৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

‘ব্যর্থ’ হতে যাওয়া দিন ‘সফলে’ পরিণত লিটন-মুশফিকের ব্যাটে

- Advertisement -

সকাল সবসময় দিনের পূর্বাভাস দেয়-এই কথাটি সম্ভবত সত্যি নয়।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় যেখানে ১০০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিলো বাংলাদেশ, লাঞ্চের সময় ধুঁকছিলো ৪ উইকেটে ৪৯ রানে। পেস-বাউন্স নিয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদি-হাসান আলী ও টার্ন নিয়ে সাজিদ খান নোমান আলীরা রাঙ্গাচ্ছিলেন চোখ। সেখান থেকে আর একটি উইকেটও হারাবে না বাংলাদেশ, করবে আড়াইশ’র বেশি, এও সম্ভব বাংলাদেশের পক্ষে, কে ভেবেছিলো?

তবে সম্ভব হলো, সম্ভব করলেন লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম, যারা সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি নিন্দিত ক্রিকেটারদের মধ্যে দুজন।

লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি ও মুশফিকের ৮২ রানে ভর করে দিনশেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৫৩/৪। আলোকস্বল্পতায় ৫ ওভার আগে ম্যাচ শেষ না হলে হয়তো মুশফিকও পেয়ে জেতেন শতক। দুজনে গড়েছেন ২০৪ রানের জুটি। যা পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা জুটি।

বাংলাদেশের প্রথম তিনজন ব্যাটসম্যান- সাইফ হাসান, সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হয়েছেন ১৪ রানে। সাইফ হাসান ৩টি বাউন্ডারি মেরে ১১ বলে ১৪ করে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন, তবে এরপরই শাহীন শাহ আফ্রিদির আচমকা দুর্দান্ত বাউন্সারে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন সাইফ। হাসান আলীর দারুণ ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডাব্লিউ হন সাদমান, যিনি এর আগেও দুবার আউট হতেন কিন্তু পাকিস্তান আপিল করেনি বা আম্পায়ার দেয়নি বলে বেঁচে গিয়েছিলেন। এরপর নাজমুল শান্ত ভালো খেলতে খেলতে ড্রিংকস ব্রেকের পর হুট করে বাজে শট খেলে উইকেট দিয়ে আসেন। অধিনায়ক মুমিনুল সাজিদ খানের টার্ন ও বাউন্সে বিভ্রান্ত হয়ে ফেরেন মাত্র ৬ রানে।

শুরুর এই ঝড়ের পর বাংলাদেশের ইনিংসে সাময়িক ‘স্থিরতা’ আসে লিটন-মুশফিকের ব্যাটে। বেলা গড়িয়ে উইকেট সহজ হয়ে আসার সাথে সাথে ব্যাট করাটাও সহজ হয়ে যায়। লাঞ্চের আগেই ক্রিজে আসতে হয়েছে দুজনকেই। লিটন আসার পর থেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন, মুশফিক দেখিয়েছেন অপরিসীম ধৈর্য্য!  তবে লাঞ্চের পর রানের চাকা বাড়াতে থাকেন দুজনই। দুজনেই ফিফটি পার করেন। মুশফিক প্রথম ৪০ বলে  করেছিলেন মাত্র ৫ রান। স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে পরের ৬৮ বলে করলেন বাকি ৪৬। লিটন শুরু থেকেই নিজের সহজাত স্ট্রোকপ্লে, পায়ের কাজ ও ক্লাসের প্রদর্শনী দেখিয়েছেন। সুন্দর বাউন্ডারি মেরে ৯৫ বলে পূর্ণ করেছেন নিজের ফিফটি।

তবে টেস্ট ক্রিকেটে ফিফটি করাটা এই বছর লিটনের জন্য ডালভাতের মতো ব্যাপারই হয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালে ৯ ইনিংসে ৫ বার পঞ্চাশ পেরিয়েছেন লিটন। তবে অধরা সেঞ্চুরিটি আসতো না। প্রতিবারই বাজেশটে উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন। অবশেষে এইদফায় পেয়ে গেলেন ৫ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটে অধরা শতকটি।

 

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img