২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

“চেকমেট”, ডাচ দূর্গের পতন; ইউরো কোয়ার্টারে চেক রিপাবলিক

- Advertisement -

ইউরোর রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে জয় পেয়েছে চেক রিপাবলিক। বুদাপেস্টে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৬৮ ও ৮০ মিনিটের গোলে ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে চেকরা।

২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারার পর যেনো একধরণের শীতনিদ্রায় ছিল নেদারল্যান্ডস, বিশ্ব আসরের পরের দুই বড় টুর্নামেন্ট ২০১৬’র ইউরো আর ২০১৮’র বিশ্বকাপে সুযোগই পায়নি খেলার। কিন্তু, ১৮ বিশ্বকাপের পরেই এক নতুন নেদারল্যান্ডসের উত্থান শুরু। ম্যাথিয়াস ডি-লিট,ফ্রেংকি ডি-ইয়ং, মেম্ফিস ডিপাই, ডেঞ্জিল ডামফ্রাইসরা মিলে ধিরে ধিরে আবারও নেদারল্যান্ডস কে নিয়ে আসে সামনের সারির দলগুলোর কাতারে। সর্বশেষ বড় আসর ইউরো নেশানস কাপের ফাইনালে খেলার পর ইউয়েফা ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতে রবিবার ডাচদের প্রতিপক্ষ ছিল চেক রিপাবলিক। অপরদিকে চেক রিপাবলিক নিয়মিত ইউরোতে খেলার সুযোগ পেলেও বলার মতো কিছু করতে পেরেছে সর্বশেষ ২০০৪ সালে; সেবার ইউরোর সেমিফাইনাল খেলেছিলো চেকরা।

বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনায় রবিবার ৬০০০০দর্শকের বেশিরভাগই ছিল হল্যান্ড সমর্থক। কমলা রংয়ের সমুদ্রে চেকদের ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার কম চেষ্টা করেনি নেদারল্যান্ডস। কিন্তু কিছুতেই যেনো কিছু হচ্ছিলোনা; ৩-৫-২ ফরমেশনে পুরো মাঝমাঠের দখল নিজেদের কাছে নিয়ে নেদারল্যান্ডস চড়াও হয় চেক রিপাবলিকের ওপর। প্রথমার্ধেই ৩টা শট আর ৬টা কর্ণার আদায় করে ডাচরা, কিন্তু রক্ষণটা ভালোই সামলেছে চেক রিপাবলিক। অবশ্য, দুইদল মিলিয়ে প্রথমার্ধের সবচেয়ে বড় সুযোগটা পেয়েছিলেন চেক রিপাবলিকের আঁতোইন বারাক; ডিলিটের চমৎকার ব্লকে গোলের ঠিকানা পায়নি তার শট। দুদলই একে অপরের জমাট রক্ষণে কোন ছিদ্র খুঁজে না পেয়ে ০-০ স্কোরলাইনেই প্রথমার্ধ শেষে টানেলে ফেরে।

নেদারল্যান্ডস-চেক রিপাবলিকের প্রথমার্ধের খেলা যদি তুলনা করা যায় আন্তঃনগর ট্রেনের সাথে তাহলে দ্বিতীয়ার্ধ নিশ্চিতভাবেই ছিল বুলেট ট্রেন। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, গোলের সুযোগ মিস, লাল কার্ড, হলুদ কার্ড এসবই হয়েছে বিরতির পরের ১০মিনিটেই। ডাচ স্ট্রাইকার দনিয়েল মালেন চেক রিপাবলিক বক্সের সামনে সবটাই করেন, ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে এসে সামনে শুধু ছিল চেক গোলি টমাস ভাচলিক, ভাচলিককে কাটিয়ে আর গোল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি মালেন। ৫২ মিনিটের এই ঘটনার পরের মিনিটেই কাউন্টার অ্যাটাকে যায় চেকরা, দ্রুত কাউন্টারে ওঠা চেকদের স্ট্রাইকার প্যাট্রিক শিককে আটকাতে হ্যান্ডবল করে বসেন ম্যাথিয়াস ডি-লিট। ভিএআর চেকে ডি-লিট কে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করেন রেফারি।

নেদারল্যান্ডস ১০জনের দলে পরিণত হলে তার সম্পুর্ণ সুযোগ নেয় চেক রিপাবলিক, পরের ১০মিনিটে আদায় করে নেয় দুইটি কর্ণার। অবশেষে লাল কার্ড ঘটনার মিনিট পনেরো পর ম্যাচের ডেডলক ভাঙ্গে ৬৮ মিনিটে। টমাস হলেসের হেডার জালে জড়ালে ০-১ গোলের লিড পায় চেক রিপাবলিক।

১০জনের দল নিয়ে ম্যাচে প্রতিযোগিতা করা কঠিন, নক আউট ম্যাচে ১গোলে পিছিয়ে থাকা সেই কঠিন কাজে আরও বাড়তি চাপ যোগ করে। নেদারল্যান্ডস এদিন সেই চাপেই চাপা পড়েছে। ৬৮ মিনিটে প্রথম গোলের পর ৮০মিনিটে ২নম্বর গোল খায় নেদারল্যান্ডস। ইউরোর চলমান আসরে নিজের চতুর্থ গোল করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলস্কোরার এখন চেক ফরোয়ার্ড প্যাট্রিক শিক।

শেষ ১০ মিনিট সহ যোগ করা ৬মিনিট পায় ডাচরা ২গোল শোধ দেয়ার, প্রথম ৮০মিনিট ডাচদের বেঁধে রাখা চেকরা শেষ ষোলো মিনিটও পেতে দেয়নি কোনো গোল। ০-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে চেক রিপাবলিক।

পূর্ন ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল যে ৩টি দল তাদের একটা নেদারল্যান্ডস। সেই নেদারল্যান্ডস কে হারিয়ে চেক রিপাবলিক যেনো বার্তা দিয়ে রাখলো ইউরোতে কোনো ফেভারিট দল নেই, নিজেদের দিনে ছোটরাও হারিয়ে দিতে পারে বড়দের।

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img