দশ ওভার, কোনো মেইডেন নেই; দুইটি উইকেট পেলেও খরচ করতে হয়েছে পঞ্চান্ন রান! তারপরও কিভাবে তাসকিন আহমেদকে সেরা বলা যায় সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
সব ভুলে যান। শুধুমাত্র একবার কল্পনা করুন আপনার দেশেরই একজন গতির ঝড় তুলছে, একই লেংথে বল করে যাচ্ছে, ইনসুইং-আউটসুইং আর বাউন্সারে কুপোকাত করে যাচ্ছে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। শুধু এতোটুকু হলেই কি আর কাউকে সেরা বলা সম্ভব? অবশ্যই না। এর সাথে যোগ করুন রিভার্স সুইং আর স্লোয়ার কাটারগুলোকেও। এবার?
একটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক, তাসকিনের বোলিং নিয়ে আলাদা করে লেখার কারণটাও তাহলে স্পষ্ট হবে কিছুটা। সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে তাসকিন খেলতে পেরেছেন মোটে ৪ ম্যাচ; ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন, আফগানিস্তান সিরিজে খেলতে পারা নিয়েও ছিলেন শঙ্কায়। বলার প্রয়োজন নেই কতোটা পরিশ্রম করেছেন টাইগার পেসার, কতোটা পরিশ্রম করছেন গত কয়েক বছর ধরে। পরিশ্রমের ফলটাও পাচ্ছেন হাতেনাতে।
ইনজুরি থেকে সেরেই বাংলাদেশের জার্সিতে তাসকিন। প্রথম বলটাই করলেন বিশাল এক ওয়াইড। কিন্তু সেই বলটাকেও ধরতে পারেন প্রথম ওয়ানডেতে তাসকিনের বোলিংয়ের প্রতিকি হিসেবে। ক্রিজে পড়েও বলটা এতোটাই সুইং করেছে যে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমকে ধরতে হয়েছে প্রথম স্লিপের সামনে ঝাপিয়ে!
শুরুটা প্রত্যাশিত না হলেও, তাসকিন এরপর করেছেন দুর্দান্ত বোলিং। নিজের তৃতীয় ওভারে বল করতে এসেই পেতে পারতেন উইকেট, কিন্তু ইব্রাহিম জাদরানের ক্যাচটা ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পারেননি লুফে নিতে। সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন জাদরানও, তাসকিনের পরের ওভারেই নিয়েছেন এক চার এবং এক ছয়; পুরো ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৫ রান এসেছে ঐ ওভারেই।
টানা চার ওভার বল করে বিরতিতে যাওয়া তাসকিন আবারও বোলিংয়ে ফিরেছেন বারো ওভার পর। এসেই ফিরিয়েছেন ৩৪ রান করা রহমত শাহকে, করেছেন টানা চার ওভার। প্রথম চার ওভারের স্পেলে ২৬ রান দেয়া তাসকিন পরের স্পেলে দিয়েছেন ১৪ রান। শেষে দুই ওভারের স্পেলে কোনো উইকেট না পেলেও তাসকিন জানিয়ে দিয়ে গেছেন, ‘পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি…’