২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

খালি পকেট আর ক্ষুদা নিয়েই শুরু হয়েছিল মিসেঙ্গার অলিম্পিক স্বপ্ন

- Advertisement -

২০০১ সাল, কঙ্গোর গৃহযুদ্ধে খুন হন পোপলে মিসেঙ্গার মা। তখন মিসেঙ্গার বয়স ৯ বছর। সপ্তাখানেক হেঁটে তিনি পৌঁছান দেশটির রাজধানী কিনশাসাতে। যেখানে তিনি প্রথমবারের মতো পরিচিত হন জুডোর সাথে। সেই মিসেঙ্গাই পরবর্তীতে শরনার্থী দলের হয়ে অংশ নেন ২০১৬ রিও অলিম্পিকে, তারপর টোকিও। মিসেঙ্গার স্বপ্ন, হাজার মানুষের অনুপ্রেরণার কারণ হবেন তিনি।

২০১৩ সাল থেকেই  মিসেঙ্গা থাকছেন ব্রাজিলে। কঙ্গো থেকে পালিয়েছিলেন শূন্য হাতেই। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি তার ভাইকে এখনও মিস করেন। মোবাইলে কথা হলেও ২০১৩ সালের পর তাদের আর দেখা হয়নি। ব্রাজিলে স্থায়ী হতে না চাইলেও পরিস্থিতির কারণেই বাধ্য হয়েছেন।

ছবি: ইন্টারনেট
জীবন যেখানে যেমন। ছবি: ইন্টারনেট

‘আমার ব্রাজিলে থেকে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। কিন্তু কঙ্গোর ন্যাশনাল ক্যাম্পে আমাদের খুব বাজেভাবে ট্রিট করা হচ্ছিলো। আমরা ক্ষুদার্থ ছিলাম, আমাদের টাকা ছিল না। তারা আমাদের কোনো টাকা দিত না। টানা তিনদিন আমি না খেয়ে ছিলাম। দাঁড়াতেও পারছিলামা না। আমাদের ঘুমানোর জায়গা পর্যন্ত ছিল না।’

শরনার্থী যারা অন্য দেশে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করেন তাদের মানিয়ে নেওয়াও সহজ হয় না। মিসেঙ্গারও হয়নি। ব্রাজিলে এসে তার নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছিলেন মিসেঙ্গা। তবে নিজের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করছেন তিনি।

‘সহজ ছিল না। আমি যুদ্ধের মাঝপথে দেশ ছেড়ে নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে পড়েছিলাম। এই যুদ্ধটা সবসময়ই চলতো।  চারিপাশে অনেক অনিশ্চিয়তা, গুলির শব্দ। নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছিল। তারপরও আমি থাকার সিদ্ধান্ত নেই। আমার মনে হয় আমার সিদ্ধান্তটা সঠিক আছে। এখন আমার বউ আছে, বাচ্চা আছে। আমি কখনো ভাবিনি আমি বাবা হতে পারবো।’

২০১৬ অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার পরপরই বদল আসতে শুরু করে তার জীবনে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে সাহায্য আসতে শুরু করে। এখন আর মিসেঙ্গা গুলির শব্দ শুনতে পান না, সেটাই তার স্বস্তি। খুব অকোপটে মিসেঙ্গা বলেছেন অন্য মানুষদের মতো শরনার্থীরাও স্বপ্ন দেখে, তারা কখনোই হাল ছাড়ে না।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img