চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের আসরের গ্রুপপর্বের শেষ গেমউইকে এসে যে গ্রুপটি সবচাইতে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছে সেটি নিঃসন্দেহে গ্রুপ বি। লিভারপুল তো আগেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠে গেছিলো রাউন্ড অব সিক্সটিনে তবে বাকি তিন দল- পোর্তো, এসি মিলান ও আতলেতিকো মাদ্রিদ প্রত্যেকের সুযোগ ছিলো পুলের সঙ্গী হওয়ার। আবার প্রত্যেকেরই বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও সমান ছিলো, এমনকি তৃতীয় হয়ে ইউরোপা খেলারও। কারণ তিন দলের পয়েন্ট ব্যবধান ছিলো খুবই কম।
এমন রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে এসি মিলান আতিথ্য দিয়েছিলো লিভারপুলকে, আতলেতিকো মাদ্রিদ গিয়েছিলো পোর্তোর মাঠে। লিভারপুলের জন্য ম্যাচটি ছিলো ‘ডেড রাবার’। মিলানের জন্য ছিলো জিতলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার সুযোগ। তবে ঘরের মাঠে ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের কাছে ২-১ এ হারায় ইউরোপা খেলাও ভাগ্যে জুটলো না মিলানের। অপরদিকে গ্রুপের আরেক লড়াইয়ে ছিলো আরো রোমাঞ্চের ঝাঁজ। যে আতলেতিকো মাদ্রিদ হেরে গেলে, এমনকি ড্র করলেও বাদ যেত, সেই আতলেতিকো মাদ্রিদ পোর্তোকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে উঠছে রাউন্ড অব সিক্সটিনে। পোর্তো খেলছে ইউরোপা লিগ।
প্রথমার্ধের ২৯ মিনিটে ফিকায়ো তোমোরির গোলে ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিরুদ্ধে এগিয়ে যায় রোজান্নেরিরা। শট আগে নিয়েছিলেন রোমানিওলি, তবে পুলের গোলরক্ষক আলিসন সেটি ঠেকিয়ে দিলে ফিরতি বলে আবারো শট নিয়ে বল জালে জড়ান তোমোরি।
তবে কিছুক্ষণ পরই প্রায় একইরকমভাবে মিলান গোলরক্ষক মাইক মেনিয়ানের হাতে লেগে ছিটকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে সমতা বিধান করেন মোহাম্মদ সালাহ। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে ডিভক অরিগির হেডারে ব্যবধান হয় ২-১। এরপর আর খেলায় ফিরতে পারেনি মিলান। বরং লিভারপুলই নষ্ট করেছে ব্যবধান আরো বাড়ানোর সুযোগ।
অপর ম্যাচে আতলেতিকো যেন নেমেছিলো মরণপণ লড়াইয়ের প্রত্যয় নিয়ে। ঘরের মাঠে পোর্তোও ছেড়ে কথা বলার পাত্র ছিলোনা। দুইপক্ষের শরীরী ভাষাই ছিলো অত্যন্ত মারকুটে। তাইতো সব মিলিয়ে সাতটি হলুদ কার্ড ও তিনটি লাল কার্ড দেখেছে দুই দল। বিশৃঙ্খলা ডাগআউটে ম্যানেজমেন্টের লোকেদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে।
Pepe leads 42-man brawl as Porto vs Atletico Madrid descends into chaoshttps://t.co/r8gU6Wqfqs pic.twitter.com/brfjJQfWw0
— Mirror Football (@MirrorFootball) December 7, 2021
প্রথমার্ধে সমানে সমান যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে পোর্তোকে অবশ্য একেবারে নাকাল করে ছেড়েছে ডিয়েগো সিমিওনের দল। ৫৫ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান। এর কিছুক্ষণ পর অবশ্য লাল কার্ড খেয়ে ইয়ানিক কারাসকো মাঠ ছাড়লে দশজনের দলে পরিণত হয় আতলেতিকো। তবে কিছুক্ষণ পর পোর্তোর ওয়েনডেলও দেখেন লাল কার্ড, তাঁর ৫ মিনিট পর বেঞ্চে বসা মার্কেসিনকেও অভব্য আচরণের জন্য লাল কার্ড দেখানো হয়। তাঁর আগে দুপক্ষের হাতাহাতি থামাতে ম্যাচ অফিশিয়ালদের ছুটে যেতে হয়েছিলো!
দশ বনাম দশের লড়াই অবশ্য একপেশেই হয়েছে। অতিরিক্ত সময়ে রদ্রিগো ডি পল ও আনহেল কোরেয়ার গোলে ৩-০ স্কোরলাইন নিয়ে আতলেতিকোর জয় সুনিশ্চিতই হয়ে যায়। শেষ মুহুর্তে পোর্তোর কাছে পেনাল্টি গোল হজম করে শুধু জয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে তারা।