো হয়না; তবে সবসময়ই চেষ্টা থাকে দলের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু অবদান রাখার। এবারো আমি তাই করব এবং আশাকরি দল হিসেবে খেললে এইবছর শিরোপার জন্যও আমরা লড়তে পারবো।”
বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ খেলবে স্কটল্যান্ড, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এই দলগুলো বেশ কিছুদিন ধরেই নিয়মিত খেলার মধ্যে আছে, যেখানে বাংলাদেশ প্রায় একমাস খেলার বাইরে। এই অবস্থায় প্রথম রাউন্ডে এদের বিপক্ষে খেলাটা বাড়তি চাপের হতে পারে টাইগারদের জন্য। তবে মুশফিক মনে করেন, বিশ্রামটাও গুরুত্বপূর্ণ।
“বাছাইপর্বে খেলা মানেই বাড়তি চাপ। তবে আমরাও ৪-৫ মাস টানা ক্রিকেটের মধ্যে ছিলাম। আবার সাকিব-মুস্তাফিজ বাদে দলের আমরা বাকিরা একমাসের বিশ্রামও পেয়েছি। এটাও খুবই দরকার। ওখানে গিয়ে ১ সপ্তাহের একটা ক্যাম্প আছে আমাদের। নিজেদের মাঝে বোঝাপড়া ঠিক করে নেওয়ার সুযোগ আছে। আমরা কোনদিন ওমানে হয়তো খেলিনি, কিন্তু দুবাই, আরব আমিরাতে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। আশাকরি আমরা মানিয়ে নিতে পারবো ও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারবো।”
যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনোই খুব বেশি ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি ২০০৭ এর পর থেকে গ্রুপ পর্বে জিততে পারেনি একটি ম্যাচও। সর্বশেষ ২০১৬ আসরে ভারতকে হারানোর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ, তবে শেষ ৩ বলে ২ রান নিতে ব্যর্থ হয়ে হতে হয় লজ্জাজনক পরাজয়ের শিকার; যে পরাজয়ে পেছনে মুশফিকের ছোট্ট ভুলের অনেক বিশাল হাত ছিল বলে মনে করেন অসংখ্য ক্রিকেট সমর্থক। এই প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন,
“সবাই যত খেলবে তত শিখবে। আমি সবসময় চেষ্টা করি ইম্প্রুভ করার; নিজের ভুলগুলি থেকে শেখার। আমি যত উন্নতি করবো দলকেও ততবেশি দিতে পারব, সিনিয়র প্লেয়ার হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব।”
বিশ্বকাপের জন্য ৩ অক্টোবর ওমানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বাংলাদেশ দল।