রহমানুল্লাহ গুরবাজ আউট হওয়ার পর উইকেটে এলেন, মাঠে থাকা প্রতিপক্ষ নামিবিয়ার প্রতিটি খেলোয়াড় তাঁকে দিলেন ‘গার্ড অব অনার’। আউট হয়ে ফেরার সময় আরেকদফা, এবারে ব্যাট উঁচিয়ে গার্ড অফ অনার দিলেন সতীর্থরা। ইনিংস বিরতিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন আসগর আফগান। আফগানিস্তানের জার্সি গায়ে জড়িয়ে আর কোনদিন যে ক্রিকেট খেলা হবেনা এই দলটির সবচাইতে পুরনো সদস্যদের একজনের।
সাবেক অধিনায়ক ও দল অন্তঃপ্রাণ এই মানুষটির বিদায়ী ম্যাচটি স্মরণীয় করতে যা যা করা দরকার তাই করলো তাঁর সতীর্থরা, অবদান রাখলেন আসগর নিজেও। নামিবিয়াকে ৬২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো আফগানিস্তান।
আবুধাবিতে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে উড়ন্ত সূচনা করে আফগানিস্তান। হজরতউল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শেহজাদ- দুই মারকুটে ওপেনিং ব্যাটসম্যান পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে তুলে ফেলেন ৫০। জেজে স্মিটকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ২৭ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন জাজাই, শেহজাদ ঝড় চালাতে থাকেন। রুবেন ট্রাম্পেলম্যানের বলে আউট হওয়ার আগে করেন করেন ৩৩ বলে ৪৫ রান। এরপর নাজিবুল্লাহ জাদরানকে মাত্র ৭ রানে ফেরান ইয়ান নিকোল লফটি-ইটন।
এরপর অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে আসগর আফগান শুরু করেন ঝড়। জীবনের শেষ ম্যাচে ২৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করে ট্রাম্পেলম্যানের বলে আউট হন আসগর। মোহাম্মদ নবী খেলেন ১৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রানের ক্যামিও। ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৬০ রান করে আফগানিস্তান।
জবাবে নামিবিয়ার শুরুটা হয় একেবারেই আফগানিস্তানের বিপরীত। এলোমেলো শট খেলার প্রতিযোগিতায় পাওয়ারপ্লেতে ২৯ রানেই নামিবিয়া হারিয়ে বসে তিনটি উইকেট; দুটিই পান পেসার নাভিন উল হক, একটি পান গুলবদিন নাইব। পাওয়ারপ্লের পর রাশিদ খানকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন জেন গ্রিন।
আফগান পেসারদের দাপটে দিশেহারা হওয়া আরো বাকিই ছিল নামিবিয়ার। একাদশ ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে নামিবিয়ার জয়ের আশা আরো ফিকে করে দেন এই আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা পেসার হামিদ হাসান। আউট করেন অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাস ও জেজে স্মিটকে। একপ্রান্ত আগলে ধরে রাখা ডেভিড উইজাকেও দারুণ এক ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড করে দেন হামিদ হাসান। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন হামিদ। নাভিন উল হক ও গুলবদিন নাইবও নিয়েছেন আরো একটি করে উইকেট।
যদিও আফগানিস্তান অলআউট করতে পারেনি নামিবিয়াকে। পূর্ণ ২০ ওভার খেলে ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯৮ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় নামিবিয়া। সর্বোচ্চ ২৬ রান এসেছে উইজার হাত ধরেই।