ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, ইনজুরি বা নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও বিভিন্ন ‘ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণ’ দেখিয়ে তার বারবার বিভিন্ন সিরিজ থেকে ছুটি চাওয়া দেখে অনেকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা বা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করে আসছিলেন ভক্তসমর্থকগণ।
সেই বিষয়টি নিয়ে অবশেষে খোলাখুলি বলেই ফেললেন সাকিব আল হাসান। অনেক হয়েছে! টেস্ট থেকে একপ্রকার ‘বিরতি’ নেওয়ার চিন্তাই করছেন তিনি; এমনকি ওয়ানডেও নাকি খেলবেন বেছে বেছে, যেগুলো ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ নয় সেগুলো খেলবেন না।
বায়োবাবল জনিত মানসিক ক্লান্তি, পরিবারকে সময় দেওয়ার অপারগতা, নিজের ফিটনেস, ইনজুরি অনেককিছু মিলিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব। তিন ফরম্যাটে খেলা নাকি এখন ‘অসম্ভবের কাছাকাছি’ মনে হচ্ছে সাকিবের কাছে। বিশেষ করে মহামারীর এই সময়ে। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ১ জানুয়ারী থেকে শুরু হতে যাওয়া নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছেন তিনি। ২০১৭ এর সাউথ আফ্রিকা সফরের পর থেকেই বিভিন্ন সিরিজে সাকিবকে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও ইনজুরি ও নিষেধাজ্ঞাই ছিলো অধিকাংশ সময়ে প্রধান কারণ। তবে অবশেষে সাকিব বললেন, তিন ফরম্যাট নিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ চিন্তা করার সময় আপাতত এসেছে তাঁর।
“সময় এসেছে আমার টেস্ট ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করার। আমি টেস্ট খেলব কি খেলব না। আর যদি খেলি তাহলেও কিভাবে খেলব। আমার এটাও চিন্তা করতে হবে যে অগুরুত্বপূর্ণ ওয়ানডে যেগুলিতে কোন পয়েন্ট নেই (ওয়ানডে সুপার লিগের বাইরে) সেগুলি আমি খেলব কিনা। আমার কাছে আর কোন পথ খোলা নেই।”
সম্প্রতি বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল এনটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব এসব কথা বলেন।
“আমি বলছিনা আমি টেস্ট থেকে অবসরই নিয়ে নেব। এমনও হতে পারে আমি টি-টোয়েন্টি খেলা ছেড়ে দিলাম ২০২২ বিশ্বকাপের পর; শুধু টেস্ট ও ওয়ানডে খেললাম। তবে তিন ফরম্যাটে একসাথে খেলা অসম্ভবের কাছাকাছি। অবশ্যই এটি নিয়ে আমি বিসিবির সাথে বসব এবং তারপরই সিদ্ধান্ত নেব।”
সাকিবকে ছাড়া বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে শক্তিসামর্থ্য অর্ধেক বা তারচেয়েও কমে যায় এটা বলাই বাহুল্য। তারপরও এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে সাকিবের বড় কারণ মহামারীর সময়ে বায়োবাবলজনিত মানসিক ধকল। পরিবার থেকে এতোসময় দূরে থাকাটা তিনি মেনে নিতে পারছেন না।
“মনে হচ্ছিলো জেলখানার মধ্যে আছি (বায়োবাবলে সিরিজ খেলা)। এমন নয় যে ক্রিকেটাররা সিরিজ চলাকালীন খুব ঘুরে বেড়ায়। তবে আপনি যদি মনেমনেই জানেন যে আপনি বের হতে পারবেন না তখন জিনিসটা আরো সমস্যার হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড এই কথা চিন্তা করে নিজেদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলও পাঠায়নি।”
করোনা এতো সহজে যাবে না। আমাদের এটার মোকাবিলা করে খেলা চালিয়ে যাওয়ার নতুন উপায় খুঁজতে হবে। আপনি আপনার বাচ্চাদের সাথে দীর্ঘসময় দেখা করতে পারছেন না এটা যেমন আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক তেমনি তাদেরও বেড়ে ওঠার পেছনে প্রতিবন্ধকতা।”