২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

দিনশেষে ‘স্বস্তি’ নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরলো বাংলাদেশ

- Advertisement -

অনেক ক্রিকেটবোদ্ধারা বলে থাকেন, নিউজিল্যান্ডের উইকেট মানেই ঘাসে ছাওয়া হবে, পেসারদের বল শাটলককের মতো বাউন্স করবে, সাপের মতো অফ দ্য পিচ মুভমেন্ট পাওয়া যাবে এমনটা ভাবা অনেক দেশের অধিনায়কের জন্য ‘ফাঁদ’ হয়ে দাঁড়ায়, এমনকি বোলারদের জন্যও। অধিনায়ক খুশিমনে ৩-৪জন পেসার খেলিয়ে দেন, এবং সেই বোলাররা মনে করেন পিচে বল পড়লেই ম্যাজিকের মতো সুইং-বাউন্স করবে।

আদতে নিউজিল্যান্ডের সব সবুজ পিচই পেস সহায়ক হয়না। সবুজ পিচ থেকে যে এক্সট্রা বাউন্স আর ক্যারিটা মেলে সেটার জন্য অনেক সময় ব্যাটারদের জন্য ব্যাটিং করাই সহজ হয়ে যায়। সকালেই যা একটু সাহায্য, এরপর বেলা বাড়ার সাথে সাথে আদতে উইকেট হয়ে যায় ব্যাটিং স্বর্গ। সুইং করানোর জন্যও বোলারদের থাকতে হয় বিশেষ স্কিল।

সকালের সেশনটা বাদে বেশ খানিকটা সময় মনে হচ্ছিলো, সম্ভবত এই ফাঁদে পা দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হকও। টসে জিতে উইকেটের ঘাস দেখে বোলিং নিয়েছেন। সকালে পিচের যেটুকু সুবিধা তা আদায় করে একটু চাপও দিয়েছেন তাসকিন-শরীফুল। নতুন বল হাতে প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই শরীফুল এনে দিয়েছেন টম ল্যাথামের উইকেট। কিন্তু লাঞ্চের পর পিচের ময়েশ্চার উধাও, বাংলাদেশের পেসারদের দেওয়া চাপও উধাও! কিউই ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিলো ব্যাটিং করা কতোই না সহজ।

তবে ভুলে হোক শুদ্ধে হোক, দিনশেষে মুমিনুলের মুখে হাসিই থাকবে তা নিশ্চিত। এই উইকেটেও প্রথম দিনশেষে নিউজিল্যান্ডের ৫টি উইকেট ফেলা গেছে। ডেভন কনওয়ের সেঞ্চুরি সত্বেও রান মাত্র ২৫৮, নাগালের মধ্যে। দিনের শেষ উইকেট হিসেবে টম ব্লান্ডেল বোল্ড হয়েছেন ইবাদত হোসেনের বলে।

তবে আদতে শরীফুল ইসলাম ছাড়া বাংলাদেশের কোন পেসারই খুব হুমকি হয়ে দেখা দেয়নি কিউইদের জন্য।  পেসবান্ধব কন্ডিশনেও মেহেদি মিরাজের ২৭ ওভার করে ফেলা এর প্রমাণ। তাসকিন আহমেদ সকালের সেশনের পরই খেই হারিয়েছেন। ঐ উইকেটটা না পেলে ইবাদাতের বোলিং ভুলে যাওয়ার মতোই ছিলো।  আবু জায়েদ রাহী প্রস্তুতি ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়ার পরও তাকে না খেলিয়ে ইবাদতকে খেলানো হচ্ছে কেন এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তিনি ফুল ফিট না থাকলে অবশ্য অন্য হিসেব।

শরীফুল ছিলেন পেসারদের মধ্যে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম

তবে শরীফুল ইসলাম ছিলেন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। পুরোটা সময় অসাধারণ পরিকল্পনার সাথে বোলিং করে গেছেন। কিউই ব্যাটারদের নিয়মিত অস্বস্তিতে ফেলেছেন। টম ল্যাথামের উইকেটের পর প্ল্যানমাফিক চতুর্থ স্ট্যাম্পে বল করে আউট করেছেন রস টেইলরকেও (৩২)।

কিউইদের খুঁটি হয়ে ছিলেন ডেভন কনওয়ে। প্রস্তুতি ম্যাচে যিনি মেরেছিলেন ডাক, আজ তিনিই অপ্রতিরোধ্য! শুরু থেকেই উইকেটের চারপাশে ব্যাট চালিয়ে খেলেছেন। তুলে নিয়েছেন বছরের প্রথম শতক। কিন্তু পার্টটাইমার মুমিনুল হকের বলে ইনিংস আরো বড় করতে পারেননি, ফিরেছেন ১২২ রানে।

বছরটা দারুণভাবে শুরু করলেন কনওয়ে

দিনের একমাত্র ‘আফসোসের’ উইকেট বলা যায় উইল ইয়ংকে। দুর্দান্ত ব্যাট করছিলেন। ফিফট করে ফেলেছিলেন। এরপরই রান আউট!

নিউজিল্যান্ডে ব্যাট করার সর্বোত্তম দিন হচ্ছে ৩য়-৪র্থ দিন। কাল দেড়-দুই সেশনের মধ্যে নিউজিল্যান্ডকে বেঁধে ফেলতে পারলে বাংলাদেশ এই দুইদিনই ব্যাট করবে। এবং কিউইদের একটু চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। প্রথমদিন শেষে যে সম্ভাবনাটা উজ্জ্বলই মনে হচ্ছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস- প্রথম দিনশেষে ২৫৮/৫ (কনওয়ে ১২২, ইয়ং ৫২; শরীফুল ২/৫৩)

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img