নিরো যখন বাঁশি বাজাচ্ছিল, রোম তখন পুড়ছিলো…
প্রচলিত প্রবাদ একটু উল্টো করে বলা চলমান ম্যাচের ঘটনাপ্রবাহের সাথে মেলাতে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান যখন মিচেল স্টার্কের বলে আউট হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন, গোটা অস্ট্রেলিয়া দল উল্লাস করলেও ডেভিড ওয়ার্নার হয়তো তখন রোমের মতোই আফসোসে পুড়ছেন!
হ্যাঁ পেছনে দৌড়ে ক্যাচটি তালুবন্দি করা কঠিনই ছিলো, তবে করে ফেলতে পারলে যে রিজওয়ান এখন ৫২ বলে ৬৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে ফিরছেন, তিনি আউট হতেন ৬ বল খেলে শূন্য রান করে!
তবে এটিই ক্রিকেট, যেখানে ভাগ্য সাহসীদের পক্ষে সবসময় থাকে। রিজওয়ানের ঐ ইনিংস ও ফাখার জামানের শেষের ঝড়ের কল্যাণে ২০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড়া করিয়েছে পাকিস্তান।
টসে হেরে ব্যাটিং পেয়েও দুবাইয়ের ব্যাটিং সহায়ক পিচে নিজেদের ‘ক্লাস’ দেখাতে দেরি করেননি দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দ্বিতীয় ওভারে হ্যাজলউডকে মারা বাবর আজমের কভার ড্রাইভটি তো চোখে শান্তির পরশ বুলিয়ে রাখলো অনেক্ষণ। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪৭ রান।
তবে বাবর-রিজওয়ানের ব্যাটিং ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনাহীন বোলিং ও মাখন মাখা হাতের ফিল্ডিংয়েরও দায় ছিলো এতে। রিজওয়ানকে শূন্য রানেই ফেরাতে পারতো অস্ট্রেলিয়া, যদি ম্যাক্সওয়েলের বলে তার ক্যাচটি তালুবন্দি করতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নার। ওই ক্যাচটি নাহয় কঠিন ছিলো, তবে এরপরও বাউন্ডারি লাইন ও ক্লোজ ইন ফিল্ডিংয়ে বড়বড় মিসফিল্ডিংয়ের মাশুল গুণেছে অস্ট্রেলিয়া। বাবর আজম ৩৯ রানে আউট হলেও রিজওয়ান পার করেন ফিফটি। এই ইনিংস খেলার পথে এক পঞ্জিকাবর্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার রান স্পর্শ করা প্রথম ব্যাটসম্যান হওয়ার গৌরবও অর্জন করেন রিজওয়ান। ইনিংসের এক পর্যায়ে মিচেল স্টার্কের একটি বাউন্সার মাথায় আঘাত করে রিজওয়ানের। তবুও অবিচল ছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
রিজওয়ান আউট হওয়ার পর পরপর দুই ওভারে আসিফ আলী ও শোয়েব মালিকও ফিরে যান ০ ও ১ রানে। তবে তাতে খেলায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি আরেক প্রান্তে ফাখার জামানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। অনেকদিন পর রানে ফেরা ফাখার ৩২ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ইনিংস শেষ করে ফিরেছেন। ফাখারেরও সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন স্টিভ স্মিথ।