বছরের পর বছর, লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো; কে শ্রেষ্ঠ সেটা প্রমাণের জন্য লড়াই করেছেন। সেই লড়াই রীতিমতো তুঙ্গে উঠেছে যখন মুখোমুখি হয়েছেন এলএম টেন আর সিআর সেভেন। তিন বছর পর, আরো নির্দিষ্ট করে বললে ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে জুভেন্টাস বার্সা যখন খেলেছিলো, তখনই শেষবার মুখোমুখি হয়েছিলেন মেসি রোনালদো। ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ আবার একসাথে দেখা যাবে দুই মহারথীকে।
মেসির পিএসজি খেলবে সৌদি অল স্টার একাদশের (আল নাসের ও আল হিলাল, দুই ক্লাবের খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত) বিপক্ষে, প্রীতি ম্যাচে। খেলা হবে রিয়াদের ‘কিং ফাহাদ’ স্টেডিয়ামে। সৌদি ভাষায় এই মাঠের আরেক নাম আধধুরা; যার বাংলা অর্থ মুক্তা। ৮০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার কিং ফাহাদের সব টিকিট এরইমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ভিআইপি টিকিটের মূল্য বাংলাদেশী টাকায় ২৭ কোটি! এই বিপুল পরিমান অর্থ দিয়ে টিকেট কিনেছেন সৌদি ব্যাবসায়ী মুশরাফ আল ঘামদী। সাতাশ কোটি টাকায় টিকিট কিনে ভিআইপি বক্সে খেলা দেখার পাশাপাশি মেসি- রোনালদোদের ড্রেসিংরুমে যাওয়ার সুযোগ থাকবে, ফুটবলারদের সাথে ছবিও তোলা যাবে, একসাথে বসে খাওয়া যাবে রাতের খাবার।
![](https://www.allrounderbd.com/wp-content/uploads/2023/01/Capture-messi-1.jpg)
পিএসজি – সৌদি অল স্টার একাদশ ম্যাচের রেকর্ড অবশ্য পেশাদার ফুটবলের পরিসংখ্যানে যোগ হবেনা। তাতে কি ভক্তদের কিছু যায় আসে? একদমই না বরং মেসি-রোনালদো আবার মুখোমুখি হবেন, এটাই সবার কাছে আসল, প্রার্থিত। জাতীয় দল এবং ক্লাবের জার্সিতে লিওনেল মেসি – ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো মুখোমুখি হয়েছেন ৩৬ বার। মেসি জিতেছেন ১৬ ম্যাচে, রোনালদো শেষ হাসি হেসেছেন ১১ বার। জয়ের সংখ্যার মতো দুই জনের মুখোমুখি লড়াইয়ে গোলের হিসেবেও মেসিই এগিয়ে, ২২ গোল। রোনালদোর গোল একটা কম। আর্জেন্টাইন আর পর্তুগিজের প্রথমবার যখন দেখা হয়, তখন রোনালদো ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে, মেসি বার্সেলোনায়। এরপর রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়ায়, টানা ৯ মৌসুম বিশ্ব ফুটবল দেখেছে দুই কিংবদন্তীর ফুটবল “সুপ্রিমেসি”।
![](https://www.allrounderbd.com/wp-content/uploads/2023/01/Capture-ronaldo-2.jpg)
সৌদির কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত এগারোটায়। তখন হয়তো আবার আলোচনা হবে, কে সর্বকালের সেরা, মেসি নাকি রোনালদো। যদিও অনেকের বিবেচনায় এই বিতর্ক মিমাংসা হয়েছিলো ১৮ ডিসেম্বর; যখন মেসির হাতে বিশ্বকাপ উঠেছিলো। তবে অনেকের কাছেই, এটা এখনও বিতর্কের বিষয় হয়েই রয়ে গেছে।
সব আলোচনা – তর্ক ছাপিয়ে পুরো বিশ্বের নজর থাকবে পিএসজি – সৌদি অল স্টার একাদশ ম্যাচে। ফেলে আসা দিনগুলি হয়তো আরো একবার উঁকি দেবে ফুটবল প্রেমীদের হৃদয়ে। মেসির বাম পায়ের ড্রিবলিং কিংবা রোনালদোর শুন্যে লাফিয়ে হেড, আবারো হয়তো হাসতে হাসতেই কাঁদবেন টেকনাফ কিংবা তেঁতুলিয়ার কোন ভক্ত। মানুষের অস্তিত্বে ধ্রুবক বলতে কিছু নেই, তাই হয়তো আর ধরে রাখা যাবে না ফুটবলের এই দুই মহা প্রতিভাকে। ম্যাচ শেষে হয়ত দর্শকরা অরিজিৎ সিংয়ের সুরে বলবেন, “এটা গল্প হলেও পারতো, পাতা একটা আধটা পড়তাম, খুব লুকিয়ে বাঁচিয়ে রাখতাম তারে”