২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

 আফগানিস্তান ক্রিকেটে অধিনায়ক বদলের সার্কাস

- Advertisement -

আসগর আফগানকে সোমবার অধিনায়কত্ব থেকে ছাঁটাই করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। অথচ ছাঁটাই হওয়ার আগে তিন ফরম্যাটেরই ক্যাপ্টেন আর্ম ব্যান্ড ছিল আসগরের কাছে। ভুড়ি ভুড়ি হার নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক টেস্ট হারই কেড়ে নিয়েছে আসগরের অধিনায়কত্ব। আফগানিস্তানের নতুন টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি, তার ডেপুটি হিসেবে আছেন ব্যাটসম্যান রহমত শাহ। টি-টুয়েন্টির নতুন অধিনায়কের নাম এখনও ঘোষনা করেনি আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, সহ-অধিনায়ক হিসেবে বহাল তবিয়তে আছেন রশিদ খান।

গত মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষ হয় কেবল দুই দিনে।  জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই টেস্টে দাঁড়াতেই পারেনি আসগরের দল। প্রথমে ব্যাটিং করা আফগানিস্তান দুই ইনিংসেই ব্যর্থ দেড়শ পেরোত। ফলাফল ১০ উইকেটের হার হারা সে ম্যাচে আফগানের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তই নাকি ছিল দলের হারের কারণ। এমনটাই জানিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

সেই সিরিজ ড্র হয় ১-১ ব্যবধানে। প্রথম টেস্টে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে সদ্য ছাটাই হওয়া অধিনায়ক আর নতুন  দ্বায়িত্ব পাওয়া অধিনায়কের ব্যাটিং কীর্তিতে সিরিজে সমতা ফেরায় আফগানরা। প্রথম আফগান হিসেবে সেই ম্যাচে দ্বি-শতক করেন হাশমতউল্লাহ শহীদি, আসগর আফগানের সঙ্গে তার ৩০৭ রানের জুটিই ম্যাচে জয়ের ভীত গড়ে দেয়। আসগর ১৬৪ রানে আউট না হলে তার সামনেই ছিল প্রথম আফগান হিসেবে দ্বি-শতক হাঁকানোর সুযোগ, পারেননি। পারেননি নেতৃত্ব ধরে রাখতেও। যার সঙ্গে জুটি বেঁধে রেকর্ড গড়েছেন , তার কাছেই হারিয়েছেন অধিনায়কত্ব।

ছবিঃ ইন্টারনেট
ছবিঃ ইন্টারনেট

আফগান ক্রিকেট নিয়ে খোঁজখবর রাখলে অধিনায়কত্ব নিয়ে এমন সার্কাসে আপনি অবাক হবেন না । বরং এটাকেই ভাববেন স্বাভাবিক। বছর দুয়েক আগে যখন দরজায় কড়া নাড়ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ, আচমকা নিয়মিত অধিনায়ক এই আসগরকেই সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় গুলবাদিন নাঈবকে। দলের পরিবেশ নষ্ট করা সেই সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিলেন না মোহাম্মদ নবি, রশিদ খানের মতো সিনিয়ররা।  গুলবদিন নাঈবের অধিনায়কত্বে তাই স্বাভাবিকভাবেই ভরাডুবি ঘটে বিশ্বকাপে। এরপর তিন সংস্করণে তিন অধিনায়কের পথেও হেঁটেছিল আফগানিস্তান, কাজের কাজ হয়নি। নাকি কাজের কাজটাই করতে চায়নি আফগান বোর্ড, সেটাও ভাবনার বিষয়।

গুলবদিন নাঈবের কাছেই ছিল ওয়ানডে ক্যাপ্টেনের আর্ম ব্যান্ড,  রশিদ খানের কাছে ছিল টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব। তরুণ রহমত শাহ হয়েছিলেন  টেস্ট অধিনায়ক। বিশ্বকাপে ব্যার্থতার দায়ে  গুলবদিন নাঈবের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া তো হয়েছেই, কোনো ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার আগেই ছাটাই হয়েছিলেন টেস্ট অধিনায়ক রহমত শাহ। টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক রশিদ খানের হাতেই দেওয়া হয়েছিল তিন ফরম্যাটের নেতৃত্বের ভার। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জয়ও এসেছিল রশিদের হাত ধরে।  তবুও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আচমকা রশিদের হাত থেকেও কেড়ে নেওয়া হয় নেতৃত্ব।  আরেকবার ভরসা রাখা হয় আসগর আফগানের উপর।

প্রতিবার বিশ্বকাপের শব্দ শোনা যাবে আর আসগর নেতৃত্ব হারাবেন, এটাই তো নিয়তি। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে  দেড় বছরও টিকতে পারেননি , চলতি বছরের শেষে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে টি-টূয়েন্টি বিশ্বকাপ, তার মানে আরেকবার বিশকাপের আগা আগে নেতৃত্ব হারালেন আফগান । আফগানিস্তানকে ১১৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া আসগর আফগানের  নেতৃত্বে ৭৮ ম্যাচে জিতেছে আফগানিস্তান। অধিনায়ক হিসেবে টি-টুয়েন্টিতে একটানা সবচেয়ে বেশি ৪৬ ম্যাচে  নেতৃত্ব দেওয়ার বিশ্ব রেকর্ডও আফগানের। বিশ্বের বাঘা বাঘা অধিনায়কের সঙ্গে টেক্কা দেওয়া আফগানের অধিনায়কত্বের নিয়তি কি হবে সেটা সময়ই বলে দেবে।

 

 

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img