৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেই অবসর নেননি মেসি!

- Advertisement -

লিওনেল মেসির সবচেয়ে বড় অর্জন কি? গোটা সাতেক ব্যাল দ অঁর? নাকি বছরের পর বছর গোল করে যাওয়া? ড্রিবলিং দিয়ে চোখ ছানাবড়া করে দেয়াই কি মেসির কীর্তির স্বাক্ষর? কোাপা আমেরিকা ট্রফি কি মেসির শ্রেষ্ঠত্বের বার্তা? তাহলে বিশ্বকাপে ফাইনালে তোলাকে কি বলা যায়? নাকি সব ছাপিয়ে, যে মানুষটা ফুটবল পছন্দই করে না,জানতেও চায় না, সেও খবর নেয়; মেসি কেমন খেলেছে? হয়তো মনের অজান্তেই মেসির খেলা দেখার অবচেতন ভাবনা খেলা করে মনের গভীরে, মস্তিষ্কের নিউরনে। সম্ভবত শেষেরটাই মেসির সবচেয়ে বড় কীর্তি। যিনি ফুটবল ভক্ত না, তাকেও এলএম টেন তার খোঁজ নিতে বাধ্য করেন, ফুটবল ভক্ততো বটেই!

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, মেসি চলে গেলে ফুটবল ভক্তদের ফুটবল ভালবাসা কি আগের মতোই থাকবে?যে প্রেমিকের কারণে ফুটবল প্রেমে মাতোয়ারা হওয়া যেতো, সে যখন থাকবে না, তখন এক বুক হাহাকারের কষ্ট কোথায় চাপা দেবেন ভক্তরা? পৃথিবী নামক গ্রহে যদি কাশাচা হয় গ্যারিঞ্চার সব থেকে প্রিয় নেশার নাম, ঠিক তেমনি একজন ফুটবল পাগলের কাছে লিওনেল মেসির ফুটবল শৈলী, যা কাশাচার নেশাকেও হার মানায় যোজন ব্যবধানে। এই মেসি নেশা ধরায়, পাগল করে। কাছে টানে, কখনোবা ভাসিয়ে দেয় এক সমুদ্র চোখের জলে।

কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে আরেকবার “দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের” ফাইনালে দেখা যাবে “দ্য গ্রেটেস্ট ফুটবলার অফ অল টাইমকে”; আসলেই কি? মেসিই সর্বকালের সেরা, এটা কি এখনই বলা যায়? নাকি বিশ্বকাপ জিতে গেলে বলা ঠিক হবে? এই তর্কটা পাঠকের জন্য তোলা থাকুক, ২০১৮ বিশ্বকাপের পরের সময়ে ফেরা যাক।

ফ্রান্সের সাথে হেরে বাদ পরার পর, আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানোর খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। কানাঘুষা চলছিলো, নানা রকম রিপোর্ট হচ্ছিলো প্রতিদিন; আর্জেন্টিনা জার্সিতে লিও আর খেলবেন না! সেই আলোচনার বারুদে দেশলাই জ্বালাচ্ছিলেন মেসি নিজে, আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো একের পর এক না খেলে, নিজেকে গুটিয়ে রেখে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের পরপরই আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব দেয়া হয় লিওনেল স্কালোনিকে। দলের দায়িত্ব পেয়েই আর্জেন্টাইন “কোহিনুরকে” নতুন করে, চকচকে আবহে ফিরিয়ে আনাকে নিজের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব মনে করেছিলেন লিওনেল আর ওই কোহিনুর; তর্কাতীতভাবেই আরেক লিওনেল, মেসি। স্কালোনিই নাকি হোয়াটসঅ্যাপে মেসিকে দলে ফেরার জন্য বার্তা দিয়েছিলেন। মেসিকে স্কালোনির বার্তা দেয়ার অধিকার শুধু কোচ হিসেবেই না, সাবেক সতীর্থ হিসেবেও। ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের অভিষেক ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন মেসি, সেই দলে তার সতীর্থ ছিলেন এখনকার কোচ স্কালোনি। ওই ম্যাচ চলাকালীন ড্রেসিংরুমেও নাকি মেসিকে স্বান্তনা দিয়ে সামলেছিলেন বর্তমান আর্জেন্টাইন কোচ, অবশ্যই টিমমেট হিসেবে আর সেই অধিকার বা ভালবাসার কারণেই হয়তো, আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নেবার পর, প্রায় অবসরের কাছে চলে যাওয়া মেসিকে হোয়াটস অ্যাপে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন স্কালোনি, মেসিও সেই বার্তাকে উপেক্ষা করতে পারেননি, করেননি।

ওই একটা বার্তাই কি মেসির ভাবনার জগৎ বদলে দিয়েছিল? ফিরে এস হাল ধরার প্রেরণা জুগিয়েছিলো? উত্তর হয়তো আরো অনেক পরে জানা যাবে, যখন দুই লিওনেলের যে কোন একজন এই ইস্যুতে মুখ খুলবেন। তার আগ পর্যন্ত আমরা জানবো, লিওনেল মেসিকে; মেসির জায়গায় ফিরিয়ে আনতে একটা ছোট্ট বার্তা অনেক বড় ভূমিকা রেখেছিল আর সেই বার্তা. ছোট মেসিকে দিয়েছিলেন বড় লিওনেল, স্কালোনি।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img