নব্বইয়ের দশকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। ফিরিয়ে আনলেন আবাহনী-মোহামেডানের হারানো উত্তেজনা। মুশফিকের বিপক্ষে সাকিবের এলবিডব্লিউ আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার ইমরান পারভেজ রিপন, রাগে ক্ষোভে প্রথমে লাথি দিয়ে উইকেট ভাঙ্গলেন, পরে শাসালেন রিপনকে। রাগ জমেছিলো আরও মিনিট দশেক, বৃষ্টির বিরতিতে যাওয়ার সময় আরেক দফা উইকেট তুলে আছাড় মেরেছেন আরেক আম্পায়ারের সামনেই.

মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচ কাভার করতে মিরপুরের প্রেসবক্সে যে সাংবাদিকরা মাঠে ছিলেন, তাদের সকলেই প্রায় একমত, সাকিবের আবেদন যৌক্তিক, মুশফিক আউট ছিলেন। অবশ্য মাঠ থেকে দেখা আর প্রেসবক্স থেকে দেখা এক নয়। সাদাকালো কিংবা সাকিব আল হাসানের পাড় ভক্তরা এমন ঘটনায় দেশসেরা ক্রিকেটারকে নায়ক বানাবেন সেটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু ক্রিকেটের আদব কেতায় সাকিবের এমন আচরণ খুবই বেমানান, আইন বিরুদ্ধ। এমন অন্যায়ের শাস্তি বড় হওয়া খুব স্বাভাবিক।
শুক্রবারের ছুটির বিকালে আপনি কি কেবল আইন কানুন আর সাকিবের নায়ক হয়ে উঠা নিয়ে চায়ের আড্ডা জমিয়ে তুলবেন? নাকি হঠাৎ ‘আগুন রাগের’ অন্য কারন খুঁজবেন। মিরপুরে দিন তিনেক ধরেই কানাঘুষা। ডিপিএলের মাঝপথে যেতে পারেন আমেরিকা। সেটার জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরী করা জরুরি কিনা কে জানে! একইসাথে ঘরোয়া ক্রিকেটে চলতে থাকা দীর্ঘ সময়ের প্রশ্নবিদ্দ আম্পায়ারিংয়ে বিপক্ষে প্রতিবাদ জানিয়ে স্ট্যাম্পে লাথি, এই কথাও আলোচনায়।

মিরপুরের প্রেসবক্সের ছাদে একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হেসে হেসে বলছিলেন, ইচ্ছা করে আম্পায়ারের সাথে বেয়াদবি করে নিষিদ্ধ হবার ধান্ধা। নিষিদ্ধ হলেই আমেরিকা যেতে কিংবা আইপিএলের বাকী ম্যাচ খেলতে সুবিধা হবে। একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর হাস্যরসে কতটুকু যুক্তি সেই হিসাবে না যাই। আরও একটা হিসাব মেলালেও সাকিবের রেগে যাওয়া মিলেনা। আজকাল মোহামেডান-আবাহনীর মধ্যে পুরনো রেশারেষি বিদায় নিয়ে ‘গলায় গলায় পিরিত’ বিদ্যমান। দুই পক্ষের কর্মকর্তারা মিলেমিশে ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনা করেন। একে অন্যের সুবিধা-অসুবিধায় এগিয়ে আসেন, সেখানে মোহামেডানের একজন ক্রিকেটার কেন শুধু শুধু ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে যাবেন!
সাকিবের রাগ নিয়ে প্রশ্ন উঠে উঠুক…সাকিবতো সবার চেয়ে আলাদা। বিতর্ককে শিশিরের মতই বুকে জড়িয়েছেন, এ যেন জনম জনমের সঙ্গী।