সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার কে? প্রশ্নটা শুনতেই ক্রিকেট অনুরাগীদের মাথায় চলে আসবে অনেকগুলো নাম। ওয়ানডেতে জ্যাক ক্যালিস, কপিল দেব, সনাথ জয়াসুরিয়া; টেস্টে এই তালিকায় যুক্ত হবেন স্যার গ্যারি সোবার্স, স্যার ইয়ান বোথাম, স্যার রিচার্ড হ্যাডলিরা। কিন্তু সাকিব আল হাসানকে আপনি এদের মাঝে কতো নম্বরে রাখবেন? যতই বর্তমানে বিভিন্ন ফরম্যাটের র্যাংকিংয়ে এক নম্বরে থাকুন সাকিব, বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারকে উপরোক্ত নামদেরও উপরে উঠিয়ে সেরা মানবেন কি?
আপনি হয়তো না মানতে পারেন, তবে অনন্ত নারায়ণনের কিন্তু সাকিবকে ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ও টেস্টে স্যার গ্যারি সোবার্সের পর দ্বিতীয় সেরা অলরাউন্ডার মেনে নিতে কোনই দ্বিধা নেই।
অনন্ত নারায়ণন কে? অনন্ত নারায়ণন হচ্ছেন ভারতের প্রসিদ্ধ একজন ক্রিকেট বিশ্লেষক। যিনি ক্রিকেটের প্রখ্যাত ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাধর্মী কলাম লিখে থাকেন। তেমনি একটি কলামে শনিবার তিনি এই দাবি করেছেন। শুধু মুখে দাবি নয়, রীতিমতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিসংখ্যানগত হিসেব নিকেশ কষে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে সাকিব কেন ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ক্যালিস, ফ্লিনটফ, কপিলদের ছাড়িয়ে এক নম্বরে ও টেস্ট ইতিহাসের পাতায় স্যার গ্যারির পর দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেন।
A new stats analysis from Anantha Narayanan rating the leading allrounders of the two formats ⤵️
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) October 9, 2021
ওয়ানডে ইতিহাসে কমপক্ষে ২০০০ রান ও ৭৫ উইকেট নিয়েছেন, এমন ৫৭জন ক্রিকেটারদের ‘স্যাম্পল’ হিসেবে নিয়ে এই গবেষণা করেছেন অনন্ত। ব্যাটিং গড়, ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট, বোলিং স্ট্রাইক রেট, বোলিংয়ের যথাযথতা, ধারাবাহিকতা, বড় টুর্নামেন্টে ব্যাটিং-বোলিং, সেরা অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, গড়ে প্রতি ম্যাচে পারফরম্যান্স, ক্যারিয়ারের দৈর্ঘ্য- প্রভৃতি ‘প্যারামিটার’ এ তিনি এই ৫৭ জনের মূল্যায়ন করেছেন। প্রতিটি প্যারামিটারে প্রাপ্ত স্কোর যোগ করে ‘অলরাউন্ডার রেটিং’ যার বেশি, সে বড় অলরাউন্ডার- সোজা কথায় এই হচ্ছে অনন্তের হিসেবের পদ্ধতি।
তো এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অনন্ত দেখিয়েছেন যে, ৭৩৮ স্কোর নিয়ে সবার ওপরে সাকিবের অবস্থান, দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের স্কোর ৬৯১। ৬৭৫ স্কোর নিয়ে জ্যাক ক্যালিস রয়েছেন তৃতীয় স্থানে।
অন্যান্য অলরাউন্ডারদের কারো ব্যাটিং তো কেউ বোলিং ছিল মূল শক্তির জায়গা, কিন্তু সাকিব যেভাবে ব্যাটিং বোলিং দুইদিক দিয়েই সমানভাবে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন, এই ব্যাপারটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অনন্ত নিজের কলামে। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে ‘নিষিদ্ধ’ না হলে আরো অনেক বেশি স্কোরের ব্যবধানে এগিয়ে এক নম্বরে থাকতেন সাকিব, এমনও দাবি করেছেন অনন্ত।
এপ্রিল মাসে আরেকটি কলামে টেস্টে সাকিবকে স্যার গ্যারির চেয়েও সেরা অলরাউন্ডার বলেছিলেন অনন্ত নারায়ণন। শনিবারের এই কলামে সেই হিসাবে সামান্য গুণগত পরিবর্তন এনে সাকিবকে তিনি দিয়েছেন স্যার গ্যারির পরের স্থানটি। টেস্টের জন্য অনন্তের গণনাপদ্ধতি সামান্য আলাদা, সেই হিসেবে স্যার গ্যারির স্কোর ৭৭.৬, দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাকিবের স্কোর ৭৬। ৭৪.৬ স্কোর নিয়ে তার পরেই আছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ইমরান খান।