নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে আপাততো শঙ্কা কেঁটেছে, টাইগারদের নেই ফিরে আসার সুযোগ। ২১ তারিখে করা হবে পুনরায় করোনা টেস্ট, ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে কোন পথে এগোবে বাংলাদেশ ক্রিকেট। এরই মাঝে দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা; বিপিএলের সময়সূচিতে আসতে পারে পরিবর্তন। পরিবর্তন আসতে পারে ভেন্যু সংখ্যা এমনকি দলেও।
বিসিবিতে জরুরী সভা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেখানেই তিনি জানালেন বিস্তারিত। আর, তাতেই দেখা দিয়েছে বিপিএল নিয়ে শঙ্কা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষে ১৫ তারিখে দেশে ফেরার কথা ছিল টাইগারদের। ২০ তারিখ থেকে বিপিএলের আয়োজনের পথে এগোচ্ছিলো ক্রিকেট বোর্ড। বিপিএল যেদিন শেষ হবে, সেদিনই আবার বাংলাদেশে আসবে আফগানিস্তান দল। আফগানদের সাথে সিরিজ শেষে ঐ সপ্তাহেই সাউথ আফ্রিকায় পাড়ি জমাবে টাইগাররা।
সামনে যে অনেক ব্যস্ত সূচি সাকিব-মুশফিকদের সেটা বোঝাই যাচ্ছে। কোনোরকমের বিরতি নেই। এরমধ্যে নিউজিল্যান্ড সিরিজ হবে কি হবে না তা নিয়েও আছে সংশয়। সব নির্ভর করছে ২১ তারিখের করোনা রিপোর্টের ওপর। বিসিবি সভাপতি অবশ্য বলেছেন কোন পথে এগোলে সম্ভব বিপিএলের আয়োজন।
“নিউজিল্যান্ড সিরিজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ, আফগানিস্তানের সাথে ওডিআই সিরিজটা সুপার লিগের। কিন্তু, বিপিএলটাও দরকার, কারণ এবছরেই বিশ্বকাপ আছে। তাছাড়া, আমরা স্থানীয় খেলোয়াড়দেরও এখান থেকে চিহ্নিত করতে পারি। কিন্তু কিভাবে সম্ভব আয়োজন করা? কিছু কাঁটছাট করতে হবে। যেমন- যারা নিউজিল্যান্ডে আছে ওদের বাদ দিয়েই বিপিএল চালু করা যেতে পারে। ওরা দেশে ফিরে দুই চারদিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর তারপর দলের সাথে যোগ দেবে। এবং, তারা তাদের পেমেন্টটাও পাবে।”
বিসিবি সভাপতি যোগ করেছেন আরও দুইটি উদাহরণ, “তিনটা ভেন্যুর জন্য আমাদের ছয়দিন ট্রাভেলিং আছে। ভেন্যু একটা কমালে হয়তো দুইদিন বাঁচানো যাবে। তৃতীয়ত হচ্ছে, ছয়টার জায়গায় পাঁচটা দল করলে আমরা আবার চার পাঁচদিন সময় পাই।”
বিসিবি সভাপতি অপশন দিয়েছেন শুধু, এমনটাই হবে তা নিশ্চিত করেননি। ২১ তারিখের পর নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে যদি আরও তিন চারদিন কোয়ারেন্টিন বাড়িয়ে দেয়া হয়, কিংবা যদি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড জানায় তারা সিরিজ আয়োজন করতে চায় তিন চারদিন পর তাতেও কোনো আপত্তি যে থাকবে না বিসিবির, সেটা নিশ্চিত করেছেন পাপন নিজেই।
তাহলে সবমিলে পুরো ব্যাপারটা কোথায় গিয়ে দাড়ালো? বিসিবি সভাপতি বিপিএল আয়োজন করতে চান বিশ্বকাপ আছে বলে। আবার, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ এবং ওয়ানডে সুপার লিগকেও দিতে চান সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য। খেলোয়াড়দের নেই অবসর। ইতোমধ্যেই দল গোছানো শুরু করে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও। হঠাৎ করে কাউকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেটা যে এতটাও সহজ হবে না এটা অনুমান করাই যায়।
আবার, ভেন্যু কমিয়ে তিন চারদিন পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু, সঠিক সময়ে যদি নিউজিল্যান্ড সিরিজ না হয়? বিসিবির সাথে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর চুক্তি এক বছরের। ব্যবসাটাও তো একটা বড় ব্যাপার ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নিকট। তারকা খেলোয়াড়দের ছাড়া তাদের ক্ষতি হতেই পারে। তাছাড়া, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো রাজি নাও তো হতে পারে।
সবমিলে, কোথাকার জল গড়ায় কোনদিকে, সেটা সময়ের হাতেই তোলা থাকলো। ২১ তারিখের আগে জানা যাবে না কিছুই। তবে, আগামী কয়েকদিনে যে আসতে চলেছে অনেক ঘোষণা, তা অনুমান করাই যায়। ভক্ত-সমর্থকদের প্রার্থনা, ‘বিজয়ের মাসে শঙ্কাগুলো কেঁটে যাক’। এই বিজয়ে, হাসি ফুটুক হৃদয়ে…